আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মাফ চাই আর কোনদিন করবো না

"ব্লগকে সিরিয়াসলি নেবার কিছু নেই"...গরীব স্ক্রীপ্ট রাইটার

ক্লাস সিক্সের ফাইন্যাল পরীক্ষা শেষ হয়েছিল একটু আগেই ডিসেম্বরের ৪ কি ৫ তারিখ, তখন আমি কি করবো এটা নিয়ে ভাবতে ভাবতে হঠাৎ মনে হল ভূতের ভয় দেখাই কাউকে। ঈদের সময় কয়েকবার এই চেষ্টা নিয়েছিলাম, কিন্তু ওইসময় লোকজনের চলাফেরা রাতে বেশি থাকে তাই কেউই ভয় পেতো না মাঝখান থেকে বদনাম। নানীর কাছে বললাম একটা শাড়ি দেবার জন্য, পুরানো যেকোন শাড়ি। নানী ভাবলেন মনে হয় কোন ভাল কিছু করবো তাই তার পরিষ্কার ধবধবে সাদা ভাল একটা শাড়ি দিলেন। এরপর ভূত সাজাবো কাকে আমি যেহেতু সাজাবো তাই আমি সাজতে পারবো না।

আমি, আমাদের পাশের বাসার এক ছেলে (সুমন) আর পিংগুলি (ওর মা আমাদের বাসায় কাজ করতো) এই ৩জনের মধ্যে থেকে পিংগুলিকে ঠিক করা হল কারণ পিংগুলি ভূত সাজার সাথে সাথে নাকে নাকে কথাও বলতে পারতো। আমরা একটু দেরি করে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে ভয় দেখাতে যাবো ঠিক করলাম, শীত কালের বেলা সাড়ে ৭টা আমাদের কাছে অনেক রাতই মনে হল। এরপর পিংগুলিকে কোথায় দাড় করাবো আর কাকে ভয় দেখাবো। ভেবে দেখলাম বাসার লোককে ভয় দেখালে ভয় পাবে না। শেষে বেছে বেছে পাড়ার একটু নির্জন বাড়ি যেটা টিনের চাল ছিল ওইটাকে ঠিক করলাম।

পিংগুলিকে ভূত বানিয়ে একটা খেজুর গাছের কাছে দাড় করিয়ে সুমনকে বললাম টিনের চালে একটা ইট মারতে। সুমন ইট মারল, এই বাসায় একটা ছোট মেয়ে ছিল বয়স ৬/৭ হবে, বলল, কেডারে? ওই কেডা? ওর মা ভাবল মনে হয় মেয়েটা ভুল শুনেছে পাত্তা দিল না। মেয়েটা তার মাকে বলতে থাকলো, মা আমাদের বাসায় যদি ভূত আসে আমরা লাঠিসোটা নিয়ে মারবো। এরপর আবার আরেকটা ইট মারল সুমন। এইবার ওর মা বলল, কেডা? কেডা? আমরা কিছুক্ষণ চুপ মেরে পরপর ৩/৪টা ইট মারলাম, তারপর একটু দূরে চলে গেলাম।

আর পিংগুলি ওখানেই থেকে গেল। ওই বাসার লোকজন এইবার দেখতে আসল কে ইট মারে। এরপর বাচ্চাটার বাবা আসলো একটু হুজুর প্রকৃতির লোক। তিনি বললেন, কেডারে? পিংগুলি নাকে নাকে হাসি দেয় আর বলে, কেডারে? ওই লোক যা বলে পিংগুলি তাই রিপিট করে। এরপর ওই লোক দোয়াদুরুদ পড়ে আর ভূতের দিকে ফু মারে আর পিংগুলি সমানতালে হেসে যাচ্ছে।

লোকটা এইবার চোখ বন্ধ করে দোয়া পড়ে ফু দিয়ে চোখ খুলে দেখে ভুত এখনও আছে। এইবার ওই লোক ঘর থেকে দা নিয়ে আসলো, তারপর কোপ দেয়ার আগে ভূতকে জড়িয়ে ধরল (ভাগ্যিস!!) তারপর পিংগুলি অনেক মার খেল আর আমরা ২জন ততক্ষনে পালিয়েছি। নানীবাড়ির ধানের ঘরে লুকিয়ে থাকলাম। আম্মু আমাকে খুজতে শুরু করল মার দেবার জন্য। পরে বড়মামার ঘরের খাটের তলায় লুকালাম, আম্মু এসে খুজল মামামামী বাচালো আমাকে সেদিনের মত।

এরপরের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে আগের দিনের কথা ভাবছি বিছানায় শুয়ে শুয়ে, দেখি আব্বু এসে হাত ধরে আমাকে বাসায় নিয়ে আসলো। আব্বু বেশ গম্ভীর। আমি ভাবলাম আব্বু কখনও কিছু বলে না এইবার কি বলবে আল্লাহই জানে!! আব্বু আমাকে এনে নতুন স্যারের কাছে পড়তে বসায় দিল আর আগের দিনের ব্যাপারে কিছুই বলল না। তবে এরপর থেকে আর কোনদিন এই ধরনের শয়তানি করি নি, হয়তো কিছু বলে নি বলেই আর করি নি। যে ভূতের কাহিনী নিয়ে সবাই চানাচুরকে তেল মারছে ভাবলাম সেটা আমিই লিখি।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।