আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পশু অথবা মানুষ ও র্ধম: কতিপয় বিক্ষিপ্ত ভাবনা।

শুদ্ধতার আগুনে যেন সতত পুড়ি

মানুষ আর জীব-জন্তুর মাঝে পার্থক্য কি? কেবল আকৃতিগত পার্থক্য হলেই কি হলো? বিবর্তনবাদের সূত্রে কি দেখি? দেখি যে, একটি বানর বা হনুমানের আকৃতি পরিবর্তন হতে হতে মানুষে রূপান্তরিত হচ্ছে! তখন মানুষ সবই দীগম্বর! আমরা সেই যুগটির নাম দিয়েছি বর্বর যুগ। অসভ্য যুগ। আদি যুগ। কারণ সেই মানুষেরা লিখতে পড়তে জানতো না। তখন বনের জীব-জানোয়ারের সঙ্গেও তাদের কোনো প্রভেদ ছিলো না।

আস্তে আস্তে তারা সভ্য হতে থাকলো। সভ্যতার পাশাপাশি এলো ধর্ম। কেউ কেউ বলেন যে, বুদ্ধিবৃত্তি ও উন্নত চিন্তার অধিকারী বলেই মানুষ শ্রেষ্ঠ জীব। আসলে কিন্তু তা নয়। মানুষ আর জীব-জানোয়ারের মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে তাদের ধর্ম।

যদিও কেউ কেউ বলেন যে ধর্ম মানুষের সৃষ্টি! সেই বিতর্কে আমি যাবো না। আমার ক্ষুদ্র জ্ঞান বলে যে, ধর্মই মানুষকে জন্তু-জানোয়ার থেকে পৃথক করেছে। একটি কুকুর যদিও একজন আমেরিকান খ্রিস্টানের কাছে অতিশয় প্রিয়। কিন্তু সেও তার প্রিয় কুকুরটিকে নিয়ে গির্জায় প্রবেশ করছে না। একজন হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ যে কোনো ধর্মেরই হোক না কেন সে তার পোষা জন্তুটি নিয়ে তার ধর্মালয়ে যায় না।

তার মানে কি? জন্তু-জানোয়ার ধর্মালয়ে নিষিদ্ধ। তাই নয় কি? মানুষের মাঝেও কিছু কিছু জানোয়ার সদৃশ অতি উন্নত প্রকৃতির মানুষ রয়েছে। ধর্মালয় তাদের কাছে নিষিদ্ধ। না কি কোনো এক অদৃশ্য কারণে তারা ধর্মালয়ে নিষিদ্ধ? যে কারণে তাদের মানসিকতাও গড়ে উঠেছে সেভাবেই? সব ধর্মই বিয়ের কথা বলেছে। ধর্ম সৃষ্টির আগে মানুষের আচরণ ছিলো জানোয়ারেরই মত।

খুবই ছোট বেলা ঢাকার ইআরপি কলোনিতে গাছতলা এলাকায় পুকুরটির উত্তরপাশের বাংলোটিতে যখন থাকতাম, একদিন মাঝরাতে বিচিত্র রকমের ফিসফাস ধ্বণিতে আমার ঘুম ভেঙে গেল। চুপি চুপি উঠে জানালাটা একটু ফাঁক করে দেখি আমাদের খোলা বারান্দায় বেশ কয়েকটি কুকুর একটি কুকুরীকে কেন্দ্র করে ঘুরপাক খাচ্ছে আর নিজেদের ভাষায় ফিসফাস করছে। কুকুরদের মাঝে যদি মানুষের তৈরী বিবাহবন্ধনপ্রথা চালু থাকতো, তাহলে একটি কুত্তিকে কেন্দ্র করে আট-দশটি কুকুর এমন উদভ্রান্তের মত আবর্তিত হতো না। ভাদ্রমাসে কুত্তিগুলোর যৌনাঙ্গ পচেগলে পড়তো না। আমার পছন্দের লেখিকা তসলিমা বলেন, ‘আমি জরায়ুর স্বাধীনতা চাই! যৌন স্বাধীনতা চাই!’ এটা আমার কাম্য নয়।

কাম্য নয় একজন পুরুষেরও বেশ্যালয়ে যাওয়া। দুটোই যৌনবিকৃতির আওতায় পড়ে। আর একজন যৌনবিকৃতির শিকার সে পুরুষই হোক আর নারীই হোক মোটেও কিন্তু সুস্থ নয়! আমাদের তৈরী সমাজ আমাদের শিখিয়েছে সুস্থ জীবন ধারার জন্যে অনেক ক্ষেত্রেই সংযমের অভ্যাস গড়ে তোলার কথা। আর সে কথাই বলা হয়েছে কুরআনুলকরিম-এ। আমরা কতিপয় তা অস্বীকার করতে পারি বা অবিশ্বাস করতে পারি কিন্তু উপেক্ষা করতে পারি না।

