আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ফিফটি-ফিফটি (শুধু মাত্র পুরুষদের জন্য)

ভালো আছি

ফিফটি-ফিফটি মানে হল আধাআধি অর্থাৎ সমান সমান। কোন কিছু সমান ভাবে ভাগ করাকে ফিফটি-ফিফটি বলা যায়। এই ফিফটি-ফিফটি কথাটি সবথেকে বেশি প্রচলিত বর্তমান যুগের মেয়েদের মধ্যে। প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে তাদের মুখে একটি কথায় প্রতিধ্বনি হয় ফিফটি-ফিফটি বা নারী পুরুষ সমান সমান। সেটা অধিকারের ক্ষেত্রেই হোক বা অন্নান্য ক্ষেত্রে হোক না কেন।

কিন' শুধি পুরুষ সমাজ আপনারা কি একটু চিন-া করে দেখেছেন যে কথাটা কতখানি সত্যি। আসলে পুরুষের কারনে নারীরা অবহেলিত নাকি নারীর কারনে পুরুষরা বির্পযস-। আসুন আমরা কিছু বাস-ব উদাহরনের মধ্য থেকে এর সর্ম্পকে বেঝার চেষ্টা করি। কেস হিস্ট্রি-১ণ: আহসান সাহেবের বয়স গত ফেব্রুয়ারীতে ষাট পুরেছে। শরীরে তার তেমন কোন রোগ-বালাই নেই শুধু মাত্র বাতের ব্যাথটা ছাড়া।

এটা তাদের বংশগত রোগ। তার দাদার ছিল এই রোগ বাবারও ছিল। তিনিও অনেক দিন থেকে এই রোগে ভুগছেন। ছা-পোষা মানুষ তিনি। গত কয়েক বছর হল চাকরী থেকে অবসর নিয়েছেন।

অভাবের সংসার । দুই ছেলের মধ্যে বড়টিকে তিনি কানাডা পাঠিয়েছিলেন পড়ালেখার জন্য। ওখানেই সে বিয়ে করে সেটেল হয়ে গেছে। অনেক দিন হল তার সাথে কোন যোগাযোগ নেই। ছোট ছেলেটি মার্স্টাস পাস করেছে দেড় বছর হয়ে গেল।

চাকরীর খোজে সারাদিন এদিক ওদিক ঘুরে বেরায়। দুইটি টিউশনি করে যা পাই মাসের শেষে তার পুরোটাই মায়ের হাতে তুলে দেয়। কিন' এই বাজারে টিউশনি করে কি আর সংসার চলে । তাই পেনশনের টাকাটায় তার একমাত্র ভরসা। প্রতিবারের মত এবারও পেনশনের টাকা তোলার জন্য তিনি বাসা থেকে বের হয়েছেন।

তার অফিস বাসা থেকে বেশ দুরে। বাসে করে যেতে হয়। লোকাল বাস তাই টিকিট কাটার দরকার হয় না। কিন' আজ সকাল থেকেই হঠাৎ করে তার বাতের ব্যাথাটা আবার চেপেছে। প্রচন্ড ব্যাথায় দাড়িয়ে থাকতে পারছেন না তিনি।

তারপরও দাড়িয়ে আছেন। পেনশনের টাকাটা আজকে না তুললেই নয় তাই এই কষ্টের মধ্যেও বেরিয়েছেন। বাস এসে দাড়ালে তিনি বাসে চড়ার জন্য এগুতে গিয়ে সামনে তাকিয়ে দমে গেলেন। প্রচুর ভীড়,মানুষ যে যাকে পারছে ঠেলা-গুতা মেরে বাসে উঠছে। বয়ষ্ক মানুষ তিনি, তার ওপর বাতের ব্যাথা এর মধ্য দিয়ে কি করে যে বাসে চড়বেন বুঝতে পারছেন না।

কিন' তারপরও তাকে চড়তেই হবে। মনের জোর এক করে ঠেলা-গুতা থেকে গা বাচানোর ব্যর্থ চেষ্টায় তিনি কোন রকমে বাসে উঠে পড়লেন। সৌভাগ্যক্রমে পেছনের দিকে একটি ছিট ফাঁকা পেয়ে বসেও পড়লেন তিনি। যদিও ছিটটি চাকার ওপরে তাতে কি একটু বসে আরাম করে তো যাওয়া যাবে। বাস ছেড়ে দিয়েছে তার পরও লোকজন ঝুলে,লাফিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে।

কেউ কেউ সুবিধা করতে না পেরে লাফিয়ে নেমে পড়ছে। আবার অনেকে কোন রকমে দরজার হাতল ধরে ঝুলে রয়েছে। সময় পার হয়ে যাচ্ছে গোন-ব্যে তাদের পৌছাতেই হবে। .........এই যে চাচা মিয়া বয়সের সাথে সাথে কি বুদ্ধি শুদ্ধির মাথাও ভোতা হয়ে গেছে নাকি হ্যা। কন্ডাক্টরের র্ককশ কন্ঠে চমকে উঠলেন তিনি।

