বাংলাদেশ ব্লগারস এসোসিয়েশন সদস্য নং: ১০ । facebook.com/milton3d
আজকে সকালে ১১টার দিকে বের হয়েছিলাম অফিস থেকে। উদ্দেশ্য সিগারেট টানা। আমি একটা সিগারেট ধরিয়ে রাস্তার ফুটপাতের উপর দাঁড়িয়ে আছি। সেই সময়ে আমি মোবাইলে কথা বলছিলাম একজনের সাথে।
ফোনটি শেষ করে পাশে তাকিয়ে দেখি একটা ১৩/১৪ বছরের ছেলে। গায়ে ময়লা জামা। পায়ে স্পঞ্জের স্যান্ডেল। কিন্তু চেহারা দেখে মনে হয় কিছু পড়ালেখা জানে। এবং ভাল ঘরের ছেলে।
সে আমাকে বলল, "ভাই আমি আপনার গাড়ীটা মুছে দেই, আমাকে কয়েকটা টাকা দিয়েন। " সে আমার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটা গাড়ী দেখিয়ে এই কথাটি বলল। আমি বললাম, "ভাই ওটা আমার গাড়ী না, আর আমার গাড়ীও নেই। তুমি কি চাও?"
সে বলল, "ভাই কালকে রাইত থিকা কিসু খাইনাই। " আমার খুব খারাপ লাগলো।
যে চারটি টাকা আমরা ধোঁয়া বানিয়ে ছেড়ে দেই, সেই চারটি টাকা হলে এই ছেলেটা কিছু অন্ততঃ খেয়ে পেট ভরাতে পারে।
আমি ওকে রাস্তার উল্টো দিকের ছোট একটা হোটেল দেখিয়ে বললাম, "তুমি ওখানে যাও, আমি হোটেল ম্যানেজারকে বলে দিচ্ছি তোমার যা খেতে ইচ্ছা হয় খেয়ে নাও। "
ছেলেটি কেঁদে ফেলল আর বলল, "ভাই আমি ভিক্ষা চাই না। আমাকে একটা কাজ দেন। কাজ কইরা খাইতে চাই।
"
মনে মনে ভাবলাম, কত শক্ত মানসিকতা। তার পেটে ক্ষুধা কিন্তু মাগনা খেতে চায় না। আমি ওর হাত ধরে বললাম, "মনে করো তুমি কারো গাড়ী মুছে দিয়েছো, তার বদলে তুমি হোটেলে খাচ্ছো। "
ছেলেটা চোখ মুছতে মুছতে হোটেলে গিয়ে ঢুকলো। আমি হোটেলের ম্যানেজার কে ইশারা করলাম ও যা খেতে চায় তা দেওয়ার জন্য।
লাঞ্চের পর হাঁটতে হাঁটতে হোটেলে গেলাম বিল পরিশোধ করতে। যা শুনলাম, তা শুনে আমার বোধদয় হলো যে, এই পৃথিবীর এখনও বেশীর ভাগ মানুষ ভালো। তারা কাজ চায়, ভিক্ষা চায় না।
কারণ ছেলেটি শুধু এক গ্লাস ফিল্টার পানি খেয়েছে। যার জন্য আমাকে বিল দিতে হলো মাত্র এক টাকা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।