কারণ, লাইক ফাদার লাইক সান! কথাটি কিংবা কবিয়ালের ভাষায়- “বাপ ভালা যার পুত ভালা তার/ মা ভালা তার ঝি। / গাই ভালা তার বাছুর ভালা,/দুধ ভালা তার ঘি!” আমরা তখনই হৃদয়ঙ্গম করতে পারি যখন দেখি পিতার উচ্ছৃক্সক্ষলতা পুত্রতে বর্তায়। কিংবা মায়েরটা তার কন্যাতে। চরিত্রহীন পুত্রর কারণে কি বাবা গর্ববোধ করেন? নাকি দুশ্চরিত্রা কন্যার কারণে মা? কোনোটিই না। ওই দু’টি সন্তানের কারণে বাবা-মায়ের মাথা হেঁট হতেই দেখেছি।

কেবল তসলিমার জননী ঈদুল আরা বা তার পিতা ডা: রজব আলির মাথা হেঁট হয়নি। তসলিমার ভাষায়, তার বাবা রাজিয়া বেগমের সঙ্গে শুয়ে থাকা অবস্থায় দেখেছে। দেখেছে রাজিয়া বেগমের জাম্বুরা দুটো। মা ঈদুল আরাকে দেখেছে তার আমান কাকার সঙ্গে গায়ে গা লাগিয়ে বসে থাকতে। কিংবা দরজা বন্ধ করে ঈদুল আরা এবং আমান দুজনে একই ঘরে বসে...।

মাতা-পিতার স্বভাব কন্যাতে বর্তেছে। কন্যাও বন্ধুদের জন্য নিজের জাম্বুরার পসরা সাজিয়ে দ্বারে-দ্বারে, দেশে দেশে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমাদের সুস্থ ধারার সমাজ ব্যবস্থার এমনটি সমর্থন করে না বলেই লুকিয়ে চুরিয়ে পাপে লিপ্ত হয় মানুষ। প্রকাশ্যে পাপ সংঘটিত হওয়া মনে হয় সব দেশেই সমাজে এবং জাতিতে কিছুটা কঠিন। আর তা রক্ষার জন্যেই এত সব কিছুর আয়োজন।

বিধি নিষেধের প্রবর্তন। সেটা সত্য কিংবা মিথ্যা তা কেবল শিক্ষার কারণেই মননে রেখাপাত করতে পারে না। আমার লেখিকা যখন লেখেন, “অশিক্ষিত মানুষের সংস্কৃতি হচ্ছে ধর্ম আর শিক্ষিত মানুষের ধর্ম হচ্ছে সং®কৃতি!” তখন আমার মনে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উদয় হওয়ার কথা যে সং®কৃতি আর ধর্মের মধ্যকার পার্থক্যটা কি? ধর্ম মানে যে কোনো প্রার্থনালয়ে যাওয়া আর “...চোখে পরে নাও কালো অন্ধত্বের ঠুলি যে যত অন্ধ আর তত বেশি বিশ্বাসী বলে নাম বিশ্বাস কর, তাহলেই পেয়ে যাবে রোশনাই। এই বিশ্বাসে চোখ দুটো খুলে ছুঁড়ে দাও ইহকালে আর মগজের সচেতন কোষে তালাচাবি এঁটে দাও। এই তো সাবাস! এখনি তুমি প্রকৃত ঈমানদার!” আর সং®কৃতি মানে কি যথেচ্ছাচার? সেই কারণেই কি কবির চৌধুরী বলেন, “মদ খাওয়া দোষের নয়!” কবি শামসুর রাহমান বলতে পারেন, “পরকীয়া প্রেমে পাপ নেই!” তসলিমা চায় জরায়ূর স্বাধীনতা? তসলিমার এহেন দাবীর প্রেক্ষিতে বলি যে, বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে এখনও কলুবাড়ি বর্তমান।

ছাগী কিংবা গাইগরু গরম হলে তাকে পাঁঠা দেখাতে বা ষাঁড় দেখাতে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপরই ছাগীরা এবং গাভীরা গাভীন হয়। বাচ্চা দেয়। আমাদের দেশে জরায়ূর স্বাধীনতা পাওয়া গেলে তো স্কুলের মেয়েরাও এমনকি আমার মেয়েও বলবে যে, আমি ভারতীয় বা হলিউডের কোনো নায়কের বাচ্চার মা হবো! কিংবা সন্তান জন্মদানে অক্ষম কোনো পুরুষের স্ত্রী স্বামীকে বলবে যে, তোমার বন্ধু বা ভাইয়ের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক করতে দাও! আমি মা হতে চাই! এটাই কি তিনি বোঝাতে চাচ্ছেন না? যার ফলে পিতা হতে অক্ষম স্ত্রীদের জন্য কলুবাড়ির মত ‘শিশুস্বর্গ’ বা ‘বাবাকুটির’ বানাতে হবে। আমেরিকায় বা উন্নত বিশ্বে যেমন শুক্র সংগ্রহের ব্যাংক রয়েছে।

