ভালোবাসার ঊর্বশী বুকে লেখা আছে এক নাম- সে আমার দেশ, আলগ্ন সুন্দর ভূমি- বিমূর্ত অঙ্গনে প্রতিদিন প্রতিরাত জেগে ওঠে তার উদ্ভাসিত মুখ
যেদিন শুদ্ধ'র মা চলে গিয়েছিলো সেদিন খুব কেঁদেছিলো সে। সবাই বলেছিলো মা নাকি রাতে বাড়ি ফিরে আসবে। আর আসেনি। সারাদিন শুদ্ধ তার মাকে মীমদের বাসায় খুঁজেছে। অপুদের বাসায়ও খুঁজেছে।
কোথাও পায়নি। এ ঘর ও ঘর করতে যেয়ে একবার উঠোনে পড়ে গিয়েছিলো শুদ্ধ। ইটের সাথে লেগে মাথা কেটে গিয়েছিলো তার। মা'র চিন্তায় অবশ্য খুব বেশি কান্না পায়নি তখন। তবুও সবাই বেশ আদর করেছিলো সেদিন।
মাথায় ঠাণ্ডা পানি ঢেলেছিলো। ডেটলে মাথার কাটা জায়গা মুছে দিয়েছিলো। আর রক্ত পড়েনি কোনও।
শুদ্ধ'র একটি ছোট্ট বোন ছিলো। বয়স আড়াই মাস।
মা'র বুকের দুধ খেতো। সেও খুব কান্নাকাটি করছিলো। কারণ তাকে জোর করে সবাই ফিডারে দুধ খাওয়াতে চেয়েছিলো। শুদ্ধ'র খুব খারাপ লাগছিলো তখন। ভাগ্যিস! সেদিন ছোটো চাচী এসেছিলো।
সেই নাকি বুকের দুধ খাইয়েছিলো তার বোনকে। তারপর ছোটো চাচী পালতে নিয়ে গিয়েছিলো তাকে।
তার বাবা আবার সেদিন ঢাকায় ছিলো না। অফিসের কাজে বাইরে ছিলো। ফিরেছিলো অনেক রাতে।
সাথে অফিসের গাড়ি, অনেক লোকজন। ফিরেই শুদ্ধকে জড়িয়ে ধরে বাবা খুব কেঁদেছিলো। শুদ্ধ অবাক হয়ে গিয়েছিলো। তার বাবাকে কোনোদিন কাঁদতে দেখেনি। আজ কাঁদলো কেন? শুদ্ধ’র আর জিজ্ঞেস করা হয়নি সেদিন।
এরপর পাঁচ বছর হলো। শুদ্ধ'র মা আর ফিরে আসেনি। মা কি মরে গেছে না বেঁচে আছে, শুদ্ধ কিছুই জানে না। বাবাকে জিজ্ঞেস করলে বলে- তার মা নাকি খুব খারাপ। ডাইনী মহিলা।
এজন্য পালিয়ে গেছে। শুদ্ধ বোঝে না মায়েরা কীভাবে খারাপ হয়। মানুষ আবার ডাইনী হয় কীভাবে! এজন্য বাবাকে তার একটুও ভালো লাগে না। তবু কিচ্ছু বলে না শুদ্ধ। কারণ বাবার খুব রাগ।
আর বাবাই তাকে বেশি আদর করে।
শুদ্ধ'র এখন নতুন মা হয়েছে। কিন্তু শুদ্ধ তাকে মা বলে ডাকে না। তার একটি ছোট্ট বোনও হয়েছে। দুই বছর বয়স, বেশ ফুটফুটে।
তাকে ভাইয়া বলে ডাকে। শুদ্ধ তাকে খুব আদর করে। নতুন বোনটিকে দেখে তার সেই আগের বোনটির কথা মনে পড়ে। এভাবে ভালোই কাটছে তার দিনগুলো। কিন্তু নতুন মা যখন বোনকে বেশি আদর করে শুদ্ধ'র খুব মন খারাপ হয়।
তার দুচোখ জুড়ে শুধু কান্না আসে। বাড়ি থেকে চলে যেতে ইচ্ছে করে। আর তার সেই মাকে মনে পড়ে। সে ভেবে পায় না তার মা আসে না কেন!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।