আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

না খেয়ে মরে যারা



আমি জানি যারা না খেয়ে মরতে বসেছে তাদের চোখে এ লেখা পড়বে না। তবু অনুরোধ যারা সমাজের কল্যাণের জন্য নিজেদের নিবিদিত ভাবেন তারা স্পেসিফিকভাবে কিছু হতদরিদ্র, না খেতে পেয়ে মানুষকে সরকারের কাছে সোপর্দ করুন। অথবা পুনর্বাসিত করুন একটু নেতৃত্ব দিয়ে। গতকাল ফিরলাম একটি ফকির খ্যাত এলাকা থেকে (জেলার নাম বলছি না কারণ তাতে জেলাটিকে ছোট করছি বলতে পারেন কেউ)। সেখানকার প্রকৃত চিত্র এমন নয় যে তাতে দেশে নিরব বা সরব দুর্ভিক্ষ বলে কিছু আছে।

দেশে এখন যে অবস্থা তাতে আমরা খুব ভালো আছি এ কথা যেমন বলা যায় না, তেমনি খুব খারাপ আছি সেটিও বলা সঙ্গত নয়। আমাদের দেশের বিগতদিনের ইতিহাস ঘাটলে সেকথা স্পষ্ট হয়ে উঠবে। দেশে যখন যুদ্ধাবস্থা বা জরুরি অবস্থা থাকে তখন অনেক রকম সমস্যাই হতে পারে, আমরা যেমন স্বাধীনতার জন্য সবকিছু বিসর্জন দিতে শিখেছি, তেমনি দেশকে দুর্নীতিমুক্ত, স্বনির্ভর অর্থ্বৈতিকভিত গড়তে এমন কিছু সাময়িক কষ্ট মেনে নেওয়ার মানসিকতা আমাদের তৈরি করা উচিৎ। বর্তমান সরকার যদি আপনাদের সমর্থনে দৃঢ়ভাবে কাজ করতে পারেন তাহলে নিশ্চই তারা দেশ থেকে দুর্নীতি তাড়িয়ে, সমাজের ছিদ্রগুলো বন্ধ করে দিয়ে একটি স্বনির্ভির দেশের অবকাঠামো দিয়ে যেতে পারবেন এবং সে ইচ্ছা তাদের আছে বলেই আমি বিশ্বাস করি। আমি ভালো আছি এ কথা বলছি এ কারণে যে এর চে অনেক খারাপ থাকতাম নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় থাকলে।

যেমন হরতালের টেনশনে থাকতে হতো, কখন কী যে হয়? এই আতঙ্কে কাটত সারাক্ষণ! ঘর থেকে বেরিয়ে যাবার পর ফিরে আসবে কি না এই টেসশনে থাকতেন প্রতিটি মা। মনে নেই সেই কথা? কী পরিস্থিতিতে এসেছে এই সরকার? অর্থনীতিকে কীভাবে লুটেরারা শেষ করে দিয়েছে? চাকরির বাজারে দলীয় পরিচয় ছাড়া ফ্যা ফ্যা করে ঘুরে বেড়াতে হতো। মেধার মূল্যায়ন হতো না সর্বোচ্চ ক্যাডারেও। এত যেমন মেধাহীন নেতৃত্ব এবং কর্মীবাহিনীর উদভব হয় তেমনি দেশ পরিণত হয় তলাবিহীন ঝুড়িতে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কথাতো আমরা সবাই জানি! সে যাক! দ্রব্যমূল্য ছাড়া আর কোনও আশঙ্কায় আমরা আছি বলে মনে হয় না।

নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা করার অবকাশ আমাদের নেই। নির্বাচিত সরকার নিয়ে আমাদের মাথাব্যথা খুব একটা নেই। যদিও কিছু রাজনীতিবিদ নিজেদের কথাগুলো জাতির কথায় পরিণত করতে চেষ্টা করেন, আদৌ জাতি বা জনগণের তাতে শেয়ার কতটুকু? এটাই জাতির জিজ্ঞাসা। আর যারা নেতাকর্মীদের পিছে ঘুরে, তেলমেখে সংসার চালাতেন তাদের দুশ্চিন্তা থাকতে পারে। অবশ্য তাদের সংখ্যাও নেহায়েত কম নয়! এইসব বেকারদের টেনশন, প্রত্যাশা, অভিমতকে যদি সমগ্রজাতির উপর চাপিয়ে দিতে চান রাজনীতিক এবং তাদের পালিত চ্যানেল-পত্রিকাগুলো, এবং তাদের অপপ্রচারে জাতি যদি ভুল করে তার মাশুল তাকেই গুণতে হবে।

সে জাতির ভাগ্য পরিবর্তন হয় না যে জাতি নিজে নিজের ভাগ্য পরিবর্তনে সচেষ্ট হয় না। সর্বশেষ কথা হলো আমি এ কয়দিনের ছুটিতে বেশ কতগুলো এলাকা সফর করেছি কোথাও কথিত দুর্ভিক্ষের ছোঁয়া আমি দেখিনি। দেখেছি বিভিন্ন নতুন শস্যনিয়ে তাদের মাতামাতি। ধনিয়া-গম-ছোলা-আলু নিয়ে তারা স্বপ্নে ভাসতে জানে। তাদেরকে পারেনি মিডিয়াগুলো তাদের আশঙ্কা পুশ করতে।

না খেয়ে থাকা মানুষদের তথ্যগুলো পেলে আমরা আমাদের করণীয় নিয়ে বসবো।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।