আগ্রহী নারীরা তা সংগ্রহ করে নিজের জরায়ূতে প্রতিস্থাপন করে মা হচ্ছে। আগেই বলেছি যে, আমি অশিক্ষিতের দলে পড়ি। জরায়ূর স্বাধীনতা বলতে এর বেশি বুঝতে পারছি না। এমন কি তসলিমাও যা বলেছেন তা আমার বোঝার পক্ষে যথেষ্ট নয়। সুরাতুন্নুর-এর ৩০ শ্লোকে বলা হয়েছে, “মুমিনদের বলুন তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গের হেফাজত করে।

ফলে তাদের পবিত্রতা রক্ষা হবে। নিশ্চয়ই তারা যা করে আল্লাহ তা জানেন। ” অথচ তসলিমা রসুল (স কে স্বার্থবাদী বলার মত ধৃষ্টতা দেখায়। বলে, “কোটি কোটি বুদ্ধু ইসলামকে টিকিয়ে রেখেছে!” রসুল (স যদি নিজের স্বার্থই দেখতেন তাহলে লোকে তাঁকে বিশ্বাস করার সুযোগে কি বিয়ের কথা না বলে বললে পারতেন না যে, আরবের নারীরা তার সঙ্গে মিলিত হলে সবাই জান্নাতি হবে! (নাউযুবিল্লাহ!) তিনি তা বলেন নি। নিজ স্বার্থের জন্য কাউকে প্রলুব্ধও করেননি।

খাদিজা (রার মত আর কোনো ধনী নারী আরবে ছিলেন না? তাঁর পরিচয় ছিলো “বিশ্বাসী” বলে। রসুলের জন্মের সংবাদ আরবের মেয়েরা জানতেন। তারও আগের ধর্মালম্বীরা জানতে পেরেছিলেন যে, মোহাম্মদ নামের এক পয়গম্বর জন্ম নেবেন। মোহাম্মদ যদি মিথ্যা কিছুরই প্রচার চালাতেন, তাহলে পূর্ববর্তী ধর্মালম্বীরা এখবর জানতে পারতো? অর্থাৎ “যারা পথভ্রষ্ট তারা সত্যের সন্ধান কখনোই পাবে না। ” সত্যের মুখোমুখি হলেও তা বিশ্বাস করবে না।

এমন কি মোহাম্মদ (স এর অঙুলি সংকেতে চাঁদ দ্বিখন্ডিত হলেও না। যাঁরা পথভ্রষ্ট ছিলেন না, তাঁরা জানতে পেরেছিলেন যে আব্দুল্লাহই হবেন মোহাম্মদের পিতা। আব্দুল্লাহর ললাটে জ্বলজ্বল করছিলো নুরেমোহম্মদির চিহ্ন। যুবতীরা পাগলিনী হয়ে উঠলেন আবদুল্লাহকে বিয়ে করার জন্যে। কিন্তু আবদুল্লাহ বিয়ে করলেন আমিনা নামের এক যুবতীকে।

ততদিনে নুরেমোহম্মদি স্থানান্তর হয়ে গেছেন আমিনার গর্ভে। আব্দুল্লাহর ললাট থেকে সেই জ্যোতিও উধাও। আব্দুল্লাহ তখন প্রস্তাব দিলেন যুবতীরা কে কে বিয়ে করবে এসো। কোনো যুবতী রাজী হলেন না। কারণ তাদের উদ্দেশ্য ছিলো নুরেমোহম্মদকে গর্ভে ধারণ করা।

আবদুল্লাকে বিয়ে করা ছিলো উপলক্ষ্য মাত্র। ২ এই যে পহেলা বৈশাখ এলে পাগল হয়ে উঠি। আনন্দে আত্মহারা হয়ে উঠি। রমনার বটমূলে মানুষের ভীড়ে হারিয়ে গিয়ে অসাধারণ ভালো লাগায় আচ্ছন্ন হয়ে যাই। বাঙালীয়ানার গর্বে শরীর মন সবই রাঙাই।