মিনিট পাঁচেকের মত হবে আরামে তার চোখ বুজে এসেছিল। .........চাচা মিয়া বাড়িত যাইয়া ঘুমায়েন,অহন উঠেন। .........এসে পড়েছি নাকি বাবা আজকে বড় তাড়াতাড়ি পৌছলাম মনে হয়। .........আরে ধুর উঠেনতো আপনি। দেখি আপা আপনি এখানে বসেন ।

দাড়ায়া দাড়ায়া কষ্ট করতাছেন। আজকাল মানুষগুলার যে কি হইছে চোখে দেইখাও অন্ধ সাইজা থাকে । মানবতাডাও নাই। গজ গজ করতে করতে সে বাসের সামনের দিকে এগিয়ে গেল। আহসান সাহেব মেয়েটিকে দেখলেন ।

কন্ডাক্টর যাকে বসতে বলল। মেয়েটির পরনে কলেজ ড্রেস,বোঝায় যাচ্ছে কলেজে পড়ে । ওদেরই তো এখন ছোটাছুটি করবার বয়স। কিন' তার জন্য একজন বয়ষ্ক মানুষের সাথে একটু আগে যে ব্যাবহার করা হল তাতে মেয়েটির মধ্যে কোন ভাবান-রই দেখা গেল না মনে হলো কিছুই হয়নি যেন,স্বাভাবিক একটা ব্যাপার। তাছাড়া বাতের ব্যাথার কারনে তিনি দাড়াতেও পারছেন না ঠিক মত।

হায় রে দুনিয়া মানুষের ভেতর থেকে সিমপ্যাথি বোধটুকুও হারিয়ে গেছে। কেস হিস্ট্রি-২ণ: হাইর্কোটের মোড় যেটা তিন রাস-ার মোড় হিসাবে বেশি পরিচিত। প্রচন্ড ব্যস- একটি সড়ক। সময়ের খুব অভাব। পিলপিল করে মানুষ ও যান-বাহন আসাযাওয়া করছে।

এর মধ্যে ২২-২৩ বছরের একটি যুবক হন--দন- হয়ে হেটে আসছে। আর এদিক ওদিক তাকিয়ে কি যেন খুজছে। হঠাৎ রাস-ার অপর পাশে দাড়িয়ে থাকা একটি খালি রিকশা দেখে তার হাটার গতি আরও বেড়ে গেল। প্রায় ছুটতে ছুটতে রাস-ার ধারে এসে চিৎকার করে ডাকল -এই রিকসা যাবে। রিকসাওয়ালা ঘাড় কাত করে সম্মতি জানাল যে সে যাবে।

তারপর রাস-ার এপাশ ওপাশ দেখে সে তার রিকসা ঘুরিয়ে যুবকের দিকে এগিয়ে আসতে লাগল। প্রায় রিকসাটি যুবকটির সামনে চলে এসেছে। রিকসা থামলেই যুবকটি রিকসায় চড়ে তাড়া তাড়ি তার গন-ব্যেপৌছবে। কিন' একি রিকসাওয়ালা যুবকের সামনে না দাড়িয়ে তাকে পাশ কাটিয়ে দশ-বারো গজ পেছনে এসে খুব সুন্দর করে সেজে গুজে দাড়িয়ে থাকা একটি তরুনির কাছে গিয়ে রিকসাওয়ালা বলল- আপা যাবেন। যুবকটি তো হতভম্ব হয়ে গেল।

ব্যাপারটা কি হল । সে রিকসাওয়ালাকে ডাকল আর রিকসাওয়ালা তার ডাক শুনে রাস-ার ওপার থেকে এপারে এসে তার সামনে না দাড়িয়ে দুরে দাড়িয়ে থাকা একটি মেয়ের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করছে মেয়েটি যাবে কিনা। অথচ সে তার কাছে আসলে নিশ্চিত ভাড়াটা পেত তাছাড়া রিকসাওয়ালাকে তো সেই ডেকেছিল। অল্প মুর্হুতের জন্য হলেও যুবকটির মনে পৃথিবীতে মেয়ে না হয়ে জন্মানোর কারনে ক্ষোভ হল। শুধু মাত্র ওপরের দুটি ক্ষেত্রই নয় এরকম অহরহ ক্ষেত্র আছে যেখানে পুরুষরা বঞ্চিত হচ্ছে মেয়েদের কারনে।

সময়ের সল্পতা এবং ধর্য্যের অভাবে সেগুলি লিখতে পারলাম না। কিন' ভাই ও বন্ধুরা আপনারা নিশ্চয় আমার সাথে এই ব্যাপারে একমত হবেন যে মেয়েদের ফিফটি-ফিফটি কথাটা আসলে ঠিক নয় তারা ফিফটি-ফিফটির পুরো সুবিধাটায় পাচ্ছে অর্থাৎ হানড্রেড র্পাসেন্ট সুবিধা নিচ্ছে। ওয়ান র্পাসেন্টও দিচ্ছে না পুরুষদেরকে। কি বলেন ড?

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।