কষ্ট হলেও সত্য বলা বা স্বীকার করার সাহসই সবচেয়ে বড় সততা।
ড· কামাল একজন বর্ষীয়ান আইনজীবী এবং প্রবীণ রাজনীতিবিদ। ১৯৭২ সালের সংবিধান রচয়িতাদের অন্যতম ব্যক্তি হিসেবে তার কাছে আইনের ভাষা ও সভ্য আচরণই কাম্য। তবে মতার রাজনীতিতে বঞ্চিত ও গণপ্রত্যাখ্যাত হয়ে ড· কামাল হোসেন প্রায়শই বেসামাল উক্তি করে থাকেন। আওয়ামী লীগের মতো একটি বড় দলের নেতাই ড· কামাল আজ পর্যন্ত জনগণের ভোটে সংসদ সদস্য হতে পারেননি।
যে আসন থেকে আওয়ামী লীগের টিকিটে মকবুল হোসেন, কামাল মজুমদারদের মতো অখ্যাত ব্যবসায়ীরা নির্বাচিত হয়েছেন, সেই আসনে তিনি একাধিকবার হেরে গেছেন। শুধু তাই না জামানতও বাজেয়াপ্ত হয়েছিলো। ফলে জনগণের কাছে তিনি একজন গণপ্রত্যাখ্যাত ব্যক্তি হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। দলীয় সভানেত্রীর চক্ষুশূল হয়ে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার হয়েছেন। তারপর তিনি গণবিচ্ছিন্ন ‘গণফোরাম’-এর নেতা হয়ে রাজনৈতিক ‘রঙ্গমঞ্চে’র কুশীলব হওয়ার কোশেশ করছেন।
মুক্তিযুদ্ধের প্রাক্কালে ড· কামাল একজন তরুণ আইনজীবী হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের স্নেহছায়ায় রাজনৈতিক দৃশ্যপটে আবির্ভূত হন। তবে মুক্তিযুদ্ধের পুরো নয় মাস ড· কামালকে কেউ মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে রণাঙ্গণে দেখেননি। এক অদৃশ্য কারণে তার স্ত্রীর পিতৃদেশ পাকিস্তানে তখন অবস্থান করেন। মুক্তিযুদ্ধ শেষে তিনি কারামুক্ত মুজিবের সাথে ফিরে এসে হুজুগের সুযোগে বড় নেতা বনে যান। শেখ সাহেবের বদান্যতায় সংবিধান প্রণেতাদের তালিকাভুক্ত হয়ে গেলেন।
মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস পাকিস্তানে ড· কামালের ভূমিকা কী ছিল, তা আজো রহস্যের আবরণে ঢাকা। তবে অনেকে মতে, ড· কামাল কারাবন্দী শেখ মুজিব এবং পাকিস্তানের তদানীন্তন সামরিক শাসক ইয়াহিয়া খানের সাথে রাজনৈতিক আপস-নিষ্পত্তির অনুঘটকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে সফল হননি। কেননা যুদ্ধের কারণে এবং ভারতের হস্তক্ষেপে তখন মুজিব-ইয়াহিয়ার সমঝোতা আয়ত্তের বাইরে চলে যায়। এর পাশাপাশি আইনজীবী হিসেবে ড· কামাল আন্তর্জাতিক তেল ব্যবসায়ীচক্রের ভাড়াটে আইনজীবী হিসেবে বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী ভূমিকা পালন করে কোটি কোটি টাকা উপার্জন করেছেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে।
এমন একজন ব্যক্তি যখন তৃণমূল পর্যায়ের গণমুখী রাজনৈতিক নেতাদের সম্পর্কে দুর্বৃত্তপনার অভিযোগ তোলেন, তখন আমাদের পেঁচা কাহিনী মনে পড়ে।
সূর্যের দীপ্ত আলোকচ্ছটায় অসহ্য হয়ে উঠায় আত্মপ সমর্থনমূলক সংলাপ আওড়ায়। এ অবস্থায় ‘পেচা রাষ্ট্র করে দেয় পেলে কোন ছুঁতা/ জানি না, আমার সাথে সূর্যের শত্রুতা’। পেঁচা যদি তার স্বভাবদোষে সূর্যালোক সহ্য করতে না পারে, তাহলে সে দায় পেঁচার, সূর্যের নয়। ড· কামাল নিজে যেহেতু কখনো জনগণের ভোট পেয়ে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হয়ে জাতীয় সংসদে আসার সৌভাগ্য অর্জন করেন নি, সে কারণে জননির্বাচিত রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে তার ক্ষোভের অন্ত নেই। এ ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে গণফোরামের ঘরোয়া সভায় ড· কামালের কিছু অশালীন উক্তিতে।
যাদের মামলাগুলো বিচারাধীন তাদের দুর্বৃত্ত বলে ড· কামাল একদিকে আদালত অবমাননা করেছেন, অন্যদিকে তার মানসিক প্রতিহিংসা ও ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন।
ড· কামালের রাজনৈতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক ভূমিকা অস্বচ্ছ। ১/১১ এরপর নতুন পরিস্থিতিতে তিনি রাজনৈতিক নেতা হিসেবে আবিভূêত হতে চাইলেও সরকারি মহল ও জনগণের উপোয় দিকভ্রান্ত হয়ে এর ওর বিরুদ্ধে অপবাদ আরোপ করে মানসিক বিকৃতির উপশম ঘটাচ্ছেন। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে গঠিত ১৪ দলীয় জোট রাজনীতিতে ড·কামাল নিজেকে একজন কেউ কেটা ভাবলেও শেখ হাসিনার কাছে ড· কামালের গুরুত্ব নেই। অথচ তিনি বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ ডাকলে আলোচনায় যাবেন’।
কথায় বলেঃ মেরেছিস কলসির কানা, তাই বলে কী প্রেম দেবো না’? তার জন্য করুণা হয়। শেখ হাসিনাকে জেলে পাঠানোর ষড়যন্ত্রে যারা নেপথ্য থেকে ইন্ধন দিয়েছেন, যারা মাইনাস টু ফর্মুলা তৈরি করে রাজনীতি থেকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, জননেত্রী শেখ হাসিনাকে নির্বাসন দিয়ে মুফতে রাজনীতির মাঠ দখলের পাঁয়তারা করে আসছেন, তাদের মন্ত্রগুরু ড· কামালকে আওয়ামী লীগের প্রয়োজন হবে বলে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করেন না।
ড· কামালকে নিঃসঙ্গতা ও জনবিচ্ছিন্নতার যন্ত্রণায়ই ছটফট করে নিঃশেষ হতে হবে। তার নিজের কোনো গণভিত্তি নেই। মির্জা আব্বাস যদি মতলববাজ দুর্বৃত্ত হন, তাহলে ড· কামালের চারপাশে যে সব রাজনীতিক আইনজীবী আছেন, তারা কী? আওয়ামী লীগের এক কালের ক্যাডার ও চাঁদাবাজ সন্ত্রাসীদের পাশে বসিয়ে ড· কামাল বিএনপি নেতাদের মাঝে মতলববাজ ও দুর্বৃত্ত খুঁজতে শুরু করেছেন।
ড· কামালের আন্তর্জাতিক কানেকশন ও বিদেশী স্বার্থে পরিচালিত তৎপরতা উদঘাটন করা হোক। রাজনীতির অঙ্গন থেকে বুদ্ধিবৃত্তিক অসৎ ব্যক্তিদের মতো শিগগির বিতাড়ন করা সম্ভব হবে, বাংলাদেশ ততোবেশি শান্তিময় ও স্থিতিশীল হবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।