এটা কি? সং®কৃতি? আসলে এটা এসেছে হিন্দুদের ধর্মের একটি অংশ হিসেবে। চড়ক পূজার অংশ হিসেবে চড়ক মেলা হয়। চৈত্রসংক্রান্তি থেকে চৈত্রমাসের মেলার আয়োজন হয়। বৈশাখী মেলাও এসেছে এভাবেই। এটা কোনো সং®কৃতির অংশ নয়।

ধর্মের অংশ। পূজার সময় মেলাগুলো হতো। তা থেকেই চলে এসেছে। মঙ্গলপ্রদীপ, দেয়ালী বা হোলি কোনো সং®কৃৃতির অংশ নয়। পূজার অংগ।

যে কারণে কবির চৌধুরীরা, তসলিমারা, শাসুররাহমান, বেলাল চৌধুরীরা মঙ্গলপ্রদীপ জ্বালিয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। অথচ ধর্ম বিশ্বাস করেন না। আল্লাহ, ঈশ্বর বা ভগবান মানুষের সৃষ্ট বলেই আমার প্রিয় লেখিকা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে তার ঈশ্বর বানিয়ে নিয়েছেন। যদিও তিনি আল্লাহ বা ধর্ম বিশ্বাস করেন না তবুও তার একজন ঈশ্বর আছেন। কী আশ্চর্য! তিনি একজন নাস্তিক বলে আত্মপ্রচার চালান অথচ অশিক্ষিত মানুষেরা মসজিদ-মন্দির ভাঙলে ব্যথিতা হন।

এও কি আশ্চর্যজনক নয়? এই যে চিন্তার বৈপরীত্য, তা কেন? আমি আল্লাহ বা ঈশ্বর, ভগবান বিশ্বাস না করলে কেন পছন্দ মত ঈশ্বর বানিয়ে নেবো? এটাও আরেকটি বৈপরীত্য নয়? তাহলে আবু জেহেলের দেবতা হোবলের কী অপরাধ? কেন রাজা গৌর গোবিন্দের মন্দিরের চূড়া আল্লাহু আকবার ধ্বণিতে ভূলুন্ঠিত হয়? তা কি কেবলই জনশ্র“তি? না কি কেউ মন্দিরের চূড়ায় উঠে গিয়ে কর্মটি ঘটিয়েছিলো? ধর্ম না মানলে কেন তিনি রুদ্রকে বিয়ে করেছিলেন? কেনই বা ছাড়াছাড়ি হলো? নইমকে কেন বিয়ে করেছিলেন? কেন বিয়ে ছাড়া একত্রে বাস করতে পারলেন না? আসলে মুখে মুখে অনেক কিছুই বলা যায়। অবিশ্বাসও করা যায়। কিন্তু মননের গহন অন্ধকারে বিশ্বাসের যে প্রদীপ টিমটিম করে জ্বলছে তা অস্বীকার করতে পারেন না। পারেন না তা এক ফুৎকারে নির্বাপিত করতে। যে কারণে ঈদের দিন প্রিয়জনেরা তার খোঁজ না করলে মনোকষ্টে ভোগেন।

ঈদ কেন আমাদের সং®কৃতির অংগ হতে যাবে? ঈদ ইসলাম ধর্মের একটি অংগ। বছরে দুটো ঈদ আসে মুসলমানদের জন্য। বারোমাসে তের পার্বণ হিন্দুদের জন্য। বৌদ্ধদের জন্য মাঘীপূর্ণিমা। খ্রিস্টানের জন্য বড়দিন।

নবান্ন উৎসব আমাদের সংস্কৃতির অংগ নয়। ধর্মীয় রীতি! ফসলের দেবতা বা শস্য-সম্পদের দেবী লক্ষ্মী কিংবা বোঙ্গার তুষ্টির জন্যে ফসলকাটার শেষে নতুন ধানের চালে পায়েস তৈরী হতো। সেটা তৈরী হতো দেবী বা দেবতাদের ভোগে দেবার জন্যে। ক্রোধ বা বিষোদগার কিন্তু অবিশ্বাসের পর্যায়ে পড়ে না। তা কোনো প্রমাণও বহন করে না।

বাবা-কিংবা মা আমাকে হারামজাদা বলে গাল দেওয়ার অর্থ এই নয় যে আমার জন্ম কোনো গণিকালয়ের গণিকার গর্ভে বা আমার পিতা-মাতা জানেন না যে, আমার জন্মদাতা কে? এগুলো সবই ক্রোধ বা রাগের বহি:প্রকাশ। তসলিমার সবই রাগের কথা। রাগলে মানুষ অনেক কথাই বলে। তাই বলে সব কথা ধরলে চলে না। ধর্ম তিনি বিশ্বাস করেন না।

