আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হিট স্ট্রোক থেকে সাবধান !

leo_abdullah@yahoo.com

গরম দিনেও ঠান্ডা থাকুন শুরু হয়ে গেছে গ্রীষ্মের দাবদাহ। বৈশাখের কাঠ ফাটা রোদে মৃদুমন্দ হাওয়াও হয়ে গেছে কৃপণ। ফুরফুরে বাতাস কোথায়? বদলে রোদের তাপে পুড়ছি দিনের বেলায় বাইরে বেরুলেই। ঘরেও কি খুব একটা আরাম আছে? এই গরম দিনে দিনে বাড়বে বই কমবেনা। ঠান্ডা থাকার বিষয়টা এখন যতটা না আরামের ব্যাপার তারচেয়ে বরং যেন জীবন বাঁচানোটাই মূখ্য হযে দাড়িয়েছে।

গরম দিনের রোগবালাই গুলো সহজেই এড়াতে পারি আমরা। সাধারন কিছু পূর্ব প্রস্তুতি আর আপনার শরীর কি বলতে চাইছে তা বুঝতে পারলে যেমন গরমের ফলে প্রচন্ড ক্লান্তি এবং হিট স্ট্রোক - এই জাতীয় নানান সমস্যা থেকে দুরে থাকা যাবে। গরমের কারনে অসুস্থ হলে সেটাকে বলে হিট স্ট্রোক। হিট স্ট্রোক খুব একটা দেখা যায়না। এর ফলে দেহের কুলিং সিস্টেম বন্ধ হয়ে যায়, ঘাম হওয়া বন্ধ হয়ে রক্তচাপ কমে যায়।

হিট স্ট্রোক ছাড়াও গরমে আপনি ক্লান্ত ও দুর্বল হয়ে পড়তে পারেন আপনি। কিভাবে বুঝবেন? মাথাব্যাথা, ভেজা ভেজা ধুসর ত্বক, মাথা ঝিমঝিম করা, বমি-বমি ভাব এবং হালকা জ্বর। তবে এগুলোর কেবল দু-একটি লক্ষণ দেখা গেলে সেটা সিরিয়াস কোন ব্যাপার না। অবশ্য বাড়াবড়ি রকমের পর্যায়ে চলে গেলে যত দ্রুত সম্ভব ডাক্তারের শরনাপন্ন হন। আজকের টিপসগুলো মূলত ডাক্তারি উপদেশ, সাথে রয়েছে করণীয় এবং অকরণীয় বিষয়ে কিছু সাধারন নির্দেশনা।

তরলেই বাচুন দেহকে ঠান্ডা রাখার আদর্শ উপায় হলো পানি। ডিহাইড্রেশনের মাধ্যমে প্রয়োজন মতো তরল নিয়ে দেহে ঘাম তৈরী হয় আর ঠান্ডা হয় শরীর। তাই যত বেশী পানি খাবেন গরমকে জয় করতে পারবেন তত বেশী। তেষ্টা পাবার অপেক্ষায় থাকবেননা। যতক্ষনে তৃষ্ণার্ত হবেন ততক্ষণে হয়তো ডিহাইড্রেশন শুরু হয়ে গেছে।

 বাইরে থাকাকালীন যে কোন কাজের শুরুতে এবং কাজের সময় পান পান করুন।  সারা দিনই ধরে প্রয়োজনে প্রতি ঘন্টায় দেহে তরলের অভাব পুরণ করুন।  কফি বা অ্যালকোহল জাতীয় ডৃংক পরিহার করে চলুন। এগুলো দেহকে আরো বেশী শুষ্ক করে তোলে।  শ্যুগার সমৃদ্ধ বেভারেজ পরিহার করে চলুন, এগুলো পেশীতে ব্যথা এবং অবশের অনুভুতি তৈরী করে।

খরগোসের মত খান অল্প করে খান এবং হাই প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার এড়িয়ে চলুন। প্রোটিন হজম করতে বেশী এনার্জির দরকার হয়। এর ফলে দেহের রাসায়নিক কার্যক্ষমতা বেড়ে যায়, তার ফলে বাড়ে দেহের তাপ। এর বদলে পানি সমৃদ্ধ ফল ও সবজির দিকে নজর দিন। এগুলো হজম করা সহজ আর দেহ শুষ্ক হওয়া থেকেও বিরত রাখবে।

 টমেটো, তরমুজ, শসা, পাকা পেপে এবং অন্যান্য সীজনাল খাবার বেশী করে খান।  মাংস, মাখন ও তৈলাক্ত খাবার ছেটে ফেলুন খাদ্যতালিকা থেকে। বয়সের কথা খেয়াল রাখুন তাপের প্রভাব বেশী পড়ে পঞ্চাশোর্ধ ব্যক্তিদের উপর। আবহাওয়ার পরিবর্তন বয়স্ক ব্যাক্তিদের উপর প্রতিক্রিয়া করে বেশী কারণ তাদের শরীর তরুণদের চেয়ে কম ঘামে। বাচ্চারাও তাপের প্রভাবে অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে।

 যতটা সম্ভব তাপ এড়িয়ে চলুন। এয়ার কন্ডিশন্ড স্থানে থাকুন। এয়ার কন্ডিশনিং এর ব্যবস্থা না থাকলে এমন কোন জায়গায় সময় কাটান যেটা অপেক্ষাকৃত ঠান্ডা।  অতিরিক্ত তাপমাত্রায় ফ্যানের ওপর ভরসা করবেননা। এটা এক অর্থে গরম উনুনের উপর বসে থাকার মতই ব্যাপার।

ঠান্ডা থাকুন দিনের বেলা সূর্য্যের তাপমাত্রা যখন উঞ্চ থেকে উঞ্চতর হচ্ছে আপনার সাবধান হবার সময় এটাই। সকাল দশটা থেকে বিকাল চারটার পর্যন্ত খোলা সূর্য্যরে নিচে থাকাকে সীমিত রাখুন।  এমন ধরনের পাতলা এবং হালকা রংয়ের পোশাক পড়–ন সূর্যরশ্মি যাতে প্রতিফলিত হয় এবং আপনার ত্বককে রাখে ঠান্ডা।  সানস্কৃন জাতীয় কৃম বা লোশন ব্যবহার করুন, এমনকি পোশাকের নিচেও। মনে রাখবেন পাতলা কাপড় একদিকে যেমন আপনাকে ঠান্ডা রাখে তেমনি অন্যদিকে সূর্যের আলো থেকে নিরাপত্তাও কমিয়ে দেয়।

 নিয়মিত বিরতি নিন। ছাউনি দেয়া কোন স্থানে চলে যান এবং আপনার হার্ট রেট চেক করে নিশ্চিত হন এটা দৌড়াচ্ছেনা।  ক্যাপ বা ছাতা ব্যবহার করে নিজের জন্য ছাউনি তৈরী করুন।  তাপের সাথে বীরত্ব দেখাতে যাবেননা। যদি মাথা ঝিমঝিম করা ও দুর্বলতা সহ অন্যান্য সমস্যা দেখা দেয় তবে উপযুক্ত পদক্ষেপ নিন।

গরমের কারণে ক্লান্তি দ্রুত হিট স্ট্রোকে রুপান্তরিত হতে পারে যা ইমার্জেন্সি মেডিকেল কেস। ------------------------------------------------------------------------------

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।