শাহাবুদ্দিন শুভ
স্বাধীনতার পর দেশের সর্বোচ্ছ রাষ্ট্রীয় সম্মান বীরশ্রেষ্ট প্রদান করা হয় দেশের জন্য জীবন দান কারী সাতজন বীর সন্তানকে। যাদের বুকের তাজা রক্তের বিনিময়ে আমরা একটি স্বাধীন দেশ পেয়েছি। তাদের এই আত্মদানের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি একটি স্বাধীন দেশ। আমাদের জন্য তারা দিয়ে গেছেন একটি লাল সবুজের পতাকা। এই সাত বীরশ্রেষ্টের মধ্যে দু’জন চিরনিদ্রায় সমাহিত ছিলেন দেশের বাহিরে।
আর বাকি পাঁচ জন দেশের বিভিন্ন স্থানে। দেশের মানুষের দাবি এবং এই বীর সন্তানদের পরিারেরও দাবী যাতে তাদের কে একত্রিত করা হয়। এবং সেখানে তৈরী করা হবে একটি বীরশ্রেষ্ট কমপ্লেক্স যেখানে লেখা থাকবে আমাদের দেশের এই বীর সন্তানদের অত্মদানের কথা। জনসাধরণের এই দাবিতে আরও মাত্রা যোগ করেছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল মইন উ আহমেদ সাত বীরশ্রেষ্ঠকে একই স্থানে পুনসমাহিত করার জন্য সরকারের প্রতি আহŸান জানিয়েছেন তিনি, যাতে জনগণ এদের সবাইকে একসঙ্গে শ্রদ্ধা জানাতে পারে। তিনি আরও বলেছেন তত্ত¡াবধায়ক সরকারের প্রদান উপদেষ্টার সাথে তিনি আলাপ করে জাতীয় সৃত্মিসৌদের পাশে কোথাও একটি স্থানে সাত বীর শ্রেষ্টকে একত্রিত করা হবে।
এ জন্য যে জাতি যেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পারে।
যেখানে বর্তমান তত্ত¡াবধায়ক সরারের আমলে দুজন বীরশ্রেষ্টকে দেশের মাটিতে এনে সমাহিত করা হয়েছে। তাদের একজন পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশে অন্য জন ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য থেকে। দেশের জন্য বীরত্বের সাথে রক্ত দিয়েও পাকিস্তানের মাটিতে অযতেœ অবহেলায় পড়েছিলেন বীরশ্রেষ্ট ফাইট লেঃ মতিউর রহমান। বর্তমান তত্ত¡াবধায়ক সরাকরের সময়ে তার দেহাবশেষ দেশের মাটিতে ফিরিয়ে আনা হয়।
রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাকে সমাহিত করা হয় নিজের দেশের মাটিতে। যে মাটির জন্য তিনি শত্র“র ঘাটি থেকে বিমান নিয়ে উড়াল দিয়ে ছিলেন।
জাতীয় প্যারেড স্কোয়ারে রাষ্ট্রীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে হামিদুর রহমানের কফিন নিয়ে যাওয়া হয় মিরপুর বুদ্ধিজীবী করবস্থানে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ও তিন বাহিনীর প্রধানদের উপস্থিতিতে তিন বাহিনীর একটি চৌকস দল আবারও গার্ড অব অনার প্রদর্শন করে সেখানে। এরপর লালগালিচা বিছানো পথে ধীর পায়ে সেনাসদস্যরা হামিদুরের কফিন নিয়ে যায় তার জন্য নির্ধারিত কবরের দিকে।
মুক্তিযুদ্ধের আরেক বীরশ্রেষ্ঠ ফাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমানের কবরের উল্টোদিকে হামিদুর রহমানকে শায়িত করা হয়।