অথচ তালাকের পর একশত তিনদিন (তিনমাস তেরদিন। ) যৌন সম্পর্ক থেকে বিরত থাকার বিধানের কথা স্বীকার করেন বিশ্বাসও করেন। কী বিচিত্র মানসিকতা! শরৎচন্দ্রের একটি লেখার কথা মনে পড়ছে। তিনি লিখেছিলেন যে, লেখক মরলে কুকুর হয়ে জন্ম নেয়। কিংবা কুকুর মরে গিয়ে লেখক হয়ে জন্ম নেয়।

কথাটাতে কিন্তু একবর্ণও মিথ্যে খুঁজে পাই না। যেসব লেখক বা লেখিকার স্বভাবে কুকুর বা কুকুরীর পুরো স্বভাব পরিস্ফুট না হয়ে উঠবে, ততদিন সে লেখক বা লেখিকা হিসেবে সাহিত্য জগত আলোকিত করতে পারে না। আমিও বিশ বছরের অধিক কাল ধরে কুকুর হয়ে উঠতে নিরন্তর চেষ্টা চালাচ্ছি। কিন্তু পারছি না! তা ছাড়া জন্তু জানোয়ারের মত কাল কাটানো কি সং®কৃতি? আমি অবশ্য ততটা বুঝতে পারি না। কারণ আমিও অশিক্ষিতের দলেই পড়ি।

তবে একটি কথা যে, শুকর একটি প্রাণী এবং মদ একটি পানীয়। কিন্তু যাদের ধর্ম আছে অর্থাৎ তথাকথিত সং®কৃতিসেবীদের ভাষায় আসমানী নয় মানুষের তৈরী ধর্ম হিন্দু-খ্রিস্টান-ইসলাম ধর্মগুলোতে এই প্রাণীটির মাংস খাওয়ার কথা না করা আছে। খ্রিস্টান ধর্মে এবং ইসলাম ধর্মেও মদের উপর নিষেধাজ্ঞার কথা বলা আছে। আমি একটি জিনিস দেখেছি যে যারা ওই দু'টো নিষিদ্ধ জিনিস আহার বা পান করে কালক্রমে তাদের চেহারা আর জন্তু-জানোয়ারের চেহারায় কোনো অমিল খুঁজে পাওয়া যায় না। কোরিয়ান, চায়নিজ, ফিলিপিনো, নেপালী, গারো-চাকমা এরা মদ এবং শুকরের মাংসের ভক্ত।

তাদের চেহারা আর মদ-শুকর বর্জনকারীদের চেহারা ভিন্ন। আমি সৌদিআরবে এসে লক্ষ্য করেছি যে ধর্মান্তরিত মুসলিম ফিলিপিনো, কোরিয়ান, চায়নিজ, গারো চাকমা, নেপালীদের চেহারায় কিন্তু পূর্বেকার সেই ছাপটি দিনদিন কমে যেতে থাকে। এত ব্যাপক ভাবে অন্যান্যদের মত চোখে পড়ে না। একটু ভালো মত খেয়াল করুন! আরেকটু খেয়াল করুন, এটা কোনো ধর্মের কথা নয় যে, ব্যভিচারী-নারী পুরুষের চেহারায় কোনো কমনীয়তা থাকে না। দেখতে বূপবান বা রূপবতী হলেও চেহারায় কেমন যেন একটি মলিনতা একটু নোংরামী, চাল-চলনে খানিকটা অশ্লীলতা ফুটেই থাকে।

কিন্তু ব্যভিচার ইসলাম তো দূরের কথা, মানুষের সৃষ্ট কোনো ধর্মই সমর্থন করে না। কেন করে না? তার একটিই কারণ মানুষ আর জীব-জানোয়ারের প্রভেদ। তা না হলে আমাদের বিখ্যাত লোকজন প্রেমিক-প্রেমিকা নিয়ে ভিন্ন এলাকায় গিয়ে বা হোটেলে গোপনে মিলিত হতো না আমার প্রিয় লেখিকা তসলিমা তার ‘দ্বিখন্ডিত’ গ্রন্থে ইমদাদুল হক মিলনের সঙ্গে ব্যাভিচারের কথা উল্লেখ করেছেন। ব্যাভিচার কারীরা নিজের স্ত্রী বা স্বামীর সামনেই সেই অবৈধ মিলনগুলো ঘটাতে পারতো। অথচ বৈধ-অবৈধতার কারণেই দুজন বিবাহ সম্পর্কহীন নারী-পুরুষ একটি ঘরে ঢুকে দ্বার রুদ্ধ করলে সবাই প্রশ্ন করেন? কেন? মেয়ে যখন স্বামী নিয়ে পাশের ঘরে রাত্রি যাপন করে কিংবা ছেলে যখন পাশের ঘরে বউ নিয়ে রাত্রি যাপন করে অথবা ছেলে-মেয়েরা যখন আড়ালে তাদের স্বামী-স্ত্রীর সঙ্গে গুজুরগুজুর-ফুসুরফুসুর করে তখন কেউ প্রশ্ন করে না যে, তোমরা এখানে কি করছো? বা তাদের সন্তান হলে কেউ প্রশ্ন করে না যে কে তাদের বাবা? কেন? এটা হচ্ছে সমাজ।

