আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

স্বপ্নচোর-১১তম পর্ব

দ্যা ব্লগার অলসো.....

স্বপ্নচোর-১০ পর্ব ‘কিরে, নতুন শিকার নাকি?’ মারুফের চোখের তারায় দারুণ কৌতুহল। ‘না, তেমন কিছু নয়। তোকে বললাম না , ও কাজ আমি ছাড়ার চেষ্টা করছি। ’ ‘তাহলে, নিশ্চয়ই বিয়ে করে ফেলেছিস? দারুন একটা কাজ করেছিস, দোস্ত! ঘাটে ঘাটে অনেক তো নাও বাওয়া হলো, এবার তরী ভেড়ানো দরকার। আর তোর পছন্দও দোস্ত, মাথা খারাপ করার মতো সুন্দর ভাবি!’ ‘তোর সমস্যা কি জানিস, মারুফ? তুই সবকিছু বেশ আগে-ভাগেই বুঝে ফেলিস।

’ গম্ভীর গলায় বলল জয়, বিরক্ত বোধ করছে ও। ‘যা ভাবছিস সেরকম কিছুই নয়। ’ চোখ প্রশ্ন নিয়ে তাকিয়ে থাকল মারুফ। ‘মেয়েটা আসলে বিপদে পড়েছিলো, সাহায্য করেছি। ’ ‘আচ্ছা! আজকাল তাহলে মেয়েদের বিপদেও কাজে আসছিস? ভালো, ভালো।

তাছাড়া শুধু যে মেয়ে, তা নয়, রীতিমতো সুন্দরী মেয়ে। তা এবার একটু ঝেড়ে কাশতো দোস্ত, যেভাবে গুম মেরে আছিস, গলায় কফ আটকে না আবার মারা যাস। ’ সব খুলে বলল ওকে জয়। শুনে খানিক চুপ মেরে রইল মারুফ, তারপর বলল ‘কি নাম মেয়েটার?’ ‘জানি না। ’ ‘গর্দভ, উজবুক তুই একটা!’ ‘কেন?’ ‘আরে হিরোইনকে উদ্ধার করলি, চার-পাঁচজনের সাথে রীতিমতো ফাইট করে, আর ওর নামটা জিজ্ঞেস করবিনা।

এ সমস্ত ক্ষেত্রে কি হয়, তা তো সবারই জানা। হিরোইন গদগদ গলায় বলবে-আজ আপনি না থাকলে কি যে হতো। উত্তরে ততোতিক গদগদ গলায় গলে বাস্প হয়ে উড়ে যেতে যেতে হিরো বলবে- না না, কি যে বলেন, ওটা তো আমার ফরজ ছিলো, ফরজে-কেফায়া। তারপর......’ ‘শালা, আর একটা কথা বলবি তো, এক ঘুসিতে তোর নাক থ্যাবড়া করে দেবো!’ হুমকি দিলো জয়। ‘আচ্ছা, যা, মাফ করলাম তোকে।

তা কি কারনে এখানে আসা হয়েছে?’ ‘বাধ্য হয়েই এসেছি, নইলে তোর কাছে আসে কোন শালা!’ ‘আমার কাছে প্রয়োজনে আসবি, আবার প্রয়োজন ফুরালে গালি-গালাজ করবি, এটা কি রকম কথা। দিস ইজ নট ফেয়ার। ’ হেসে বলল মারুফ, ‘যাই হোক, কাজের কথা বল। ’ ‘কিছু টাকার দরকার। ’ ‘কত?’ ‘আপাতত দুহাজার।

’ ‘হঠাৎ টাকার দরকার পড়ল যে?’ ‘আর বলিস না, পকেটে ফুটো পয়সাও নেই, তার উপর এই ঝামেলা। মেয়েটা কি বলছে জানিস?’ ‘না বললে জানব কি করে?’ ‘ও নাকি বাড়ি থেকে পালিয়ে এসেছে। ’ ‘বলিস কি!’ চোখ কপালে উঠে গেল মারুফের, একটু থেমে আবার বলল-‘ তুই না বলেছিলি ওসব ছেড়ে দিয়েছিস?’ ‘শালা তোর মাথায় গরুর বিষ্ঠা সব! এই মাথা নিয়ে কি করে যে এতোবড়ো কারবার সামলাস কে জানে। ’ ‘আরে আমি থোড়াই সামলাই। এই চেয়ার জুড়ে বসে থাকা ছাড়া আমার আর কোন কাজ নেই, কারবার সামলানোর জন্য অনেক লোক আছে।

’ ‘আচ্ছা বাদ দে, যে কথা বলছিলাম। মেয়েটা নাকি বাড়ি থেকে পালিয়ে এসেছে। এখন বল আমার কি করা উচিত, ওকে নিয়ে আসার সময় রিকশা ভাড়াটাও আমি দিতে পারিনি, হাজার হোক একটা প্রেস্টিজের ব্যাপার আছে। তাছাড়া মেয়েটাকে কিছু খাওয়ানো দরকার। ’ ‘আচ্ছা সে নাহয় হবে, কিন্তু তুই এই ঝামেলা কাঁধে নিচ্ছিস কোন দুঃখে? আমি পেট পুরে খাইয়ে দিচ্ছি, তারপর বিদায় করে দে।

’ ‘তুই আসলে ব্যাপারটা বুঝতে পারছিসনা, এভাবে ওকে চলে যেতে দিতে পারিনা আমি। ’ ‘কেন?’ ‘অনেকগুলো কারণ আছে, তবে তোর কাছে মিথ্যা বলবনা। আসল কারণটা হচ্ছে, ওকে আমার অপরিচিতা মনে হয়নি, মনে হয়েছে .........’ ‘কি মনে হয়েছে?’ ‘মনে হয়েছে..., ও আমার হারিয়ে যাওয়া আলো। ’ ‘শালা, এতোণে ট্র্যাকে আসা হলো!’ ‘ঠাট্টা নয় দোস্ত, আলোর কথা মনে আছে তোর?’ ‘কেন মনে থাকবেনা, সবকিছুই তো আমার জানা। ঠিক আছে, দু’মিনিট বোস, আমি দেখছি।

’ বলে নিচের ড্রয়ার খুলে একতোড়া টাকার বান্ডিল ওর দিকে বাড়িয়ে দিল মারুফ। ‘নে ধর, এখানে পাঁচ হাজার আছে। ’ ‘অতো টাকা দিয়ে আমি কি করব?’ ‘আরে নে ব্যাটা, দুনিয়াতে এটাই একমাত্র জিনিস যেটার প্রয়োজন কখনো কমেনা, শুধুই বাড়তে থাকে। ’ ‘কবে ফেরত দিতে পারব সেটা কিন্তু বলতে পারছিনা। ’ ‘সে পরে দেখা যাবে।

’ যাবার জন্য পা বাড়াল জয়, দোরগোড়ায় গিয়ে থমকে দাঁড়াতে হল আবার, পিছন থেকে মারুফ ডাকছে ওকে। ‘যদি একেবারেই থেকে যেতে চায়, মানা করিস না, কেমন?’ হেসে বলল ও। রেগেমেগে কিছু বলতে যাচ্ছিলো জয়, কি মনে করে আবার নিজেকে সামলে নিল, ওর দিকে চেয়ে মুচকি হেসে বেরিয়ে গেলো। চলবে......

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।