ভালোবাসার ঊর্বশী বুকে লেখা আছে এক নাম- সে আমার দেশ, আলগ্ন সুন্দর ভূমি- বিমূর্ত অঙ্গনে প্রতিদিন প্রতিরাত জেগে ওঠে তার উদ্ভাসিত মুখ
মা আমার, চির-দুঃখিনী মা যে আমার!
যখন কিশোরী ছিলে তুমি মা-বাবার আদরে
ডুব-সাঁতারে পুকুরে ভাসতে যখন- করতে জলের খেলা
কিম্বা গাছে চড়ে পারতে পেয়ারা আঁচলটা ভ'রে
সারা পাড়া চষে বেড়াতে দারুণ দুষ্টুমিপনায়
ঠিক তখনই পেতেছিলে সংসার-
মা আমার, চির-দুঃখিনী মা যে আমার!
কতোটা পেয়েছো সুখ স্বামীর সংসারে?
কখনো বলোনি তুমি কতো ঘানি টেনেছো জীবনে
ঢেঁকির পিছায় রেখে শক্ত দু'পা কতো রাত করেছো প্রভাত
সকলের উদর-ভোজন শেষে কতোদিন জোটেনি আহার
শ্বশুড় ও শ্বাশুড়ীর মুখকালা উপহাস শুনেছো কতোটাবার
কখনো বলোনি গল্পটি যে তার-
মা আমার, চির-দুঃখিনী মা যে আমার!
নয়-নয়টি সনতান করেছো মানুষ তুমি
নিজের খাবার খাইয়ে ছেলেকে পাঠিয়েছো স্কুলে
জ্বালতে শিক্ষার আলো ক্ষয়েছে জীবনীশক্তি
জঠরের তাপ শুধু তুমিই করেছো অনুভব
করতে পারোনি ভাগ সংসারে অন্যের সাথে
ছিলো ছেলে-মেয়ে বেশি দায়িত্ব অপার-
মা আমার, চির-দুঃখিনী মা যে আমার!
অনেক হয়েছে বড়ো ছেলে-মেয়ে সকলই তোমার
পেতেছে সংসার তারা ভিন্ন পাতে ভিন্ন সঙ্গী নিয়ে
অথচ তোমার কাছের মানুষ জমিয়েছে পাড়ি
চিরকাল থাকবে তোমার যে জীবনে ও মরণে
রাখেনি কথাটি তার বলেছিলো সেই একদিন
সাথী করে আছো তাই একানত আঁধার
মা আমার, চির-দুঃখিনী মা যে আমার!
এ ঘর ও ঘর ঘুরছো তুমি যে আশার প্রদীপ হাতে
একটু নিরালা ছায়া একটু বিশ্রাম দিনান্তের আলো
কী ছেলে কী মেয়ে কেউ জ্বালতে পারেনি তাও
সকলই ঝাপসা লাগে ছানিপড়া চোখেতে তোমার
নিজের জীবন করেছো আঁধার সবার সুখের জন্য
ষাটোর্ধ বয়সী এক মহীয়সী তুমি মা সবার-
মা আমার, চির-দুঃখিনী মা যে আমার!
২১.০৩.২০০৬
**কবিতাটি রিপোস্ট করা হলো। ২০০৬ সালের 'মা দিবস' ছিলো ১৪ মে। এই কবিতাটিই সামহোয়্যারইনব্লগে আমার প্রথম পোস্ট। তখন মা বেঁচে ছিলেন, এখন নেই!
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।