এবং এসব সামাজিক রীতি-নীতি মানুষের সৃষ্ট। লোকায়ও মানুষের তৈরী। জঙ্গলে কি মানুষ থাকে? থাকে! কিন্তু তাদের কি বলে? জঙলী! মানুষ নয়! আবার বলি আমাদের মাঝে যারা অতিশয় বিদ্বান (ড: মুহম্মদ শহিদুল্লাহ ছাড়া। কারণ তিনি ইসলাম ধর্মের অনুসারী ছিলেন। ) তারা বলছেন যে, অশিক্ষিত মানুষের সং®কৃতি হচ্ছে ধর্ম! কিন্তু খুবই দুঃখ নিয়ে বলতে বাধ্য হচ্ছি যে, সং®কৃতি বলতে তথাকথিত শিক্ষিত মনিষীরা আসলে কী বোঝাতে চাচ্ছেন? আর তা যদি হয় ব্যভিচার, লাম্পট্য, মাতলামো, নারী-পুরুষের অবাধ যৌনাচার তাহলে কথা নেই! কিন্তু অপ্রিয় হলেও সত্য যে, আমি যদি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধান কখনো হই, কথা দিচ্ছি যে, অবশ্যই দু’টি সরকারি বেশ্যালয় প্রতিষ্ঠা করবো।

যেখানে পুরুষদের জন্যে একটি এবং নারীদের জন্যে একটি ব্যবস্থা থাকবে। সেখানে মোটা বেতনে পুরুষ এবং নারী যৌনকর্মী নিয়োগ করবো। তবে সেই সঙ্গে এও চিহ্নিত করার ব্যবস্থা থাকবে যে, কারা কারা এখানে একটিবারের জন্য হলেও এসেছে! ডাটা ব্যাঙ্কে সংরক্ষিত থাকবে তাদের ছবি এবং পরিচয়। পরিচয় মিথ্যা হলেও তদন্তে বেরিয়ে আসবে মূল সত্যটি। এতে একটি সুবিধা হবে এই যে, বাংলাদেশীরা তাদের ভষ্যিৎ স্বামী বা স্ত্রীদের সম্পর্কে আগাম জানতে পারবেন যে, তাদের ভাবী স্বামী-স্ত্রীদের মধ্যে কোনো ধরনের যৌনবিকৃতি ছিলো কি না! আমার আরেক নাস্তিক কবি লিখেছেন যে, “গলা পিচের মতোন গলে যাচ্ছে মুহূর্ত, সময় / গলে যাচ্ছে নারী আর শিশুদের অনাবিল বোধ / মানুষের মৌলিক বিশ্বাস, গলে যাচ্ছে ভালবাসা-/ আমি ফেরাতে পরি না সভ্যতার অবিরল ক্ষতি; / আত্মমনের ক্লেদ, জলে ভাসা পুষ্পের সংসার, / শিশুর মড়ক, আমি ফেরাতে পারি না মহামারি/ ভ্র“ণ হত্যা, অন্ধকারে জ্বলজ্বলে হননের হাত...” আসলে রুদ্র কেন পূর্ববর্তী কোনো জাতিই যেমন সামূদ, রাদ, বনি ইস্রাইল কেউই পারেনি ফেরাতে- বিধাতার অমোঘ বিধান।

এটা তত কষ্টকল্পিত নয় যে, স্রষ্টা যখন কুরআনে বলেন, “আমি যখন কারো হৃদয়ে মোহর মেরে দেই, কারো সাধ্য নেই তাকে স্বধর্মে বা সুপথে ফিরিয়ে আনে। ” শয়তান আল্লাহর সৃষ্টির মাঝে সবচেয়ে বেশি শিক্ষিত। এবং অতিরিক্ত জানার কারণেই তার ভেতর যুক্তি-তর্কের উম্মেষ ঘটেছে। অহংকারী হয়ে উঠতে পেরেছে। তাই সে নিজে আগুনের তৈরী হয়ে মৃত্তিকা নির্মিত আদমকে সামনে রেখে মাথা নত করতে চায়নি।