তার আগে বর্ণাঢ্য আয়োজনে সেনাবাহিনীর ১০ সদস্যের একটি দল একযোগে ১০টি রাইফেলে তিনবার করে গুলি ছুড়ে ‘গান স্যালিউট’ করে। তারপর তিন বাহিনীর প থেকে মরণোত্তর শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। ফাতেহা পাঠ ও বিশেষ মোনাজাতের মাধ্যমে বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের দাফন সম্পন্ন হয়। মঙ্গলবার কুয়াশাসিক্ত ভোরের সূর্য তখনও আকাশে ফুটে ওঠেনি।
৬টা ১০ মিনিটে কুমিল্লা ৩৩ পদাতিক ডিভিশনের প থেকে কুমিল্লা সেনানিবাসে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সুসজ্জিত কফিনটি মিলিটারি পুলিশের বহরে রওনা করে ঢাকার উদ্দেশে। ৮টা ৫ মিনিটে ঢাকার যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তায় পৌঁছে। সেখানে পুলিশের একটি মোটরসাইকেল বহর যোগ হয়। যাত্রাবাড়ী থেকে কফিনটি নেয়া হয় বঙ্গভবনের সামনে। সেখানে আগে থেকেই ঢাকা সেনানিবাসের একটি টিম প্রস্তুত ছিল।
কুমিল্লা থেকে আসা টিম ঢাকা সেনানিবাসের টিমের কাছে কফিন হস্তান্তর করে ফিরে যায়। ঢাকা সেনানিবাসের টিমের মোটরসাইকেল, পিকআপ ভ্যান, খোলা জিপ সমন্বয়ে মোটর শোভাযাত্রার মাধ্যমে ফুলে ফুলে ঢাকা কফিনটি ৮টা ৩৫ মিনিটে বঙ্গভবন থেকে রওনা করে। বহরটি কাকরাইল, শেরাটন মোড় হয়ে ভিআইপি রোড ধরে চলে যায় ঢাকা সেনানিবাসের এভিয়েশন হ্যাংগারে। এ পথ পাড়ি দিতে যতগুলো জেলা ও থানা অতিক্রম করতে হয়েছে, সংশিষ্ট থানা ও জেলা পুলিশ বীরশ্রেষ্ঠের কফিন বহনকারী মোটরযাত্রাকে এস্কর্ট দিয়েছে। প্যারেড স্কোয়ারে হাজারো মানুষ শ্রদ্ধা আর আকাক্সা নিয়ে অপো করছিলেন সবাই।
এরই মাঝে আকাশ কাঁপানো তোপধ্বনি। বদলে যায় পুরো আবহ। ১০টা ৩২ মিনিটে বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুরের দেহাবশেষ নিয়ে মোটর শোভাযাত্রা প্রবেশ করে জাতীয় প্যারেড স্কোয়ারে।
সেখান থেকে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে জীবন বিসর্জনকারী এই বীরের দেহাবশেষ ৩৬ বছর পর ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য থেকে দেশে এনে ১১ ডিসেম্বর মঙ্গলবার দুপুরে মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে পুনঃসমাহিত করা হয়। সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মান, মুক্তিযোদ্ধাদের গভীর ভালোবাসা, শ্রদ্ধা, আর আবেগে স্বদেশের ভ‚মিতে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান।
তার প্রতি সম্মান জানিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা বললেন, হামিদুর রহমান অমর। দেশের জন্য যারা প্রাণ দেয়, তাদের মৃত্যু নেই। হামিদুর ফিরে এসেছেন তার মায়ের কোলে।
আমরা দেশের সাধারণ জনগণ চাই এই সরকার যেন দেশের এই বীর সাত সন্তানকে একত্রিত করে যান। কারণ স্বাধীনতার ৩৬ বছর চলে গেলেও দেশের রাজনীতিক দল কাজটি করেননি।
কারণ তারা সব সময় নিজেদের নিয়ে ভেবেছেন। কি করে তাদের পকেট ভারি করবেন সারণ এই চিন্তা নিয়ে তেকেছেন এইসব নিয়ে ভাবার সময় কোথায় তাদের। তাই বর্তমান তত্ত¡াবধায়ক সরাকার যদি এই কাজটি করে যান তাহলে ভাল হয়। কারণ পরে হবে কিনা তা নিয়ে আমি সন্দিহান।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।