আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

The thankless role in saving democracy in Bangladesh:খালেদা জিয়া

ওয়াসিংটন টাইমসে প্রকাসিত খালেদা জিয়ার লেখা আপনাকে কাদতে হবে.........সেলোকাস বাংলাদেশ নিজের দেশের জন্য অন্যের হস্তখেপ চাওয়া হয়........ শুরু এখান থেকে....... বাংলাদেশের গণতন্ত্র একটি পরিবারের ক্ষমতার বেড়াজালে আবদ্ধ হতে চলেছে। এ দেশের গণতন্ত্র রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রকে জোরালো ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন ও বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া। যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী পত্রিকা ওয়াশিংটন টাইমস-এর মতামত পাতায় একটি লেখায় বেগম খালেদা জিয়া এ আহ্বান জানান। লেখাটি গতকাল বুধবার প্রকাশিত হয়। ওই লেখায় খালেদা বলেছেন, গত পাঁচ বছরে বাংলাদেশ এশিয়ার অন্যতম গণতান্ত্রিক দেশ হওয়ার পথ থেকে সরে এসে এখন কেবল একটি পরিবারের ক্ষমতার বেড়াজালে আবদ্ধ হতে চলেছে।

তিনি বলেছেন, যদি বাংলাদেশ একটি পরিবারের শাসনের অধীনে আটকা পড়ে যায়, তাহলে তা হবে গোটা অঞ্চলের জন্য এক পা পেছনে চলে যাওয়া। তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ভোটারদের সম্মানিত করা হবে-এই কথা বলে চাপ প্রয়োগের সুযোগ রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্র ব্রিটেনের জন্য। এটি নিশ্চিত করতে তাদের কথা এবং কাজকে আরো জোরালো করতে হবে যাতে করে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া থেকে সরে না যায়। তিনি বলেন, দারিদ্র্য দূরীকরণে ড. মুহাম্মদ ইউনূস যে ভূমিকা রেখেছেন তার জন্য মার্কিন কংগ্রেস এবং ব্রিটিশ সংসদকে তার প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখতে হবে। ওয়াশিংটন টাইমস-এ প্রকাশিত মতামত ২০১৩ সাল কি মার্কিন-বাংলাদেশ সম্পর্কের জন্য সন্ধিক্ষণ হতে যাচ্ছে? ১৫ কোটি মানুষের আমার এই দেশ ভারত আর মিয়ানমারের মাঝামাঝি অবস্থিত।

সেই ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছিল অন্যতম দেশ, যারা আমাদের আত্মনির্ধারণের অধিকারকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। অথচ গত কয়েকটি বছরে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কে টানাপোড়েন তৈরি হয়েছে। এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের দিকে অবশ্য আঙুল তোলা যায়। কারণ ক্রমেই বাংলাদেশে গণতন্ত্র মুখ থুবড়ে পড়ছে এবং অন্যান্য বিশ্ব শক্তির দিকে অর্থনৈতিক সম্পর্ক ঝুঁকে পড়ছে, অথচ তারা তেমন কিছু করছে না। তার অর্থ এই নয় যে, মার্কিন সরকার, কংগ্রেস এবং তাদের সংস্থাগুলো কোনোকিছুই করেনি।

ছয় মাস আগে বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতুর প্রকল্পের জন্য প্রায় ২০০ কোটি ডলার প্রত্যাহার করে নিয়েছে। চার মাইল দীর্ঘ এই সেতু ছিল ৪০ বছরে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্রকল্প। বিশ্বব্যাংক এই অর্থ প্রত্যাহারের সময় মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতির তদন্তের দাবি করেছে। একই সময় নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে তার গ্রামীণ ব্যাংক থেকে সরিয়ে দেয়ার কারণে মার্কিন কংগ্রেশনাল ককাস বাংলাদেশ সরকারের বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমালোচনা করেছে। বাংলাদেশের এই ক্ষুদ্র ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানটি লাখ লাখ মানুষকে দারিদ্র্য থেকে মুক্ত করেছে।

ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে সরিয়ে দেয়ার কারণ কী? অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, “এই নোবেল পুরস্কার ভুল লোকের হাতে পড়েছে। যদি বাংলাদেশে কেউ নোবেল পুরস্কার পাওয়ার যোগ্য হন তিনি হলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ” বেশিরভাগ বাংলাদেশী অবশ্য হাসিনার নোবেল পুরস্কার পাওয়ার দাবির ব্যাপারে দ্বিমত প্রকাশ করবে। শুধু জিজ্ঞেস করুন ওই প্রায় ৩০০ নিখোঁজ মানুষের পরিবারকে, যারা বের হতে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে গেছে। অথবা চিন্তা করে দেখুন খুন হয়ে যাওয়া শ্রমিক নেতা আমিনুল ইসলামের পরিবারের কথা।