তেমনি আমাদের তথাকথিত মনিষীরা বেশি জানার কারণে শয়তান হয়ে গেছেন। কুরআনে আছে, ‘তোমরা সীমা লঙ্ঘন কোরো না। ” কিংবা ”খুব বেশি জানতে চেয়ো না, আল্লাহর সম্পর্কে খুব বেশি জানতে উৎসাহিত হয়ো না। ” তখন কি মনে হয়? মনে হয় কি আল্লাহ মানুষের সৃষ্ট? গণিতে যেমন শুন্য ছাড়া সংখ্যার শুরু হয় না, তেমনি সৃষ্টিতত্ত্বেও দেখা যায় যে অপার শূন্যতা থেকেই সব কিছুর উৎপত্তি। আর এই অপার শূন্যতাই হচ্ছেন তিনি, যিনি আমাদের শিক্ষা দেন- “যে আল্লাহকে ভয় করে, তিনি(আল্লাহ) তার(বান্দার) জন্য নি®কৃতির পথ বের করে দেন।

” ৩ ...চোখে পরে নাও কালো অন্ধত্বের ঠুলি... তুমি প্রকৃত ঈমানদার!” কথাটি যে কতটুকু সত্য তা কবিরই অজানা। নাস্তিক কবি জানতো কি না জানি না যে, পৃথিবীতে এ পর্যন্ত একলক্ষ চব্বিশ হাজার বা দুইলক্ষ চব্বিশ হাজার নবী-পয়গম্বর এসেছেন। এবং তাদের প্রত্যেকেই ছিলেন অশিক্ষিত। কেন? এর একটি মাত্র কারণ যে, শিক্ষিত হলে তাঁদের যা শিক্ষা দেওয়া হবে বা যা বলা হবে তা জানার পর তারা যুক্তি তর্কের অবতারণা করবে। যা শিখেছে তা হুবহু পৌঁছাবে না মানুষের কাছে।

হয়তো বা নিজের কিছু যুক্তিও মিশিয়ে দেবার সম্ভাবনা অস্বীকার করা যায় না। একজন অশিক্ষিত মানুষ কবিয়াল হতে পারে না বা কবি হতে পারে না। সে পারে প্রশ্ন করতে। আরজ আলির মত মূর্খ মানুষ যখন প্রশ্ন করে যে, আল্লাহ কে? একজন শিক্ষিত মানুষ সেই প্রশ্নটা কখনোই করে না। কারণ আল্লাহ সম্পর্কে সে কম বা বেশি কিছুটা হলেও পড়েছে বা শুনেছে।

আরজ আলি মাতব্বর একজন মূর্খ মানুষ। নিজের অজ্ঞানতা বশত: প্রশ্নগুলো সে করেছে। মূর্খতা কোনো দার্শনীকতা নয়। কাজেই মূর্খ আরজ আলি যদি দার্শনিক হয়ে উঠতে পারে তাহলে বেলাল চৌধুরীরা কেন মূর্খ হবে না? লিখতে পড়তে পারলে তাকে আমরা স্বাক্ষর বা অক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন বলি। কিন্তু শুধু লিখতে পড়তে পারার যোগ্যতার কারণে কাউকে আমরা শিক্ষিত বলতে পারি না।

আর তাই একজন মূর্খ মানুষ আরজ আলি মাতুব্বর অক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন কতিপয় নরাধমের দৃষ্টিতে দার্শনিক হয়ে উঠতে পারে। আর শিক্ষিত ড: মুহম্মদ শহিদুল্লার মত উচ্চজ্ঞানসম্পন্ন মানুষেরা মূর্খ হয়ে যেতে পারেন। আমি আশ্চর্য না হয়ে পারি না যে, স্রষ্টার মহিমা সম্পর্কিত এতসব দৃষ্টান্ত থাকার পরও তারা কেমন করে তা অস্বীকার করতে পারে? ইসলাম ধর্মে এমন কিছু নিয়ম আছে যে, আল্লাহকে অস্বীকারকারীকে বা আত্মহত্যাকারীকে, বেশ্যাকে জানাজা দেওয়ার নিয়ম নেই। তাদের মৃতদেহ মাটিতে কবর না দিয়ে কোনো বাক্সে রেখে দেওয়া উচিত। কারণ, রুদ্রকে যখন কাফন জানাজা দেওয়া হয় তখন তসলিমা ব্যথিত হন।

