আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

‘ কাজী জেসিন , তিনি ও ইটিভি ’



‘ কাজী জেসিন , তিনি ও ইটিভি ’ প্রথমেই ক্ষমা চাচ্ছি আমার ভাষাজ্ঞান একটু দূর্বল হওয়ায় । যার ফলে আমি যা বলতে চাই অনেকের মতো পেচিয়ে-টেচিয়ে , ঘুড়িয়ে- ঘাড়িয়ে বলতে পারিনা । মনের অব্যক্ত জিদগুলো , কথাগুলা সরাসরিই ব্যক্ত হয় । যাদের জন্মের ঠিক নেই তাদের আমরা ‘জাউরা’ বলি । প্রথমেই বলেছি ভাষাজ্ঞানের দূর্বলতার কথা , তাই এছাড়া ভালো কোনও সমার্থবোধক শব্দ আছে কিনা তা আমার জানা নেই ।

তাই শুনতে খারাফ লাগলেও শব্দটা আমি ব্যবহার করলাম । কারণ আমার মতো নিরুপায় প্রযুক্তিহীন মানুষের বলার মতা নেই তাই লিখেই মনের বিষাদ উপাদানগুলোকে না প্রকাশের বেদনা থেকে মুক্তি দিতে চাই। গত কয়েকবছর পূর্বে বাংলাদেশে একটিমাত্র চ্যানেল ছিল বিটিভি । বিটিভির সরকারকেন্দ্রিক নিউজ দেখতে দেখতে যখন প্রচণ্ড বোরবোধ হচ্ছিল সে সময় ইটিভি নামক বেসরকারি চ্যানেলের আগমনটা , উপস্থিতিটা বেশ স্বস্তি এনে দিল । মূলতো অজানা সংবাদগুলো জানতে পেরে সেই চ্যানেলের খাস্ দর্শক হয়ে গেলাম ।

মনে এক আশার সঞ্চার হলো । এবার বুঝি সমাজের অপরিচিত , অজানা , অপ্রকাশিত খবরগুলো জাতির সামনে প্রকাশ হবে । ডোবা দেখলে যেমন ব্যাঙ লাফায় Ñ তেমনি প্রচন্ড উচ্ছসিত হলাম । কিন্তু সে আশায় গুড়ে বালি । আশার কাঠামোটা পূর্ণতা না পেতেই সিডরের আঘাতে ভেঙ্গে যাওয়ার মতো ভেঙ্গে চুরমার হলো ।

ইটিভি অন-ইয়ারচ্যুত হলো । নিভে গেল বহুদিনের প্রত্যাশার এ প্রদীপটি । আশা দুরাশা, হতাশায় পরিণত হল । যখন জানলাম যার খবর দেখার জন্য উন্মুখ হয়ে বসে থাকতাম , ভাবতাম যে চ্যানেল সমাজের মধ্যে বহমান অনৈতিকা দূর করবে , দুর্নীতির মূলোৎপাটন করবে সে আজ সে দোষে দুষ্ট অর্থাৎ ইটিভির জন্ম নিয়ে প্রশ্ন । খুব কষ্ট পেলাম যেমন কষ্ট পাই আমার প্রিয় মানূষটিকে যখন অন্যের সাথে কপোত কপোতির খেলায় মেতে থাকতে দেখি ; ঠিক তেমন ।

যখন জানলাম এর জন্ম অবৈধ । যাকে বলে –‘জাউরা’ । আমার মতো না পাওয়া মানুষের একমাত্র বেঁচে থাকার পথ হল আশার স্বপ্ন আাঁকা । অনেকদিন পরে হলেও সে স্বপ্নের ক্যানভাস রঙ্গিন হল । এবার বৈধতার সার্টিফিকেট নিয়ে এসেছে ।

আমাদের দেশে যারা চরিত্রের, নাগরিকতের প্রভৃতির সার্টিফিকেট দেন তাদের সার্টিফিকেট নিয়ে আমার প্রশ্ন আজন্ম হলেও নিরুপায়তার দরুণ মুখে আঙ্গুল ঢুকিয়ে চুপ থাকি । কোনও জারজ সন্তান সমাজে পরিচিত হয়ে গেলে সমাজে বেঁচে থাকা তাদের জন্য খুব লজ্জাকর , দুর্বোধ্য হয়ে যায় । তখন তাদের জীবন আর স্বাভাবিক থাকে না । হয় তারা সসম্মানে দুনিয়াত্যাগ করে নচেৎ সমাজের হতচ্ছারাদের দলে যোগ দেয় । প্রথমবার খুব ভাল করে বোঝা না গেলেও দ্বিতীয়জন্মে তাদের উৎপত্তির আদর্শের মানদণ্ডটা গোচর হল ।

একটা বিশেষ দলের চাম্চামি , আর একটা দলের নাশ্ করার লক্ষে তাদের যে সরাসরি অভিযান তাতে বেশ পারদর্শীতায় ইতোমধ্যে ১০০% সফলতা পেয়েছে । তাদের এ নখরামি মার্কা অভিযান আমার মত দূর্বল বিবেকবান মানুষের মনেও এক বিষণ্নতার কৃষ্ণবাড়ি নির্মাণ করলেও অনেকের মত আমি সয়ে যাচ্ছিলাম । কারণ আমরা মাছে-ভাতে বাঙ্গালি । ভাত খেলে মানুষ একটু অলসই হয় । তবে আজ আর চুপ থাকতে পারলাম না ।

