জানার আগ্রহ মানুষের চিরন্তন, বই হলো তার বাহন, আইনের মৃত্যু আছে কিন্তু বইয়ের মৃত্যু নেই।
۞ আমরা দশ মাস দশ দিন বা আরো কম বেশী সময় মায়ের পেটে ছিলাম। মা আমাদেরকে পেটের মধ্যে রেখে সংসারের যাবতীয় কাজ-কর্ম করেছিলেন। নামায ও কোরআন তেলোয়াত করেছিলেন। কত কষ্টই না মা করেছিলেন।
۞ আমরা দুনিয়াতে আসার দিন মায়ের কি যে কষ্ট হয়েছিল একমাত্র মা-ই জানেন। মায়ের মুখ থেকে আমরা সেই গল্প শুনেছি।
۞ আমরা দুনিয়াতে আসার পর থেকে দুই বছর মায়ের দুধ পান করেছি। মা নিজ হাতে অন্য খাবারও মুখে তুলে দিয়েছেন।
۞ আমরা অবুঝ ছিলাম বলে যখন তখন মায়ের কোলে প্রশ্রাব-পায়খানা করে মায়ের কাপড় নষ্ট করেছি।
সারারাত কান্নাকাটি করে মায়ের ঘুম নষ্ট করেছি। মা আমাদেরকে সারাক্ষন পাহারা দিয়ে রেখেছিলেন।
۞ স্কুলে ভর্তি হওয়ার পর মা নিজেই স্কুলে নিয়ে যেতেন। স্কুল থেকে নিয়ে আসতেন। আমাদের প্রথম শিক্ষক মা----
۞ এইভাবে শিক্ষা জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত মা আমাদের পড়ালেখার নিয়মিত তদারকি করতেন।
পকেট খরচের টাকাটাও মায়ের কাছ থেকে নিতাম।
۞ আমরা উপার্জিত টাকা মায়ের হাতে তুলে দিয়েছি। মায়ের কাছে জমা রেখেছি।
۞ বিয়ের আগ পর্যন্ত আমরা মায়ের হাতে রান্না খেয়ে বড় হয়েছি। মায়ের কথামত চলেছি।
মায়ের অবাধ্য হইনি। মা কে নিয়ে ঘুরেছি।
۞ আর বিয়ের পরে সংসারের দায়িত্ব বউয়ের উপর অর্পণ করা হয়। মাকে অবসর দেয়া হয়। বৃদ্ধা মা অবসর জীবনে সংসারের হালকা কাজগুলি করে থাকে।
নাতি-নাতনী নিয়ে ব্যস্ত থাকে। বেশীর ভাগ সময় ইবাদতে মশগুল থাকে। আত্বীয়-স্বজনের খোজ খবর রাখে।
۞ মায়ের প্রতি অবহেলা--------------------কেন?
কিছু কিছু পরিবারে মাকে অবহেলার শিকার হতে হয়।
বিয়ের পর প্রিয় সন্তান পর হতে থাকে।
অনেকে বউকে খুশী রাখতে গিয়ে মাকে অপমান করে থাকে।
বউয়ের জন্য দামী শাড়ী-গহনা কিনে থাকে আর মাকে সস্তা কাপড় কিনে দেয়।
সংসারে মাকে বোঝা মনে করে থাকে।
শশুর-শাশুড়ি ও শালা-শালীকে দামী গিফট দিয়ে থাকে।
মাকে ঘরে রেখে বউ ও সন্তানদেরকে নিয়ে দেশ-বিদেশে ঘুরে বেড়ায়।
কেউবা মাকে গ্রামের বাড়ীতে রেখে শহরে বসবাস করে।
কেউবা মাকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে যায়।
আমরা প্রতিদিন মাকে ভালবাসি। একটি নির্দিষ্ট দিনে মা দিবস ঘোষনা দিয়ে মাকে সব ভালবাসা ও উপহার না দিয়ে বরং
প্রতিদিন মাকে ভালবাসুন,
বউয়ের জন্য কিছু কিনলে মায়ের জন্য কিছু কিনুন।
মায়ের খোজ খবর রাখুন।
মায়ের প্রতি যত্ন নিন।
মায়ের সাথে ভাল আচরণ করুন।
বেড়াতে গেলে মাকে ও সঙ্গে নিয়ে যাবেন।
বউকেও মায়ের সেবা-যত্ন করতে বলুন।
প্রয়োজনে বাধ্য করুন।
বিয়ের আগে আপনার মা যে কি পরিমান কষ্ট করেছে বউকে সেই কথা স্বরণ করিয়ে দিন। বউয়ের সাথে রাগারাগি করে অনেক সময় আলাদা থাকতে হয়। কিন্তু মায়ের সাথে রাগ করে কখনো আলাদা থাকতে পারবেন না। বউ গেলে বউ পাবেন কিন্তু মা হারালে আর মা পাবেন না।
আপনি যত বড় শিক্ষিতই হোন, যত প্রতিভাধরই হোন, আপনার মা অশিক্ষিতা হলেও মায়ের পায়ের নিচেই আপনার জান্নাত।
মনে রাখবেন, মায়ের সেবা করা জিহাদের চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের প্রিয় নবী (সাঃ) কি বলেছেন শুনুনঃ
এক ব্যক্তি নবীজীর স. কাছে এসে বলল, সদ্ব্যবহার পাওয়ার অধিকার বেশি কোন মানুষের? তিনি বললেন, তোমার মা। লোকটা বলল, এরপর কে? তিনি বললেন, এরপরও তোমার মা। লোকটা বলল, এরপর কে? তিনি বললেন, এরপরও তোমার মা। লোকটা বলল, এরপর কে? তিনি বললেন, এরপর তোমার বাবা।
-বুখারী, মুসলিম, তিরমিযী
মনে রাখবেন মায়ের মনে কষ্ট দিয়ে দুনিয়া ও আখিরাতে শান্তি পাবেন না। মায়ের মনে কষ্ট দিয়ে দুনিয়া ও আখিরাত দুটোই নষ্ট করবেন। তাই সংসার জীবনে বউকেও ভালবাসবেন আর মাকে বউয়ের চাইতে বেশী ভালবাসবেন। তাহলেই দুনিয়া ও আখিরাতে সাফল্য পাবেন, শান্তি পাবেন। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।