দৌলতদিয়া বেশ্যাপল্লীতে গেলে জানাজা না দিলে কি হয় কেন তারা মৃত্যুর পর সৎকারের জন্য আন্দোলন করেছিলো? তা কি কেবলই ধর্মীয় বিশ্বাসবোধ থেকে? নাকি অন্য কিছু? যে কারণে আন্দোলন করে সরকারী ভাবে তাদের মৃত্যুর পর জানাজা দেওয়ার ব্যবস্থা তারা করে নিয়েছে। কেন এটা করেছে? শামসুর রাহমান বা বেলাল চৌধুরীরা তা জানতে কখনো আগ্রহ প্রকাশ করেনি। বাংলাদেশের সরকারের কাছে আমার একটি আবেদন থাকবে যে, কোনো স্বঘোষিত নাস্তিকের মৃত্যু হলে তাকে যেন জানাজা বা তার ধর্মানুযায়ী সৎকার না করে মাটিচাপা দেওয়া হয়। আইন করে সেটা কয়েক দিন, সপ্তাহ বা মাস বছরের জন্য নিষিদ্ধ করে দেওয়া উচিত। তখন সেই মৃত আত্মা তার বন্ধুদের কাছে ফিরে আসে কি না বা জীবিত সেই সব নাস্তিকেরা বন্ধুর মৃতদেহের জানাজা বা সৎকারের জন্য অনুরোধ নিয়ে আসে কি না তারও একটি পরীক্ষা হয়ে যাবে।

একটি প্রবাদ আছে যে, “হাতি চলে তো বাজার, কুত্তা ভুখে হাজার!” তার মানে হাতি পথ চলতে গেলে পেছন থেকে অনেক কুকুরই ঘেউঘেউ করে। তাই বলে হাতির চলা বন্ধ হয়ে যায় না। তেমনি নাস্তিকেরা যতই ঘেউঘেউ করুক না কেন, ধর্মের কোনো ক্ষতি হবে না। আমরা জানি ধর্মের ঢোল আপনিই বাজে। কাজেই ধর্মপ্রাণ মানুষ এমন দু’চারজন নাস্তিকের কথায় আপন ধর্মের মুখে কখনোই থুতু দিতে পারে না।

পারে না নিজের স্ত্রী কন্যাকে যৌন স্বাধীনতা বা জরায়ূর স্বাধীনতা দিতে। এটি একটি বিকৃতি। বেশ্যালয় যেমন আমাদের সমাজের একটি বিকৃতি, তেমনি নাস্তিক্যবাদও কতিপয় মানুষের একটি মানসিক বিকৃতি। ধর্ম যেমনই হোক না কেন, তার প্রতি মানুষের বিশ্বাস যদি মননের গভীরে প্রোথিত না থাকে তাহলে সে কখনোই ধার্মিক হতে পারে না। কোরআনে উল্লেখ করা আছে যে রসুল(সা এর পর আর কেউ নবুয়ত প্রাপ্ত হবেন না।

রসুল (স এর মাধ্যমে ইসলাম পূর্ণতা পেলো। অন্যান্য ধর্মর অস্তিত্ব বিলুপ্ত ঘোষনা করা হলো। একমাত্র প্রতিষ্ঠিত ধর্ম ইসলাম। এ কথা সব ধর্মের নেতা-সর্দার-ইমাম-গুরু-যাজক জানেন। তবুও কেন নিজেদের বাতিল ধর্ম আঁকড়ে পড়ে আছেন? একটিই মাত্র কারণ, তা হলো বিশ্বাস।

বিশ্বাসটি মননের যতটা গভীরে প্রোথিত থাকবে তা থেকে মানুষটি সরে আসতে ততটাই ব্যথিত হবে। যে কারণে সত্য জেনেও আবেগের বশে বিচ্যুত হতে পারছে না নিজের বিশ্বাস বোধ থেকে। “আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া আর কোনো উপাস্য নেই!” একমাত্র ইসলাম ধর্মই এ কথা ঘোষনা করেছে। তা ছাড়া পৃথিবীতে এমন কেউ নেই যার কাছে আমরা মথা নত করতে পারি। কাজেই ধর্ম সত্য হোক আর মিথ্যা হোক, তা মানুষের সৃষ্ট হোক আর আল্লাহর তরফ থেকে প্রেরিত হোক বা না হোক তা মানুষেরই জন্যে।

কোনো জন্তু-জানোয়ারের জন্য নয়। এবং যত মসজিদ-মন্দির-গির্জা-প্যাগোডা-গুরুদুয়ারা সবই মানুষের জন্যে। কিছু কিছু বিভ্রান্ত মানুষ সেখানে যায় না। কারণ তারা চিন্তায়, বিশ্বাসে ও কর্মে মানুষের পর্যায়ে পড়ে না। তারা পশুরও অধম! বি: দ্র: (এ লেখার উদ্দেশ্য কাউকে দুঃখ দেওয়া কিংবা ছোট করা নয়।

)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।