বৃত্তের বাইরে...
উন্নয়নের নামে কক্সবাজারের জমি যেভাবে
ভাগভাটোয়ারা করেছে রাস্তা পর্যন্ত রাখেনি
দেশের হার্ডথ্রব চিত্রনায়ক ইলিয়াছ কাঞ্চন দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ সংগঠনের মাধ্যমে বাংলাদেশে সড়ক দূর্ঘটনা প্রতিরোধে কাজ করে যাচ্ছেন। দেশের একটি মানুষও যাতে সড়ক দূর্ঘটনায় মারা না যায় সেই স্বপ্ন নিয়ে দেশব্যাপী মানুষের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করছেন। কিন্তু সড়ক দূর্ঘটনা একেবারে বন্ধ করার মতো কঠিন কাজটি কিভাবে সম্ভব তা নিয়েই চিন্তা করছেন। গাড়ীর মালিক ও ড্রাইভারদের পাশাপাশি দেশের প্রতিটি মানুষকে সড়ক দূর্ঘটনা প্রতিরোধে সচেতন এবং সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
নিরাপদ সড়ক চাই সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান চিত্রনায়ক ইলিয়াছ কাঞ্চন বলেন, পর্যটন নগরী হিসেবে কক্সবাজারের রাস্তাগুলো বেমানান।
বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের শহরটির রাস্তাগুলো কেমন হওয়া উচিত তা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপরে ভেবে দেখা উচিত। কক্সবাজারে নিরাপদে গাড়ী চালানোর সুযোগ নেই। যেহারে একের পর এক বিল্ডিং করা হচ্ছে, সেহারে রাস্তা করা হচ্ছে না। কিন্তু আরও বেশি বেশি প্রশস্ত সড়কের প্রয়োজন ছিল। পরিকল্পিতভাবে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড না করায় কক্সবাজারে বিদেশী পর্যটকের আগমন হ্রাস পেয়েছে বলে দাবি করেন ইলিয়াছ কাঞ্চন।
তার মতে, যেভাবে কক্সবাজারের উন্নয়ন হচ্ছে তাতে শহরটি দ্রুত পূরান ঢাকার মতো পরিত্যক্ত নগরীতে রূপান্তরিত হওয়ার আশংকা রয়েছে। ভবিষ্যতে এখানে কোন পর্যটক আসবে না। প্রকৃতপে কক্সবাজারের কোন উন্নয়ন হচ্ছে না বলেও মনে করেন তিনি। তার মতে, বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের শহর হওয়ায় কক্সবাজারের জমিগুলো রাজনৈতিক সরকারের আমলে দেদারছে ভাগভাটোয়ারা করা হয়েছে। কিন্তু তারা ভাগভাটোয়ারায় এতই মত্ত ছিল যে রাস্তা রাখতেও ভুলে গেছে।
এছাড়া দেশীয় চলচ্চিত্র দেশী বিদেশী পর্যটকদের কাছে ছড়িয়ে দিতে পর্যটন নগরীতে একটি আন্তর্জাতিকমানের সিনেমা হল করারও প্রয়োজন ছিল বলে মনে করেন ইলিয়াছ কাঞ্চন। তার মতে, পর্যটকরা কক্সবাজারে এসে রাতের বেলায় ঘুমানো ছাড়া কোন কাজ নেই। কিন্তু কয়েকদিনের জন্য বেড়াতে আসা পর্যটকরা রাতে বিনোদনের সুযোগ চায়। তাদের জন্য হোটেল মোটেল জোনে সিনেমা হল করার প্রয়োজন ছিল।
তিনি বলেন, ছোট্ট এই দেশটিতে দ্রুত গাড়ীর সংখ্যা বাড়ছে।
সেই সাথে পাল্লাদিয়ে বাড়ছে সড়ক দূর্ঘটনা। কারণ সড়ক ব্যবস্থাপনায় অন্যান্য দেশের মতো এদেশে আইন নেই। যা আছে তাও অকার্যকর। পাশাপাশি অদ ড্রাইভার, অসচেতন গাড়ীর মালিক, যাত্রী ও পথচারীদের কারণে সড়ক দূর্ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তাঁর মতে, ৭০ শতাংশ সড়ক দূর্ঘটনা হয় ড্রাইভারদের অসতর্কতার কারণে।
তাই সড়ক দূর্ঘটনা প্রতিরোধে সর্বপ্রথম ড্রাইভারদের প্রশিণের ব্যবস্থা করতে হবে। তিনি সরকারের সড়ক সংস্কারের খাত থেকে বিশেষ বরাদ্দ দিয়ে হলেও ড্রাইভারদের পর্যায়ক্রমে প্রশিণের ব্যবস্থা করার দাবি জানান। পাশাপাশি দেশে ড্রাইভিং ট্রেনিং ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করারও দাবি জানান।
তিনি মনে করেন, দেশের ড্রাইভাররা গরিব হওয়ায় অনেকেই ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে পারেন না। বা যেকোন ভাবে ড্রাইভিং লাইসেন্স ম্যানেজ করতে পারলেও ট্রেনিং নিতে পারেন না।
আর ট্রাফিক বিভাগে ঘুষ প্রথা চালু থাকায় ড্রাইভার কিংবা গাড়ীর মালিকরাও প্রয়োজনীয় প্রশিণ ও কাগজপত্র না নিয়ে পার পেয়ে যায়। তাই সরকারকে ড্রাইভারদের মানোন্নয়নে এগিয়ে আসতে হবে।
তার মতে, ৫০ শতাংশ দূর্ঘটনা হয় ওভারটেকিং করার জন্য। এ বিষয়ে ড্রাইভারদের পাশাপাশি যাত্রী ও ট্রাফিক বিভাগকে দায়িত্ব পালন করতে হবে।
বাংলাদেশে গাড়ীর চাকা বা ব্রেক নষ্ঠ হয়েও অহরহ সড়ক দূর্ঘটনা ঘটে।
অথচ ভাল পার্টস ব্যবহার এবং সময়মতো পার্টস পরিবর্তন করে এই দূর্ঘটনা একেবারে প্রতিরোধ করা সম্ভব। কিন্তু গাড়ীর মালিকরা সময়মতো পার্টস পরিবর্তন না করায় দেশের অনেককেই প্রাণ দিতে হচ্ছে।
তিনি বেশ কিছুদিন ধরে পর্যটন নগরী কক্সবাজারে একটি ছবির শুটিং করতে এসেছেন। ওয়াকিল আহমেদ পরিচালিত গোলাম মোর্শেদের প্রযোজনায় সন্ধানী কথাচিত্রের ব্যানারে নির্মিতব্য ‘কে আমি’ ছবিটির শুটিং শেষে এই মাসের শেষের দিকেই তিনি ঢাকায় ফেরত যাওয়ার কথা রয়েছে। ছবিটিতে ইলিয়াছ কাঞ্চন ছাড়াও রিয়াজ, পূর্ণিমা, প্রবির মিত্র অভিনয় করছেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।