শুধু স্বপ্নগুলোকে ছুতে চাই
শুরুর কথা: আমার বন্ধু অনির্বাণকে নিশ্চয় আপনাদের মনে আছে। অনির্বাণ, সেই যে সেই ছেলেটা, যে তার পড়াশুনা, ক্যারিয়ার সমস্ত কিছু জলাঞ্জলি দিয়ে মানুষের মুক্তির জন্য গ্রামে গঞ্জে হারিয়ে গেল, আর ফিরে এলনা। আজকে তার কথা বলব না। আজকে বলব শতরূপার কথা। শতরূপা অনির্বাণের বান্ধবী ছিল, আমরা সবাই জানতাম ওদের বিয়ে হবে।
শতরূপা এখন একটা স্কুলে পড়ায়, আজও বিয়ে করেনি। আমার সাথে দেখা হল সেদিন। আমি বললাম "কিরে, কেমন আছিস?"
ও বলল "দিব্যি আছি। "
নানা কথার পর জিজ্ঞেস করলাম "অনির্বাণের কি খবর?"
ও বলল "জানি না, ওকে তো জানিস, তিন বছর আগে অন্ধ্রপ্রদেশের প্রত্যন্ত একটা গ্রাম থেকে একটা চিঠি লিখেছিল, ব্যস। "
আমার খুব কৌতুহল হয়, চিঠিটা চাই।
ও আমায় পাঠিয়েও দেয়। এখন আমি যে গানটা গাইব এই গানটা কোন গান নয়, এটা অনির্বাণের চিঠি শতরূপার উদ্দেশ্যে...
তোকে নিয়ে ঘর বাঁধবার
স্বপ্ন আমার অন্তহীন,
রাত্রিদিন।
তবু বাঁধ সাধে আরেক আশা,
ফুটপাতে যাদের বাসা
আগে তাদের জন্য একটা ঘর বানাই,
তারপরে তোর সিঁথিতে
তারার সিঁদুর রাঙিয়ে দিতে
করব ঋণ।
তোকে নিয়ে ঘর বাঁধবার
স্বপ্ন আমার অন্তহীন,
রাত্রিদিন।
তোর দুচোখ দেখে আমায়
আমার দুচোখ দেখে আকাশ,
সে আকাশ কালো করে
মানুষের দীর্ঘশ্বাস।
জানি তোর আমি অপরাধি
তুই বাদী তুই বিবাদী
তুই সিদ্ধি শক্তি
অপরিসীম।
কিস্তু যারা গঞ্জে গাঁয়ে,
বঞ্চনার উজান বাঁয়ে,
আগে তাদের জন্য,
যৌথ খামার বানাই।
তারপরে তোর সিঁথিতে
তারার সিঁদুর রাঙিয়ে দিতে
করব ঋণ।
তোকে নিয়ে ঘর বাঁধবার
স্বপ্ন আমার অন্তহীন,
রাত্রিদিন।
ফেলে আসা দিনের স্মৃতি
আমার বুকে বাড়ায় ক্ষত,
দুহাত তুলে আকাশপানে
শুধোই মহকাল আর কত?
হয়ত ফেরা যায় ঘরে,
পিঠ দেখানো রাস্তা ধরে,
কিন্তু মুখ দেখাবো
কি করে তোকে?
আজও মানুষ এ ভূখন্ডে,
বাঁচছে বোবা দ্বিধা দ্বন্দ্বে,
আগে তাদের মুক্তির
ভাষা শেখাই।
তারপরে তোর সিঁথিতে
তারার সিঁদুর রাঙিয়ে দিতে
করব ঋণ।
তোকে নিয়ে ঘর বাঁধবার
স্বপ্ন আমার অন্তহীন,
রাত্রিদিন।
এখানে শুনুন
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।