আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভাত দে হারামজাদা, নইলে গদি খাবো

নামের সাথে কামের কিছু মিলতো থাকবোই

দেশের এক ভয়ংকর মুহুর্তে রাজনীতিকদের কাদা ছোড়াছুড়ির সুযোগে সেনা সমর্থিত বর্তমান সরকারের আগমনে এবং তাদের সুমধুর বচনে অনেকেই আশাবাদী হয় ওঠে যে যাক, রাজনীতিকদের নোংরা কুটচাল হতে দেশ বুঝি মুক্তি পেল। যারা অল্প সময়ে আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হয়েছিল তাদের বুঝি সাজা হবে। দুর্নীতির দায়ে যখন বড় বড় রাঘোব বোয়ালরা কারাবন্দী হচ্ছিল তখন আমার মতো চুনোপুটিরা এ ভেবে খুশি যে এবার কিছু একটা হবেই হবে। ক্ষমতা দখলের (তাদেরকে ক্ষমতা দেয়া হয়নি, তারাই নিজে নিয়েছে) বছর পার হলেও বিচারের নামে প্রহসন ছাড়া কিছুই দেখা যাচ্ছে না। কখনও শুনি মাইনাস ২, কখনও শুনি মাইনাস ৩ আরো কতো কি।

তবে সারাদিন মইন আহমেদ ছবি টিভিতে দেখে মাঝে মাঝে ভুল হয়ে যায় যে দেশ প্রধানের নাম মইন আহমেদ না অন্য কেউ। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে পারলেন না। দুর্নীতিবাজদের বিচার করতেছেন, ভাবলাম দেশ বুঝি দুর্নীতিমুক্ত, কিন্তু টিআইবি রিপোর্ট বলে উল্টো কথা। অযথাই একটি ইস্যূ তৈরী করে হুজুরদের চেতালেন, নাকি এটি নিজেদের সৃষ্টি? যেন আমাদের দৃষ্টি অন্যদিকে ব্যস্ত থাকে? ক্ষুধার অভাব ভুলে থাকি আমাদের ধর্ম গেল এর প্রতিবাদ করতে গিয়ে? অনেক শিল্প-কারখানা আপনারা বন্ধ করেছেন আর বর্তমান বন্ধ্যা অর্থনীতির কারনে আরো প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। চাকরির বাজার মন্দা, গরমের শুরুতেই অসহ্য লোড শেডিং যা করতে পারবেন না, যা করার ক্ষমতা আপনাদের নাই তাতেই আপনারা হত দিয়েছেন এবং লেজে গোবরে করেছেন।

আপনারা চেয়েছিলেন দুর্নীতিবাজদের বিচার এবং একটি নির্বাচন। আপনাদের কাজের যে গতি তাতে ২০০৮ এর ডিসেম্বর কেন ২০১৮তেও হবে কিনা আল্লাহ পাক ভাল জানেন। ভোটার তালিকা শেষ হয়নি, রাজনৈতিক দলের সংস্কার শেষ হয়নি, দুর্নীতিবাজদের বিচার শেষ হয়নি, স্বচ্ছ ব্যলট বাক্স হয়নি। তাহলে বিগত ১ বছরে কি করে সময় কাটালেন? উপদেষ্টাদের নাকি নিশান গাড়িতে আরাম হয় না। তাদেরতো কাজের চাপে বোধ শক্তি কমে যাবার কথা।

তা না হয়ে গাড়িতে আরাম হচ্ছে এমন বোধ কি করে হলো? তারা কি সারাদিন গাড়িতে করেই মৌজ করে সময় কাটান? সিন্ডিকেট ভাংগার উদ্দেশ্যে বড় বড় ব্যবসায়ীকে ধরলেন কিন্তু কিছু করতে পারলেন না। আবার ছেড়ে দিতে হলো। বাজারে গিয়ে বহুত হুংকার ছাড়েন কিন্তু জিনিস পত্রের দাম কমাতে পারেন না। দিনে দিনে ওএমএসের লাইন বড় হয়। নিম্নবিত্তর পাশাপাশি এখন মধ্যবিত্তরাও লজ্জার মাথা খেয়ে লাইনে দাড়িয়েছে।

পন্যের দাম এখন মানুষের ক্রয় ক্ষমতার অনেক অ-নে-ক বাইরে চলে গেছে। বাড়ি ভাড়া বেড়েছে- যাতায়াত ভাড়া বেড়েছে- চিকিৎসা ব্যয় বেড়েছে- সকল খরচ বেড়েছে- বাড়েনি আয়... ভেবেছিলাম এ সরকারের শেষ দিন পর্যন্ত কিছু বলবো না। শেষদিন পর্যন্ত তাদের কাজ দেখে যাবো, আশা করে যাবো। কেননা আমাদের মতো সাধারন জনগনের আশা করা ছাড়া আর কিছুই করার নেই। কিন্ত যখন দেখি সময় ফুরিয়ে যাচ্ছে অথচ প্রদত্ত কাজের কিছুই হয়নি, যাও হয়েছে বাকি আছে এখনও অনেক যা নির্ধারিত সময়ে কোনমতেই সম্ভব নয়, তখন চুপ থেকে কি করবো? এখনকার আয়ে রিক্সাওয়ালার সংসার চলে না, তাই ভাড়া বাড়িয়েছে, আমিও দিতে বাধ্য হই, দিয়ে দেই।

সিএনজিওয়ালা ভাড়া বাড়িয়েছে, আমিও দিয়ে দেই। বাড়ীভাড়া বেড়েছে, আমিও দিয়ে দেই। ওষুধের দাম বেড়েছে, আমিও দিয়ে দেই। চালের দাম বেড়েছে, আমি যে আর দিতে পারি না, আগেই সব শেষ... আর তো পারিনা- “ভাত দে হারামজাদা, নইলে গদি খাব"

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।