আমরা কেউ অপদার্থ নই, সুতরাং আমরা সবাই... রংপুরে দু’শিক্ষক মিলে দ্বিতীয় শ্রেণির এক আবাসিক ছাত্রকে পিটিয়ে আহত করেছে। আহত শিশুটির নাম মুনতাসির প্রমীত (৮)। সে ইঞ্জিনিয়ার পাড়ার মৃত: আ. হান্নানের পুত্র। আহত প্রমীত রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালের বিছানায় যন্ত্রণায় ছটফট করছে। এই অমানবিক ঘটনাটি ঘটেছে নগরীর নূরপুরে অবস্থিত শিবরাম ফ্রেন্ডস প্রি-ক্যাডেট স্কুলে।
ঘটনাটি প্রকাশ হওয়ার সাথে সাথেই অধ্যক্ষ ফারুক হোসেন মুঠোফোন বন্ধ করে আত্মগোপনে রয়েছেন।
রবিবার সন্ধ্যায় রমেক হাসপাতালের ১৮নং ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, নির্যাতিত প্রমীত যন্ত্রণায় ছটফট করছে। পিতৃহারা এই শিশুটির মা মমতাজ বেগম ছেলের পাশে বসে নিরবে কেঁদে চলছেন।
মমতাজ বেগমের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রমীতকে গত ১২ জানুয়ারী শিবরাম ফ্রেন্ডস প্রি-ক্যাডেট স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণীতে (আবাসিক) ভর্তি করানো হয়। গত শুক্রবার তিনি সন্তানকে একদিনের জন্য বাড়ীতে নেয়ার জন্য নুরপুর শাখা অফিসে যায়।
কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ ফারুক হোসেন প্রমীতকে বাড়িতে না নেয়ার জন্য তোড়জোড় চালায়। অনেক চেষ্টার পর মা তার ছেলেকে বাড়িতে আনে।
এদিকে শনিবার দুপুরে প্রমীতকে গোসল করাতে গিয়ে মা দেখতে পায় গোটা শরীরে আঘাতের কালো চিহ্ন। এ ঘটনা দেখে প্রমীতকে জিজ্ঞাসা করলে সে সব জানায়।
তাৎক্ষণিক বিষয়টি কোতয়ালী থানায় অবগত করে প্রমীতকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
নির্যাতনের শিকার প্রমীত জানায়, বৃহস্পতিবার দুপুরের খাবারের আগে পড়া না পারার অপরাধে মিজান ও রাসেল নামের দু’শিক্ষক তাকে গাছের ডাল দিয়ে পেটায়। এরপর তারা রাতে আবারও প্রমীতকে কিল ঘুষি মারে। এতেও তারা ক্ষ্যান্ত না হয়ে প্রমীতকে আছাড় মারে এবং ঘটনা কাউকে বললে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।
প্রমীত জানায়, এজন্যই প্রমীতকে বাড়ি আসতে বাধা দেয়া হয় এবং ভয়ে মাকেও কিছু বলেনি।
এদিকে প্রমীতের মা উপস্থিত সাংবাদিকের কাছে তার সন্তানের নির্যাতনকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
অভিযোগের বিষয়ে কথা বলার জন্য নূরপুরে গেলে কোন শিক্ষককে পাওয়া যায়নি। অফিস পিয়নের মাধ্যমে ঠিকানা জেনে কামাল কাছনা শাখা অফিসে গিয়ে অধ্যক্ষের কার্যালয় তালাবদ্ধ দেখা যায়। পরে তার সেল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা বন্ধ ছিল। বিষয়টি নিয়ে অন্যান্য আবাসিক ছাত্রদের সাথে কথা বলতে চাইলেও সাংবাদিকদের ভিতরে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি।
অপর দিকে এলাকাবাসী জানায়, সুন্দরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী শিবরাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম ভাঙ্গিয়ে কতিপয় অসাধু ব্যক্তি শিক্ষার নামে বাণিজ্য শুরু করেছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকেও এই প্রতিষ্ঠানের নামে অনুমিত নেয়া হয়নি।
সূত্র: উন্মোচনডটকম ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।