অজানাকে জানতে ছুটছি অবিরাম...!
পর্যবেক্ষক
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে করা বার্জ মাউন্টেড স্থাপন সংক্রান্ত দুর্নীতির মামলার আলামতের কিছু গুরুত্বপূর্ণ অংশ উঁইপোকা খেয়ে ফেলেছে। বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ ভবনে স্থাপিত বিশেষ জজ আদালত-১ এ আসামিপক্ষের আইনজীবীরা বিষয়টি আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। আদালত বিষয়টি লিপিবদ্ধ করেছে।
ঘটনা সম্পর্কে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা বলেছেন, এতে তাদের ক্ষতি হয়েছে। আলামতের গুরুত্বপূর্ণ অংশ পোকায় খেয়ে ফেলেছে।
আর রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা বলেন, ওপরের কয়েকটি পৃষ্ঠা পোকায় কেটেছে। এতে আলামতের তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি।
আদালতে মামলার দু’জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। তারা হলেন মামলার রেকর্ডিং অফিসার ও ঢাকার তেজগাঁও থানার এসআই আনোয়ারুল ইসলাম এবং বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা ও মামলার জব্দকৃত আলামতের জিম্মাদার আবদুল হালিম। এর মধ্যে আনোয়ারুল ইসলামের সাক্ষ্য গ্রহণ ও জেরা সম্পন্ন হয়েছে।
আর আবদুল হালিমের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে জেরা শুরু হয়েছিল।
এরপর বিচারক মোঃ ফিরোজ আলম ঘোষণা করেন, আগামী ৩ জুন পরবর্তী শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। ওইদিন আবদুল হালিমকে জেরা এবং অন্য সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হবে।
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা ছাড়া এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন সাবেক বিদ্যুৎ সচিব ড. তৌফিক ইলাহী চৌধুরী, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান নূরুদ্দীন মাহমুদ কামাল, সামিট গ্রুপের পরিচালক মোঃ আজিজ খান, একই প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ফরিদ খান, ইউনাইটেড গ্রুপের পরিচালক হাসান মাহমুদ রাজা, একই গ্রুপের পরিচালক আবুল কালাম আজাদ ও বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের কিউরেটর সৈয়দ সিদ্দিকুর রহমান।
গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশনের উপ-পরিচালক এস এম শাব্বির হাসান সাতজনকে আসামি করে ঢাকার তেজগাঁও থানায় মামলাটি করেন।
১০ জানুয়ারি মামলায় অভিযোগপত্র দেয়া হয়। এ বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে বার্জ মাউন্টেড স্থাপন সংক্রান্ত দুর্নীতির মামলায় চার্জ গঠন প্রশ্নে শুনানি শুরু হয়েছিল। মামলা থেকে শেখ হাসিনাকে অব্যাহতি দেয়ার জন্যে গত ৩ এপ্রিল আদালতে পিটিশন জমা দেয়া হয় এবং ডিসচার্জ পিটিশন বিষয়ে ১০ দিন শুনানির পর আদালত পিটিশনটি খারিজ করে দিয়ে গত ১৮ মে চার্জ গঠন করে।
আদালতের কাজ শুরু হয় সকাল ১০টা ১০ মিনিটে। এর আগে আদালতে উপস্থিত করা হয় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা ও মামলার অপর আসামি সাবেক সচিব ড. তৌফিক ই এলাহী চৌধুরীকে।
গতকাল আদালতে প্রথমে সাক্ষ্য দেন মামলার রেকর্ডিং অফিসার আনোয়ারুল ইসলাম। সাক্ষ্য শেষে আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সৈয়দ রেজাউর রহমান ও অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন তাকে জেরা করেন। এরপর সাক্ষ্য দেন বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের এডিশনাল ডিরেক্টর আবদুল হালিম। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা আবদুল হালিমকে জেরা শুরু করেন।
জেরার সময় অ্যাডভোকেট সৈয়দ রেজাউর রহমান সাক্ষীকে প্রশ্ন করেন, মামলার আলামত পোকায় খেয়ে ফেলেছে।
বিষয়টি জানেন কি? সাক্ষী জানান, বিষয়টি তিনি জানেন না। এ সময় আসামিপক্ষের আইনজীবীরা জব্দ করা ওয়াটসিলা ও নিউ ইংল্যান্ড পাওয়ার কোম্পানির টেন্ডারের কাগজপত্র পোকায় খাওয়ার বিষযটি আদালতকে দেখান।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট এ বি এম শরফুদ্দিন খান মুকুল তখন বলেন, ওপরের কয়েকটি পৃষ্ঠা খেয়েছে। আর সরকারি প্রতিষ্ঠানে এসব কাগজপত্রের কপি আছে। প্রয়োজন হলে আবারো আনা যাবে।
বেলা সোয়া ১টার দিকে আদালত মুলতবি করা হয়।
আদালতের কাজ শেষে আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সৈয়দ রেজাউর রহমান বলেন, এ মামলার গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় অংশ পোকায় খেয়ে ফেলেছে। আলামত জিম্মাদারের জিম্মায় থাকার সময় এ ঘটনা ঘটেছে। মামলায় ওয়াটসিলার যে কাগজপত্র উপস্থাপন করা হয়েছে, তা নষ্ট হয়েছে। এতে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হবো।
অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সৈয়দ শামীম আহসান হাবিব সাংবাদিকদের বলেন, মামলার আলামতের কোনো গুরুত্বপূর্ণ অংশ পোকায় কাটেনি। কেটেছে ওপরের কয়েকটি পৃষ্ঠা। এতে মামলায় কোনো প্রভাব পড়বে না। তিনি আরো বলেন, পোকায় খাওয়ার ঘটনা অস্বাভাবিক কিছু নয়। সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের লাইব্রেরির উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বই পোকায় খেয়ে ফেলেছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।