আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

৩৬ বছর পর জামায়াত নেতৃবৃন্দ ও অন্যান্যের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা আসামীর তালিকায় নাম দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন কেরানীগঞ্জের ইয়াছিন আহমেদ ও হাজি নাজিম ১৯৭১ সালে ইয়াছিন ছিলেন ৩ বছরের শিশু



গত ১৭ ডিসেম্বর আদালতে দায়ের করা হত্যা মামলায় আসামীর তালিকায় নিজের নাম দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন জিঞ্জিরার অমৃতপুর গ্রামের ইয়াছিন আহমেদ ও হাজি নাজিমউদ্দিন। গতকাল সোমবার পৃথক পৃথকভাবে পাঠানো বক্তব্যে তারা জানান, উদ্দেশ্যমূলকভাবে তাদেরকে মিথ্যা ও সাজানো মামলায় জড়ানো হয়েছে। ৩৬ বছর পর ১৯৭১ সালের ২৫ নবেম্বর সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ঢাকার অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ঢাকা জেলা ইউনিট কমান্ড একাংশের কমান্ডার মোজাফফর আহমেদ খান। মামলায় এজাহার নামীয় আসামী ১৩ জন। বাকি ৭০ জন অজ্ঞাত।

এজাহার নামীয় আসামীর মধ্যে ৪ জন ইতোমধ্যে মারা গেছেন। কেরানীগঞ্জের আটিবাজার ভাওয়াল খান বাড়ির মৃত নূর মোহাম্মদ খানের ছেলে মোজাফফর আহমেদ খান মামলার বাদী। তিনি মামলায় ১৯৭১ সালের ২৫ নবেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৭টা থেকে ১১টা পর্যন্ত ভাওয়াল খান বাড়ি ও ঘাটারচর (শহীদ নগর) এবং পার্শ্ববর্তী দুটি গ্রামে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের দায়ে অভিযুক্ত করেন এজাহার নামীয় ১৩ জনকে। তার মধ্যে ৯নং আসামী জিঞ্জিরার অমৃতপুর গ্রামের মৃত ইদ্রিছ আলীর একমাত্র ছেলে ইয়াছিন আহমেদ। বাবা ইদ্রিছ আলী দর্জি কারিগর ছিলেন।

ইয়াছিন বর্তমানে ইসলামপুর ডায়না ফেব্রিক্স নামক একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কাপড়ের ব্যবসা করেন। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন সময়ে ইয়াছিন আহমেদ ছিলেন ৩ বছরের শিশু। যুদ্ধকালীন সময়ের ২৫ নবেম্বর সংঘটিত ঘটনার সময় তিনি কি করে হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন তা প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে। গতকাল ইয়াছিন আহমেদ তার বক্তব্যে জানান, আমার বর্তমান বয়স ৩৯ বছর। মামলার বাদীকে তিনি চিনেন না, জানেন না।

তার বাড়ি থেকে বাদীর বাড়ির দূরত্ব অনেক। ইসলামপুরে কাপড়ের ব্যবসা চালাতে গিয়ে জমিজমা ও লেনদেনকে কেন্দ্র করে বিরোধ ঘটে কেরানীগঞ্জের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমানের সাথে। জাতীয় পার্টির আমলে এই চেয়ারম্যানের দাপট ও প্রভাবের কাছে পণবন্দী ছিল কেরানীগঞ্জবাসী। ইয়াছিন জানান, লেনদেনকে কেন্দ্র করে মাহবুব সর্বদা মামলায় ফাঁসানোর ভয় দেখাতো। মাহবুবের সাথে বাদী মোজাফফরের সুসম্পর্ক রয়েছে।

বাদীকে ব্যবহার করেই মাহবুব শত্রুতাবশত মিথ্যা মামলায় তাকে ফাঁসানোর জন্য হত্যা মামলায় আসামী বানায় যা রীতিমতো হাস্যকর বলে তিনি জানান। গতকাল হাজি নাজিমউদ্দিন তার বক্তব্যে জানান, মামলার বাদী মোজাফফরকে তিনি কখনো দেখেননি। চেনাজানাতো দূরের কথা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্যই মিথ্যা ও বানোয়াট মামলায় তাকে জড়ানো হয়েছে। তিনি জানান, স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় চকবাজারের একটি দোকানে চাকরি করতেন। তখন তার বয়স ছিল ২৪/২৫ বছর।

কেরানীগঞ্জের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মাহবুবের ফুফাতো ভাইর মেয়েকে হাজি নাজিম বিয়ে করেন। শ্বশুর পক্ষের লোকজনকে ব্যবহার করে মাহবুব তাদের সহায় সম্পত্তি দখলের চেষ্টা চালায়। এতে বাধ সাধেন হাজি নাজিম। এরপর থেকেই মাহবুবের প্রতিপক্ষ হয়ে উঠেন তিনি। সুযোগ বুঝে বাদীর সাথে সুসম্পর্কের জের ধরে হত্যা মামলায় আসামী বানিয়ে ছাড়েন মাহবুবুর রহমান।


সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।