আমি পথিক
গ্রামে অনেক নদী অথবা পুকুর থাকলেও এই ঢাকা শহরে ঝিল একটি কমন বিষয়। খিলগায়ে এমনি কিছু ঝিল ছিল। এদের আবার বাহারি নাম ছিল। মেম্বরের ঝিল, মিয়ার ঝিল এমনি নানান নামে বিখ্যাত ছিল। তখন ক্লাস সিক্সে পড়ি।
আমাদের বাসার পাশেই ছিল বড় একটা ঝিল। আর আমরা সময় অসময়ে ঐ ঝিলে চুরি করে মাছ ধরতাম। পাড়ার এক বড় ভাই ঐ ঝিলে মাছ চাষ করতো। যদিও পাহারা থাকতো তবুও পাহারাদারের নজর এড়িয়ে আমাদের মাছ ধরা অভিযান পুরোদমে চলতো। অনেক ধরনের মাছ ছিল সেই ঝিলে।
বড়শি ফেলা মাত্রই ফেৎনার উঠা নামা শরীরে রক্তের বান ডেকে আনতো। আর মাছ ধরার পর সেই মাছকে পানিতে খেলিয়ে খেলিয়ে উপরে উঠানোর মধ্যে যে কি উত্তেজনা তা বলে বোঝানোর নয়।
এমনি একদিনের ঘটনা, সেদিন ও যথারিতি এক ঝোপঝারের আড়ালে বসে তন্ময় হয়ে মাছ ধরছি। আচম্কা পেছনে সর সর আওয়াজ পেয়ে ঘাড় ঘুরাতেই দেখি পাহাড়াদার বেটা পেছনে দাড়িয়ে আছে। সাথে আমার আর এক বন্ধুও ছিল।
ও একদৌড়ে পগার পাড়। ও কিছুটা দুরে দাড়ানো ছিল। আর দারোয়ান বেটা ছিল একেবারে আমার হাতের নাগালে। বন্ধুর আচম্কা দৌড়ে দারোয়ান যেই ঘার ঘুরিয়েছে আমি ধরাখাওয়ার হাত থেকে বাঁচার জন্য দিলাম পানিতে লাফ....... এক দমে অনেক দূর যেয়ে উঠে দেখি বেটা পাড়ে দাড়িয়ে গর্জাচ্ছে আর হাত মুঠো করে চেচাচ্ছে।
বাসায় ফিরে কেউ দেখার আগেই সোজা গোসল খানায় ।
আম্মা ও কিছু বুঝতে পারে নাই। বাইচা গেছি মনে কইরা যেই ঘরের থেকে বের হব ভাবছি গেটের কাছে দেখি দারোয়ান ভাই দাড়াইয়া আছে। আম্মাকে ডেকে সব বলল। তার পর অবাক হলাম যখন শুনলাম সে বলছে আসলে আমি আপনাদের বাসায় আসছি দেখতে ও ঠিক মতো ফিরা আসছে কি না। আমি ভয় পাইছিলাম যেমনে ও পানিত লাফ দিয়া পড়লো ও কোথাও ব্যাথা পাইল কিনা........
এখন অনেক বড় হয়ে গেছি।
সেদিনের সেই দাড়োয়ান ভাই ও বুড়ো হয়ে গেছে। দেশে গেলে আমি এখন ও যাই তার বাসায় তার সাথে কথা বলতে। সেই দিনগুলোকে যেন ফিরে পাই তার সাথে গল্প করে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।