আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জয় হোক পরিবেশের................../ভাস্কর চৌধুরী

সময়... অনাদি... হতে... অনন্তের... পথে...

বিশ্বেও বিভিন্ন দেশের মতো আমরাও নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পালন করলাম বিশ্ব পরিবেশ দিবস দিনটি। আর পরিবেশের সংঘাতো আমরা শিখেছিলাম সেই প্রাইমারী শিক্ষাতেই। আমাদের চার পাশে যা কিছু আছে তা নিয়েই পরিবেশ। এই পরিবেশই আমাদের বাঁচিয়ে রেখেছে। আমাদের এই ভূখন্ডটিও টিকে আছে পরিবেশের উপর ভর করেই।

বিভিন্ন সময়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করে প্রাকৃতিক পরিবেশ আমাদের বাঁচিয়ে রেখেছে। তাইতো পরিবেশ রক্ষার দায় আমাদেরই। কিন্তু আমাদের চালকের আসনে বসা কর্মকর্তারাই যখন পরিবেশ ধ্বংশের ছারপত্র দেন তখন সভাবতই মনে প্রশ্ন জাগে তা হলে আর পরিবেশ দিবস পালনের প্রয়োজনটাই বা কি? গত জানুয়ারী মাসে বন ও পরিবেশ মন্ত্রনালয়ের ছারপত্র পেয়ে দেশের দশটি জাতীয় উদ্যানের মধ্যে এক বৈশিষ্ট্যময় মিশ্র চির হরিত বর্ষারন্য লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে তেল গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য ভূতাত্ত্বিক জরিপ কাজ শুরু করে ছিল মার্কিন তেল গ্যাস কোম্পানি শেভরন। সম্প্রতি তাদের এই জরিপ কাজ শেষ হয়েছে গত ডিসেম্বরে যখন ঘোষনা দিয়েছিল তারা জানুয়ারী থেকে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে জরিপ কাজ শুরু করবে তখন থেকেই দেশের বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠন এর বিরোধীতা করে আসছিল। জরিপ পরিচালনায় পরিবেশ- প্রতিবেশ সহ উদ্যানের বন্য প্রানীর মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে এই আশঙ্কায় স্থানীয় বন নির্ভর আদিবাসী ও সেখানকার বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষে একাধীক বার মানব বন্ধন পালনের খবর ও আমরা পত্রিকায় পড়েছি।

এমনিতেই দেশের ৮০ শতাংশ বন, বন দস্যু ও বন রক্ষা নামের কিছু বন বকক্ষ কর্মকর্তাদের যোগ সাজশে ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। বনাঞ্চলের গাছপালা তো আমাদের পরিবেশের আভিচ্ছেদ্য এশটি অংশ। বনের সবুজ নির্মল পরিবেশের গুরুত্বও অপরিসীম। গাছপালা আমাদের বেঁচে থাকার জন্য পানি, খাদ্য, ও অক্সিজেনের যোগান দাতা। আর লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানতো শুধু একটি সংবেদনশীল বনই নয়, এটি বিশ্বের দুর্লব আর বিলুপ্ত প্রায় অনেক উদি্‌ভদ ও প্রানীর আবস স্থল।

দেশের বিলুপ্ত প্রায় উল্লুক তাদের শেষ আশ্রয় স্থল হিসাবে বেঁচে নিয়েছিল এই বনাঞ্চলকেই। সম্প্রতি মার্কিন বন্যপ্রানী গবেষক ড·এলিয়ট হাইমফ লাউয়াছড়ার উপর একটি তথ্য চিত্র নির্মান করে গেছেন। এখানে আমার পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তার নিকট সবিনয়ে জানতে ইচ্ছে করছে, আমাদের পরিবেশ বাঁচলে আমরা বাঁচবো। বাঁচবে আমাদের এই ভূখন্ডটি। তবেই তো উন্নয়ন।

আমরা যদি আগেই উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গাত ঘটিয়ে পরিবেশ ধ্বংশ করে দেই তাহলে কিসের উপর ভর করে বাঁচবো আমরা, বাঁচবে এই ভূখন্ডটি। তখন এই উন্নয়ন কি প্রয়োজনে আসবে আমাদের। নাকি ধনী দেশগুলোর বিলাসী জীবনের তেল ও গ্যাসের চাহিদা পূরণের জন্য আমরা আমাদের পরিবেশ প্রতিবেশ ও প্রাণবৈচিত্র্যকে শেষ করে দিচ্ছি। লাউয়াছড়ারই একটি অংশ মাগুরছড়া ও ছাতকের টেংরা টিলার কথা এখনও ভুলে যাই নি আমরা। ১৯৯৭ সালে মাগুরছড়ায় ব্লু আউটের ফলে সৃষ্ট অগ্নিকান্ডে নষ্ট হওয়া পরিবেশ প্রতিবেশ এখনও ফিরে আসেনি।

১৯৯৭ সালের পরিবেশ সরণবিধিমালা ১৯৯৫ সালে বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ও ১৯২৭ সালের বন আইনকে উপেক্ষা করে আমরা যদি উন্নয়নের দোয়াই দিয়ে আমাদের পরিবেশকে হুমকির মধ্যে ফেলে দেই তাহলে পরিবেশ প্রতিবেশ রার নামে কেন এত আইন এত নীতিমালা। আমাদের পরিবেশকে আমাদেরই রক্ষা করতে হবে। তাই আজ এই হোক প্রার্থনা উন্নয়ন ও পরিবেশের সংঘাতে জয় হোক পরিবেশের।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।