্নওয়াল আল সাদাই
নওয়াল আল সাদাই। নারীবাদী লেখক হিসেবে আরব এবং ইংরেজিভাষী দেশগুলোতে তার ব্যাপক পরিচিতি। জন্ম মিশরের কাফির তাহলা নামক গ্রামে। সরকারি মেডিকেলের ডাক্তার হিসেবে কর্মজীবন শুরু। মেডিকেলে আসা নারীদের নানা সমস্যা এবং যৌনতা বিষয়ে তার বিচিত্র সব অভিজ্ঞতা হয়।
এ নিয়েই লেখেন ওমেন অ্যান্ড সেক্স। ১৯৭২ সালে বইটি বেরোনোর পর নওয়াল আল সাদাই তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন। নানা বিতর্কের সৃষ্টি হলে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয় নওয়ালকে। কিন্তু আপোষ করেননি নওয়াল। প্রতিক্রিয়াশীলদের ভয়ে তার কলম থামেনি।
নারী অধিকার নিয়ে লিখে গেছেন অবিরাম। এ পর্যন্ত তার ত্রিশটি বই বেরিয়েছে। এর মধ্যে আলোচিত বইগুলো হলÑওম্যান অ্যাট পয়েন্ট জিরো (১৯৭৩), টু উইমেন ইন ওয়ান (১৯৭৫), গড ডাইস বাই দ্য নাইল (১৯৮৫), দ্য ফল অব দি ইমাম (১৯৮৮), সার্চিং (১৯৯১), দ্য ইনোসেন্স অব দ্য ডেভিল (১৯৯৪) এবং আত্মজীবনীমূলক বই ডটার অব আইসিস (১৯৯৯)।
বইগুলোর নামই বলে দেয় এর বিষয়বস্তুর স্বতন্ত্রতা এবং এতে রয়েছে বিদ্রোহের সুর। তার নির্ভীক আক্রমণাতœক লেখার জন্য ১৯৮১ সালে তাকে জেল পর্যন্ত খাটতে হয়।
১৯৮২-তে জেল থেকে ছাড়া পেয়ে তিনি ’আরব উইমেন্স সলিডারিটি এসোসিয়েশন’ নামে নারীদের জন্য একটি আন্তর্জাতিক সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। সংক্ষেপে (অডঝঅ) ওসা। এর প্রধান উদ্দেশ্য আরব নারীদের মনের বোরকা উন্মোচন। ১৯৮৫ সালে ওসা জাতিসংঘে বেসরকারি আরব অ্যাসোসিয়েশন হিসেবে অনুমোদন পায়।
নওয়াল আল সাদাই বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন।
তার লেখা বিশ্বের ৩০টির বেশি ভাষায় অনূদিত হয়েছে। বর্তমানে তিনি ক্যালিফর্নিয়ার স্ক্রিপস কলেজ ইন কেয়ারমন্ট-এ শিক্ষকতা করছেন।
হানান আল শায়েক
সাম্প্রতিক আরব নারী সাহিত্যে হানান আল শায়েকের নাম অন্যতম। লেবানিজ এই লেখকের জন্ম ১৯৪৫ সালে বৈরুতে। কঠোর পারিবারিক অনুশাসনে তিনি বড় হয়েছেন।
পড়াশোনা শেষ করার পর ১৯৭৫ সালে লেবাননের দৈনিক আল-নাহার পত্রিকায় সাংবাদিকতা শুরু করেন। এবং তখন থেকেই লেখালেখির শুরু। নওয়াল আল সাদাইর মতো তার লেখায়ও উঠে আসে পিতৃতান্ত্রিক সমাজে নারীর বঞ্চনা, নির্যাতন ও অসহায়ত্বের ছবি। ধর্মের দোহাই দিয়ে যে সমাজ নারীকে কেবল ভোগের সামগ্রী মনে করে। তার লেখায় যৌনতা উঠে এসেছে খোলাখুলিভাবে।
