আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আপ এন্ড ডাউন

আমি সিনেমা দেখি

আপ উপরে উঠিয়া অথবা উঠিতে উঠিতে পড়িতে হইবে একটা সিঁড়ি ভাঙতেই আর একটা সিঁড়ি। দোতলা। দরজার সামনে দুইজন। ‘কার কাছে যাবেন?’ একজন প্রশ্ন করে। নূর তার ঘেমে উঠা মুখটা একটু মুছে মামুনের দিকে তাকায়।

তার আগেই মামুন উত্তর দেয় -‘সুমনের কাছে। ’ -সুমন পাঁচতলায়। -জানি। আবার সিঁড়ি ভাঙতে থাকে নূর ও মামুন। উঠতে উঠতে মামুন নূরের দিকে তাকায়।

নূরকে জিজ্ঞাস করে ‘ভয় পাইছস?’ -না, ঠিক আছে। চল। তিনতলায় চলে আসে তারা। দরজার মুখে দুইজন। ‘কার কাছে যাবেন?’ আবারও একজনের প্রশ্ন।

- সুমনের কাছে। যথারীতি মামুন বলে। - সুমন পাঁচতলায়। - জানি। আবার তারা উঠতে থাকে।

‘সিগেরেট খাবি?’ মামুন জিজ্ঞাস করে। নূর মাথা এপাশ ওপাশ নেড়ে নাবোধক উত্তর দেয়। চারতলায় উঠে দরজায় যথারীতি দুইজনকে পায় তারা। নূর মনে মনে ঠিক করে এইবার সে বলবে ‘সুমনের কাছে’ কিন্তু এরা কোন প্রশ্ন করে না। সিঁড়ি ভেঙে পাঁচতলায় চলে আসে তারা।

দুইজন লোক নামছে। আর সেইমতো দুইজন পাঁচতলার দরজায়। মামুন প্রশ্ন করে ‘ সুমন আছে?’ - ভেতরে যান। ঢুকে করিডোর ধরে একটু সামনে গিয়েই সুমনের সাথে দেখা। মামুনকে দেখেই সুমন সালাম দেয়।

- স্লামালেকুম বস। - কেমন আছ? - এই আল্লায় যেমন রাখছে। তা অনেকদিন পরে আইলেন। আপনার বন্ধু? নূরের দিকে তাকায় সুমন। সুমনের প্রশ্নটার উত্তর না দিয়ে মামুন আশেপাশে চোখ ঘুরাতে ঘুরাতে বলে ‘নতুন কিছু আছে?’ - আপনেরা বসেন।

আসেন, এই দিকে আসেন... সুমন তাদের একটা রুমে নিয়ে যায়। - বসেন, আমি কয়টা নিয়া আসি। সুমন বেরিয়ে যায়। মামুন একটা চেয়ারে বসে। পাশে একটা বিছানা।

নূর দাঁড়িয়ে চারপাশটা বোঝার চেষ্টা করে। ‘বয়’ মামুন বলে। নূর দাঁড়িয়ে একটু সময় নেয়। মামুনের দিকে তাকায়। দরজা দিয়ে বাইরে দেখার চেষ্টা করে।

তারপর বিছানায় বসে। ‘যাবি?’ মামুন বলে। নূর কিছু বলে না। - টাকার কথা ভাবিস না। শালা অভিজ্ঞতা লইয়া যা।

এপাশ ওপাশ মাথা নাড়তে নাড়তে নূর বলে ‘ তুই যা। ’ এই সময় সুমন রুমে ঢুকে। সাথে তিনটি মেয়ে। হাফপ্যান্ট ও ব্রা পরা। নূর মেয়েগুলোর দিকে তাকায়।

তার নাকের নিচে ঘাম জমতে থাকে। শার্টের হাতে মুছার চেষ্টা করে। সুমন একটা মেয়েকে বা হাতে টেনে তার কাছে আনে আর ডান হাতে মেয়েটার একটা স্তন ধরে একটু চাপ দেয়। ‘টাইট আছে সবদিকে, মজা পাইবেন বস’ মামুনকে বলে। মামুন ঠিক পছন্দ করতে পারছেনা।

‘এদের তো গত তারিখে দেখছি। নতুন কিছু নাই?’ মামুন বলে। ‘নটির আবার নতুন, বিয়া করা বউওতো লাগাইতে লাগাইতে পুরান হইয়া যায়। ’ একটি মেয়ে বলে উঠে। মামুন একটু কৃত্রিম ুব্ধতা নিয়ে তাকায়।

‘বস বসেন, আমি আর একটা আনতাছি। ’ বলে সুমন মেয়ে তিনটিকে নিয়ে বের হয়ে যায়। সুমন বেরিয়ে গেলে মামুন নূরকে বলে ‘তোর পছন্দ হইছে কোনট?’ নূর কথা বলে না। - মাঝেরটার দুধগুলা অবশ্য ভালোই ছিল... - তাহলে গেলিনা কেন? - আরে দেখি আরো ভালো কিছু আনে কিনা। এমন সময় মামুনের মোবাইল বেজে উঠে।

পকেট থেকে বের করে মোবাইলের দিকে তাকিয়েই মামুন জিভে কামড় দেয়। - কার কল? - শান্তার। শালা সকালে দেখা কইরা আসছি। এখন আবার ফোন দিছে। মামুন কলটা রিসিভ করে না।

