comments.plz@gmail.com
"প্রাককথন"
"একক ঈশ্বর প্রসঙ্গ"
মোজেস/মোসেস/মোশি/মুসা প্রবর্তিত ইহুদী ধর্ম বা ইহুদীবাদ, মিশরে জন্ম নেয় সম্রাট আখেনটেন/আকেনাটেন-এর পরপরই। অনেকেই ধারণা করেন মোজেস মিশরীয় ছিলেন। মিশরে প্রচলিত মোজেস/মোসেস শব্দের অর্থ পুত্র। যেমন : থথ মোসেস (thoth এর পুত্র); রা-মোসেস (সুর্যদেব ra এর পুত্র)। মোজেস/মুসা মিশরীয় ছিলেন কিনা তার থেকে গুরুত্বপূর্ণ যা, সেটা হলো তার প্রচারিত ধর্মে মিশরীয় প্রভাবের বাহুল্য।
যেমনঃ
০১) মিশরীয় পুরোহিত প্রথা ইহুদীরা অনুসরণ করে। যেটা দেখা যায় মুসার মৃত্যুর পরে তার ভাই হারুন/অ্যারনকে তার অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করার দায়িত্ব গ্রহনের মাধ্যমে। একই রকম পাওয়া যায় ইসলামের চার খলিফার আগমনের মাধ্যমে কিছুটা মডিফায়েড রূপে। সনাতন ধর্মেও ব্রাক্ষ্মন পুরোহিত রীতি প্রাচীন মিশরীয় রীতিরই কিছুটা পরিবর্তিত রূপ। খ্রীস্টধর্মে পোপ নির্বাচন এই রীতিরই মডিফায়েড রূপ।
০২) মিশরীয় পুরোহিতরা জনসাধারণকে যখন আদেশ দিতেন তখন বলতেন এ আদেশ ঈশ্বরের প্রত্যাদেশ (revelation) এবং অবশ্য পালনীয়। এই নিয়মানুযায়ী প্রায় সকল ধর্মপ্রচারক/প্রফেটদেরই দাবী যে তারা ঐশ্বরিক প্রত্যাদেশ প্রাপ্ত।
০৩) মিশরে থথ(thoth) হলেন ঈশ্বর মনোনীত প্রধান দেবদুত বা বার্তাবাহক যার মাধ্যমে প্রফেটরা তাদের প্রত্যাদেশ প্রাপ্ত হন বলে দাবী করেন। ইহুদী (দানিয়েল ৯:২১) এবং খ্রীস্টধর্মে প্রধান দেবদুত হলেন গ্যাব্রিয়েল আর ইসলামে জিবরাইল।
০৪) মিশরীয়রা বিশ্বাস করতো প্রত্যেক মানুষের কর্ম ঈশ্বর লিপিবদ্ধ করেন।
সকল ধর্মেই এই ব্যাপারটা অপরিবর্তিত ভাবে গ্রহীত হয়েছে।
০৫) মৃত্যুর পরে বিচার এবং ভালো কাজের পুরষ্কার স্বরূপ ওসিরিসের সাথে তার আবাসভুমে বসবাস মিশরীয়দের একটি বিশ্বাস। যা পরবর্তীতে সকল ধর্মে সাগ্রহে গ্রহণ করা হয়। শুধু বৌদ্ধ ধর্মেই মৃত্যু পরবর্তী জীবনের কোন অপার্থীব হাতছানি নেই।
০৬) ওসিরিসের শত্র“ ছিলো সেট (set)।
এই শব্দ থেকে ইহুদীরা মানুষের শত্র“ হিসাবে ংধঃধহ- এর ধারণা তৈরী করে।
০৭) খাতনা প্রচীন মিশরের অতি প্রাচীন প্রথা। যা ৩২০০ খ্রীস্টপূর্বাব্দ থেকে প্রচলিত। মুসা ইহুদীদের মিশর থেকে উদ্ধার করে আনার পর সার্বজনীন খাতনা প্রথা প্রচলন করে। যা ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের মাঝেও প্রচলিত।
০৮) সম্রাট আখেনটেন/আকেনাটেন সুর্য উঠার আগে এবং সুর্যাস্তের পর পরই প্রার্থনা করতেন, কারণ মিশরে সুর্যকে দেবতা হিসেবে মানা হতো। ইহুদীরাও তেমনি ভোরে এবং সুর্যাস্তের পর প্রার্থনা শুরু করে। এই দুই প্রার্থনা প্রচলিত ছিল ”শেমা” এবং ”তেফিল্লাহ” নামে। ইসলামে ফজর এবং মাগরিব নামে এই প্রার্থনা চালু রয়েছে। সনাতন ধর্মেও ভোরে এবং সন্ধায় প্রার্থনার রীতি রয়েছে।
০৯) মিশরীয় চিত্র এবং বাস রিলিফ থেকে এটা প্রমানিত যে- প্রার্থনার সময় আখেনটেন/আকেনাটেন হাটুঁতে হাত রেখে নত হতেন ও পরে হাঁটু গেড়ে প্রাণিপাত করতেন। ইহুদীরা এই প্রথা গ্রহণ করে। ইসলাম ধর্মে নামাজ/সালাত আদায় করার সময় এই প্রথা পালন করা হয়। সনাতন ধর্মে ষাষ্টাঙ্গে প্রণাম এই প্রথারই পরিবর্তিত রূপ।
১০) প্রার্থনার শেষে ইহুদী এবং খ্রীস্ট ধর্মাবলম্বীরা ”আমেন” শব্দটা ব্যবহার করেন।
হিব্র“ ভাষায় যার কোন অর্থ নেই।
মিশরীয় ধর্ম অনুযায়ী ”আমেন” শব্দটা ঈশ্বরের নাম হিসেবে প্রচলিত।
(তথ্য সুত্র-ঞযব writings of Ashmawy University press of Florida-USA-1998)
ক্রমশ...
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।