এ কারণে শায়েক রক্ষণশীল মুসলিম সমাজের আক্রোশের শিকার। তার বেশ কটি বই নিষিদ্ধ হয়েছে। শায়েকের সর্বাধিক আলোচিত বই দ্য স্টোরি অব যাহারা (১৯৮০) এবং উইমেন অব স্যান্ড অ্যান্ড মির। বিবাহবিচ্ছেদ, অবৈধ সম্পর্ক, গর্ভপাত, বিকৃত যৌনাচারÑএসব নিয়ে আবর্তিত দ্য স্টোরি অব যাহারা-র কাহিনী। আর উইমেন অব স্যান্ড অ্যান্ড মির উপন্যাসের দুই প্রধান চরিত্র হল সমকামী।
লেবাননের গৃহযুদ্ধ নিয়েও রয়েছে হানান আল শায়েকের কয়েকটি উপন্যাস।
লায়না বদর
লায়না বদরের প্রথম উপন্যাস প্রকাশিত হয় ১৯৭৯ সালে। নাম এ কম্পাস ফর সানফাওয়ার। তার লেখার বিষয়বস্তু সাধারণত নারী, যুদ্ধ ও নির্বাসন কেন্দ্রিক। কারণ তিনি নিজেও বেড়ে উঠেছেন এমন একটি দেশে যেখানে যুদ্ধ-বিগ্রহ খুব স্বাভাবিক ঘটনা।
১৯৫০ সালে জেরুজালেমে বদরের জন্ম। ১৯৬৭ সালে তারা সপরিবারে জর্ডানে পালিয়ে যান। এবং সেখান থেকে ১৯৭০-এ চলে যান বৈরুতে। ১৯৮২-তে লেবানন থেকে ফিলিস্তিনি বিতাড়ন শুরু হলে লায়না বিভিন্ন সময় দামাস্কাস, তিউনিস ও আম্মানে বাস করেন। ১৯৯৪-তে তিনি স্বদেশে ফিরে যান।
লায়না ফিলিস্তিনের বিভিন্ন নারী সংগঠনে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করছেন এবং আল হুরাইয়া পত্রিকার কালচারাল বিভাগের সম্পাদক। সাহিত্যের প্রায় প্রতিটি অঙ্গনেই লায়না বদরের পদচারণা। ছোটগল্প, প্রবন্ধ, উপন্যাসিকা যেমন রচনা করেছেন তেমনি শিশুদের জন্যও প্রচুর লিখেছেন। ১৯৮০ থেকে ১৯৯১ পর্যন্ত ছোটদের জন্য লেখা তার ৫টি বই বেরিয়েছে। সাহিত্যের পাশাপাশি সিনেমার প্রতিও রয়েছে তার ব্যাপক আগ্রহ।
ফিলিস্তিনের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সিনেমা বিভাগেও তিনি কাজ করছেন।
আদাফ সইফ
ঔপন্যাসিক আদাফ সইফের জন্ম কায়রোতে। পড়াশোনা করেছেন মিসর ও লন্ডনে। সইফ ইংরেজি ও আরবি দুই ভাষাতেই লেখেন। তার উপন্যাস তিনটি।
ইন দি আই অব দ্য সান (১৯৯২) ও দ্য ম্যাপ অব লাভ (১৯৯৯) এবং মেযেতারা (২০০৭)। উচ্চশিক্ষার্থে মিসর থেকে ইংল্যান্ড যাওয়া এক তরুণীর জীবনকথাই দি আই অব দ্য সান উপন্যাসের কাহিনী। দ্য ম্যাপ অব লাভ-এ বর্ণিত হয়েছে এক ইংরেজ তরুণী ও মিসরীয় তরুণের প্রেমকাহিনী। বইটি বুকার প্রাইজ ফর ফিকশনের শর্টলিস্টে মনোনীত হয়েছিল। বইটি বেশ কয়েকটি ভাষায় অনূদিত হয়েছে।
তার তিনটি গল্প সংকলন রয়েছে। সেগুলো হলÑ আয়শা (১৯৮৩), স্যান্ডপাইপার (১৯৯৬), ও আই থিংক অফ ইউ (২০০৭)।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।