কলটা কেটে যায়। নূর মামুনের দিকে তাকিয়ে থাকে। মোবাইটা আবার বেজে উঠে। - রিসিভ কর। মোবাইলটা নূরের দিকে এগিয়ে দিয়ে মামুন বলে ‘তুই কর।

’ - কি বলবো? - যা কিছু একটা। নূর মোবাইটা হাতে নিয়ে কল রিসিভ করতেই সুমন দুইটা মেয়েকে নিয়ে রুমে ঢুকে। মামুন একটি মেয়েকে দেখিয়ে সুমনকে ইশারা করলে সুমন মেয়েগুলোকে নিয়ে বেরিয়ে যায়। পকেট থেকে সিগারেটের প্যাকেট ও লাইটারটি নূরের সামনে রেখে সুমনের পিছন পিছন রুম থেকে বের হয়ে যায় মামুন। নূর শান্তার সাথে কথা শেষ করে মোবাইলটা পকেটে রেখে প্যাকেট থেকে একটা সিগারেট ধরায়।

ডাউন নামিতে নামিতে কিংবা নামিয়া অথবা নামার পর আংশিক বা পূর্ণ বিশ্রাম নিয়া পড়িলেও চলিবে সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে নূর বলে ‘এতো দেরি করলি? অনেক লাস্টিং করছস মনে হয়?’ - আরে না, দুইটা দিছি। - টাকাতো দিলি ২৫০। - ভিতরে সিস্টেম কইরা ওই মেয়েরে ১০০ টাকা ধরাইয়া আর একটা দিয়া দিছি। - শালা বাইনচোত। গাছেরটা-তলেরটা সবই খাও।

তর কারনে শান্তার কাছে একশ মিছা কথা কইতে হইছে। মামুন হাসে। শব্দহীন। তার দাঁতগুলো দেখা যায়। - আচ্ছা, শান্তা তোরে দেয় না? মামুন আবার শব্দহীন হাসে।

- কিরে, কথা ক? - কি? - শান্তারে লাগাছ না?? এবার মামুনের হাসিটার শব্দ শোনা যায়। ইতিমধ্যে তারা পাঁচতলা থেকে নিচে নেমে মেইন গেট পার হয়ে রাস্তায় চলে আসে। নূরের দিকে তাকিয়ে মামুন বলে ‘কিছু খাবি?’ - না। - শালা ভোদাই বুড়া হইয়া যাইতাছ এখনও লাগাও নাই। কইলাম টেকা আমি দিমু তাও গেলা না।

আমার সাথে আইছ, মিছা কথা কইয়া শান্তারে ম্যানেজ করছ, লাগাও নাই ঠিক আছে, কিছু খাও। - তুই খা। - আরে চল কিছু খাই। - না, রিক্সা ডাক দে। - এই যে গেলি, মাইয়ার বুক দেখলি-পাছা দেখলি-পেট দেখলি তার পরও তোর ইচ্ছা হয় না! - আমার খাড়ায় না।

আমার খালি তানিরে মনে লয়। - দেবদাস সাজছ না? তানির বিয়ারওতো তিন বছর হইয়া গেছে। একটা বাচ্চাও নাকি হইছে। এখনও... নূর চুপ করে থাকে। - তানিরে লাগাইছিলি কোনদিন? নূর কথা বরে না।

- টিপছস? - না। চুমা দিছি। - তোর জিনিশ তো শালা কয়দিন পরে খইস্যা পরবো। এইটা তো খালি মুতনের জন্য না। এইটার তো আরো কিছু কাম আছে, নাকি? এরমাঝে নূরের পকেটে মামুনের মোবাইল বেজে উঠে।

নূর তার পকেট থেকে মোবাইলটা বের করে মামুনকে দেয়। মামুন মোবাইলের দিকে তাকিয়ে কলটা কেটে দেয়। - রিসিভ করলি না? - দাঁড়া রিক্সায় উঠে ব্যাক করি। - কে? মুচকি হেসে মামুন বলে ‘নতুন একটা। তুমি দেখ নাই মামা।

’ নূর নিলিপ্ত দৃষ্টিতে মামুনের দিকে তাকিয়ে থাকে। - দশ পনের দিন হয় পরিচয়। প্রথম কয়দিন একটু টাইট গেছে। বেশি কথা কইতে চায় নাই। পরশু থাইক্যা মোটামুটি সিস্টেমে আইছে।

এই নিয়া আজ পাঁচবার কল করলো। আর দশ পনের দিনেই পুরা সিস্টেম হইয়া যাইবো। - নাম কি? - লিমি। মামুন একটা রিক্সা ডাক দিয়ে নূরকে বলে ‘উঠ। ’ - এখন না পরে যাবো।

- আরে উঠ, কলটা ব্যাক করি। - আমার খিদা লাগছে, চল কিছু খাই। - পরে খা, আগে চল। - না। তুই আমার সাথে চল।

ঐ যে একটা হোটেল দেখা যায়। এই যে ভাই রিক্সা তুমি যাও। রিক্সাঅলা চলে যায়। নূর হোটেলটর দিকে এগুতে থাকে। মামুন কিছুটা অপ্রস্তুত।

দাঁড়িয়ে থাকে। নূর একটু দূরে গিয়ে পিছন ফিরে মামুনকে ডাক দেয় ‘কিরে আয়’। কথাটা মামুনের কানে যায় না। ততক্ষণে সে মোবাইল হাতে কল ব্যাক করায় ব্যস্ত হয়ে পরে।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।