বাধ্য হয়েই লিখছি । কবি আলমাহমুদ । যে কবির বর্ণনা বর্ণনাতীত । কবিরা বাঁচে তাদের শিল্পে । আমরা কবিকে চিনিনা ।

চিনি তার কর্মকে । আমরা কবিকে গ্রহণ করি না করি তার কর্মকে । আর যে কারণে সোনার তরীতে কবি রবীন্দ্রণাথ ঠাকুরের আপে আমরা ল্য করি । আমরা খুঁজেেত চাইনা তাঁর ব্যক্তিগত বিশ্বাস , আদর্শ । আমরা অনুপ্রাণিত হই তার সৃষ্টিতে ; তার জীবনাদর্শে নয় ।

কবিরা কোন রাজনৈতিক ব্যক্তি নয় । তাদের কোন রাজনৈতিক মিশনও নেই । তাঁরা দূর্নীতিপরায়ণেদের অন্তর্ভুক্ত নয় । কবিরা আজন্ম আবহমানকাল যাবৎ মানুষের প্রিয় মানুষ হয়ে বাঁচে । কবির সৃষ্টির আলোকে তাকে কল্পনা করে একটা আসনে তাকে সমাসীন করে ।

কবিদের সাহিত্যের সমালোচনা কেউ করার চেষ্টা করতে পারে কিন্তু জীবনদর্শণ নিয়ে কথা বলতে পারেন না। কবিদের অসম্মান , কবিদের দূর্নীতিগ্রস্থদের মতো , রাজনৈতিক ব্যাক্তিদের মত কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে ব্যক্তিগত বিশ্বাস , আদর্শ ও ধর্ম নিয়ে খেলায় মেতে ওঠার সাহস বড় দুঃসাহস । যা দেখিয়েছে ইটিভি । আমি কাজী জেসিনকে বলছি আপনি কবি আল মাহমুদের মত একজন কবির সামনে কিভাবে বসতে হয় , কিভাবে তাকাতে হয় , কি প্রশ্ন করতে হয় Ñ এই সামান্য আদব-কায়দা , সৌজন্যবোধ আয়ত্ব না করে উপস্থাপনা করতে আসবেন না । আপনি যে উদ্দেশ্য নিয়ে তাকে সাাৎকারের জন্য ডেকেছেন তা আন্ডার মেট্রিক পাশ লোকেও বোঝে ।

আপনার বা আপনার নেপথ্য শক্তির গলার কাঁটা হতে পারে , আপনার মতাদর্শের না হতে পারে কবি আল মাহমুদ । তাই বলে যা ইচ্ছা প্রশ্ন করতে , সুকৌশলে মনের ক্ষোভ ঝারতে পারেন না । সবারউপরে আপনাকে মনে রাখতে হবে তিনি আমাদের কবি । চ্যানেল আছে বলেই , সুযোগ আছে বলেই দায়বদ্ধতার দিকে নজর না দিয়ে যা ইচ্ছে করবেন তাতো হতে দেয়া যায়না । আপনি ও আপনার নীতি নির্ধারকরা যাদের দিয়ে কবির সমালোচনা করিয়েছেন তারা কোন শ্রেণীর ? তাদের একজনের পত্রিকা রাসূল (সঃ) এর ব্যঙ্গ কার্টুন প্রদর্শন করে জনরোষের মুখোমুখি হয়েছিলেন ।

সামান্য বিবেকবোধ থাকলেও কবি আল মাহমুদের মত কবির সমালোচনা করার যোগ্যততো দূরের কথা প্রশ্রাবের বদনা টানার যোগ্যতা যাদের নেই তাদের সমালোচনার ভঙ্গিমা দেখে ; আর আপনার প্রশ্ন , কবির প্রতি এ্যাচিটিউট দেখে আমার রক্তে আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎলাভার সৃষ্টি করেছে । কারও তি করতে হলে তার কাছ থেকে তি করতে হয় , তার কাছে পৌঁছাতে হয়, কিছু ভাল দিক তুলে ধরতে হয় ; সে কাজটি বেশ চতুরভাবে সম্পাদন করেছেন । কবিরা প্রকৃতির , দেশের । তাদের হ্যাস্তন্যাস্ত করার চেষ্টা আমার মত প্রকৃতি পাগল , দেশপাগল কারও কাছে খুব সহজে মেনে নেয়ার মত নয় । তাই কাজী জেসিন ও তিনি প্রোগ্রামের ইউনিটকে বলছি Ñ এ ধরণের নখ্রামি মার্কা দুঃসাহস পরবর্তীতে করার চেষ্টা করবেন না ।

জেসিন আপনিতো চ্যানেল ওয়ানে ছিলেন সেখানের খুব ভাল বেতনের চাকরিটা ছেড়ে দিলেন কেন ? এর নেপথ্যের সেই নোংরামির কাহিনী নিশ্চয় কারও অজানা নয় । আর জেসিন আপনার এ্যচিটিউট চেইঞ্জ করবেন নচেৎ ইটিভির প্রথমবারের জন্মের মত আপনার জন্ম নিয়েও দেশবাসী শংকায় পড়বে । আমার মত অনেকের মনেই এ প্রশ্ন জেগেছে , জাগবে তাহলে কি আপনিও ... ... ... ... .. ? দয়াকরে আপনার শ্রদ্ধেয় জন্মদাতাদের সন্দেহযুক্ত করবেন না দেশবাসীর সামনে । শাকিল মাহফুজ মিরপুর ১০ , ঢাকা ।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।