অতীতকে নিয়ে নস্টালজিক হতে ভালোবাসি, ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখতেও।
আমার সময় এক ঘন্টার কয়েক মিনিট কম, তাই মন খুব তাড়াতাড়ি চিন্তা করতে চাচ্ছে আর হাত আরোও দ্রুত লিখতে চাচ্ছে। এই চেনা খাতার পৃষ্ঠা অনেকদিন উল্টে পাল্টে দেখিনি বলে চোখ তাড়াহুড়ো করে তৃষ্ণা মেটাতে চাচ্ছে। তাই একটা ভাবনা আরেকটার ওপর গড়িয়ে অতীত হওয়া ওয়ার্লড ট্রেড সেন্টারের মতো উঁচু কোথাও থেকে লাফ দিচ্ছে। আর আমি তাদের বাঁচানোর জন্য খুব চেষ্টা করছি, যদিও খালি মনে হচ্ছে এক একটা চিন্তা আস্তে আস্তে হাতের ফাঁক গলে চুপিচুপি মাটি ছুঁয়ে ফেলছে।
তাই একদম প্রথম থেকে শুরু করি, যেন আর একটাও হারিয়ে না যেতে পারে।
১। আগামি বুধবার রস্ট্রাম পাবলিক স্পিকিং কম্পিটিশনের দ্বিতীয় রাউন্ড। বেশ গর্ব হচ্ছিলো, কারন, এই প্রথম পাবলিক স্পিকিং-এ এ পর্যন্ত আসতে পেরেছি। কিন্তু এখন খুব ভয় লাগছে।
পৃথিবীতে তেলাপোকার পর যে জিনিষটা সবচেয়ে বেশি ভয় করি সেটা হচ্ছে লজ্জা। তবুও কোন না কোন ভাবে সেটা আমার পেছনে লেগে থাকার উপায় খুঁজে বের করবেই! বুধবার অচেনাদের মাঝে একবার না একবার হয়তো জিভে গিট্টু লেগে যাবে। বা একটা শব্দ বলতে গিয়ে আরেকটা বলে ফেলবো। গত বুধবার ছিলো শিক্ষক-অভিভাবক দিবস। আমি কেমিস্ট্রির টিচারকে জিজ্ঞাসা করতে গেলাম আমার র্যান্ক কি।
মনে মনে ভাবছিলাম, ক্লাসের র্যান্ক হলে বেশি কিছু বোঝা যাবে না, আরও বড় পরিসর লাগবে।
"So, what would be my ranking in the world?"
"In the world?"
"Oops."
কিছু বোঝার আগেই মুখ থেকে বের হয়ে গেলো, কি করবো?
২। শিক্ষক-অভিভাবক দিবসে আরো অনেক কিছু জানলাম। যেমন, Parent-Teacher Interview এর বাংলা হচ্ছে শিক্ষক-অভিভাবক দিবস। বাংলাদেশে সবাইকে এ দিনে ডাকেনা, শুধু যাদের সমস্যা আছে তাদের ডাকে।
আরও জানা গেলো, আমার সৃষ্টশীলতা (বানানটা ভুল হলো?) 'এভ্যারেজ' (আমার ইংলিশ টিচার ঠিক এ শব্দটা ব্যাবহার করেছে)।
৩। সব সাইকোলজিস্টটা বুদ্ধিমান হয় না।
৪। আমি এখন একটা বই পড়ছি ইংলিশের জন্য।
'"Extremely Loud and Incredibly Close". এই লেখাটা শেষ হলে, একঘন্টা পার হলে, বাঁধ ভাঙার আওয়াজ আবার বাঁধের ভেতর ঢুকে পড়লে, বইটাকে ফেসবুকের ফেভরেট বুকসে ঢোকাতে হবে। এই একটা বই পড়েই বুঝতে পারছি কেন আমার ক্রিয়েটিভিটি 'এভারেজ' হওয়ার উপাধি পেলো।
৫। আজকে একটা জিনিস বুঝতে পারলাম। মেডিসিনে চান্স পাওয়া যত কঠিন হবে ভেবেছিলাম আসলে ঠিক ততটা কঠিন না।
আর যাদেরকে অনেক পাররর-ফেক্ট মনে হতো তারা আসলে ততটা পাররর-ফেক্ট না।
৬। পাররর-ফেকশন নিয়ে একটা গান মাথায় এসেছে। গানটাতে ঠিক এভাবে বলে, ইউ আর পারর-ফেক্ট।
"Stay forever who you are
Don’t change a thing
Cause you’re perfect
You sway, gently in the breeze
In between my dreams
It kinda makes me nervous
You storm, in the lightning striking down
To only strike me once
But still be worth it"
আচ্ছা, একটা মানুষ কিভাবে পারর-ফেক্ট থাকে? কে যেন বলছিলো, যখন কেউ মনে করে তাদের আরও ওপরে ওঠার দরকার নেই, ঠিক তখন থেকেই তারা আস্তে আস্তে পিছলে নিচে নামতে থাকে।
৭। আজকাল কেন যেন আমার পা সবসময় ঠান্ডা থাকে। প্রতিদিন সকালে জুতা মোজা ও সূর্য্যকে সম্বল করে হাঁটা শুরু করি। রাতেও বাসায় মোটা বুট জাতীয় স্লিপার পরে থাকি। তারপর কম্বল দিয়ে আরও শক্ত করে মুড়ে রাখি।
তবুও সারাক্ষন ঠান্ডা হয়ে থাকে। চামড়ার ভেতরে মনে হয় ঠান্ডা-ভুত মজার কিছু দেখতে পেয়েছে। শত টানাটানি করলেও বের হওয়ার নাম নেবে না!
'সাত' এর সাথে ভাগ্যের কি সম্পর্ক জানিনা, তবে দিন, রং ও বামুনগুলো এ সংখ্যাটাকে অন্যদের থেকে একটুখানি আলাদা করে ফেলেছে। তাই সব জায়গায় আজকাল 'সাত' ব্যবহার করি। কালকে মারিসার সাথে অনেক, অনেকদিন পর কথা হলো।
একটুও পাল্টালো না। আমাকে বলে, আমার সাথে কথা বলে ভালো লাগছে, কারন, আমার মতো করে আর কেও কথা বলে না।
আমি: ইস দ্যাট আ গুড থিং অর আ ব্যাড থিং?
সে: ইট মিনস নো ওয়ান ক্যান এভার টেক ইওর স্পট।
এজন্যই মেয়েটাকে এত্তো ভালোবাসি। আর কয়জনের হৃদয়ে পার্মানেন্ট জায়গা নিয়ে বসে আছি? ঐ অল্পসংখ্যক মানুষগুলোর সবাইকেই খুব ভালোবাসি।
আমার আরও অনেক কিছু লিখতে ইচ্ছা করছে। চোখের তৃষ্ণা মেটেনি, তবুও সে ঘুমের ঔষধ খেয়ে ফেলেছে। আর আঙ্গুলগুলো কীবোর্ডের ড্যান্সফ্লোরে নাচতে নাচতে ক্লান্ত পড়ছে। আর ভাবনাগুলো ঘুরতে ঘুরতে পথ হারিয়ে ফেলেছে।
ছবি: ব্যাকইয়ার্ড, ১৬/০৪/০৮।
লেখা: রাম্পাস, বাসা, ৯.৪৫ রাত, ২৩/০৫/০৮।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।