ওই আমিনুলের পক্ষ হয়ে এখন এএফএল সিআইও সংগঠন প্রচারণা চালাচ্ছে যাতে করে যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যখাতে বাংলাদেশকে তার অগ্রাধিকারের তালিকা থেকে বাদ দেয়। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় নৃশংসতায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ আনা হয়েছে যেসব রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে তাদের সমর্থকরাও হাসিনার নোবেল পুরস্কারের অধিকার নিয়ে প্রশ্ন তুলবে। যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে কেবল রাজনৈতিক বিরোধীদের বিচারের জন্য মার্কিন রাষ্ট্রদূতও হাসিনা সরকারের সমালোচনা করেছেন। গত ডিসেম্বর মাসে ইকোনমিস্ট পত্রিকায় প্রকাশিত ই-মেইল এবং ফোনালাপও প্রমাণ করে, এই বিচারকাজ নিয়ে হাসিনা প্রশাসন কী ধরনের কুকর্ম করছে এবং তারা কীভাবে হাসিনার রাজনৈতিক বিরোধীদের মৃত্যুদ- দেয়ার পাঁয়তারা করছে। গত পাঁচ বছরে বাংলাদেশ এশিয়ার অন্যতম গণতান্ত্রিক দেশ হওয়ার পথ থেকে সরে এসে এখন কেবল একটি পরিবারের ক্ষমতার বেড়াজালে আবদ্ধ হতে চলেছে।

এই অবস্থায় সংবিধান থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতির প্রয়োজনীয়তা তুলে ফেলার পদক্ষেপ নিয়েছে শেখ হাসিনা সরকার। অথচ এই নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের বিধান আনার জন্য তিনি নিজেই একসময় সহায়তা করেছেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান একটি অবাধ এবং মুক্ত নির্বাচনের গ্যারান্টি দিয়ে আসছে। যদি ভোটাররা নতুন কোনো সরকারের জন্য ভোট দেয় তাহলে ক্ষমতার হাতবদল অবশ্যই হতে হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বাতিলের দাবিতে লাখ লাখ মানুষ রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানালেও হাসিনা তার অবস্থানে অটল রয়েছেন।

তার ধারণা, মানুষের সমর্থন না থাকলেও এইভাবে তিনি ক্ষমতায় আবারো আসতে পারবেন। পুনঃনির্বাচিত হওয়ার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বাংলাদেশের প্রতিবেশী বার্মায় সফর করেছেন যা দেশটিকে নির্বাসন থেকে ফিরিয়ে এনেছে। ভারত বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতন্ত্র হিসেবে তার উত্থান অব্যাহত রেখেছে। যদি বাংলাদেশ একটি পরিবারের শাসনের অধীনে আটকা পড়ে যায়, তাহলে তা হবে গোটা অঞ্চলের জন্য এক পা পেছনে চলে যাওয়া। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া নিয়ে এখন আশা বাড়ছে।

কারণ আমেরিকা এই অঞ্চলে স্বাধীনতাকে সমর্থন দিয়েছে। বাংলাদেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার থাকলে মানুষের সুযোগ হবে ব্যালটের মাধ্যমে তাদের মতকে স্বাধীনভাবে প্রকাশ করার। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ভোটারদের সম্মানিত করা হবে, এই কথা বলে চাপ প্রয়োগের সুযোগ রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্র ব্রিটেনের জন্য। এটি নিশ্চিত করার জন্য তাদের কথা এবং কাজকে আরো জোরালো করতে হবে যাতে করে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া থেকে সরে না যায়। দারিদ্র্য দূরীকরণে মুহাম্মদ ইউনূস যে ভূমিকা রেখেছেন তার জন্য মার্কিন কংগ্রেস এবং ব্রিটিশ সংসদকে তার প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখতে হবে।

যদিও শেখ হাসিনাও এই ধরনের স্বীকৃতি পেতে আগ্রহী। শেখ হাসিনার কাছে তাদের পরিষ্কার করতে হবে যে, শ্রমিক সংগঠনগুলো এবং রাজনৈতিক বিরোধীদের মত প্রকাশের সুযোগ না দিলে বাণিজ্যখাতে অগ্রাধিকার প্রত্যাহার করা হবে। সরকারের যেসব লোক গণতন্ত্র, মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং মানবাধিকারকে তোয়াক্কা করছে না তাদের চলাফেরার ওপর পশ্চিমা দেশগুলোকে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে। তাদের এসব প্রকাশ্যেই বলা উচিত যাতে করে সবাই তা দেখতে এবং শুনতে পায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গণতন্ত্র অব্যাহত রাখার যে মিশন নিয়েছে এই পদ্ধতির মাধ্যমে তারা সেই মিশনকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে।

একটি কথা আছে, আইনের আদালতের চেয়েও বড় হচ্ছে বিবেকের আদালত। বিবেকের দায়বদ্ধতা থেকেই এখন বলা অসম্ভব যে, শেখ হাসিনার অধীনে বাংলাদেশে গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার এবং দারিদ্র্য দূরীকরণ নিরাপদ, বরং সেগুলো এখন ভীষণ বিপদের মধ্যে রয়েছে। এখন সময় যুবক নেতৃত্বে বিশ্ববাসীর এগিয়ে আসার, যাতে করে বাংলাদেশে গণতন্ত্র নিরাপদ থাকে। খবরের লিন্ক-------- Click This Link ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।