আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অপু বলেছিল বাবার কাছে যাবো



অপু আর আমি বড় হয়েছি এক সাথে। যদিও সে আমার চেয়ে বয়সে বড় ছিল, কিন্তু সম্পর্ক ছিল তুই তুকারীর। অপুর জন্ম হয়েছিল নোয়াখালীর এক প্রত্যন্ত গ্রামে। অপুর বাবা অপুকে দেখতে আসতে পারেননি কেননা তকন যুদ্ধ চলছিল, স্বাধিনতা যুদ্ধ। চিঠিতে জানিয়েছিলেন উনি আসবেন, অপুর জন্য স্বাধিনতার লাল সুর্য নিয়ে আসবেন।

শারিরীক ত্রুটির কারনে উনি যু্দ্ধে জেতে পারেননি। কিন্তু স্বাধিনতার বীর সেনানিদের নিজের বেলি রোডের সরকারী বাড়িতে আশ্রয় দিয়েছিলেন। নিজের হাতে রেধে খাইয়িছিলেন। উনার রেখে যাওয়া ডাইরিতে তিনি লিখেছিলেন সেসব কথা। অপুর জন্য ভালবাসার কথা।

নিজেকে তিনি স্বাধিনতার সামান্য সেনানী ভেবেছিলেন। কিন্তু এ বীর সেনানী বুঝেননি তার নিজের দেশের কিছু দালাল তাকে ধরিয়ে দিবে। অপুর বাবা কবে শহীদ হয়েছিল আমরা জানিনা, উনি কবে নিখোজ হয়েছিল। অপু তার বাবার জন্য অপেক্ষা করেছিল, তার মা লাল শাড়ি বদলে যেদিন সাদা শাড়ি পড়লেন সেদিন সে অপেক্ষা শেষ হয়েছিল। অপু আমার সাথে খেলতো,ইর্ষার সাথে টেবিলে রাখা আমার বাবার চশমা ধরত, বলত আমার বাবারও আচে।

মাঝে মাঝে অপু বলত, তোর বাবাটা কি ভালরে। অপুর বাবা কি জানেন তার ছেলেটা তাকে কত ভালবাসতো? অপু বড় হয়েছিল বাবার স্নেহ ছাড়া, অপু সব সময় তার বাবাকে খুজতে। আনমনে অপু তার বাবার ছবিতে হাত বুলাতে। সুখী সময়ের ছবি। অপুর মার আর বাবার ছবি।

অপু বলত মা আর একন এরকম করে হাসেনা। অপুর রাগ হতো, অভিমান হতো অপুর অসম্ভব রকমের কষ্ট পেতো। অপু জানতে চেতো কেন তার বাবা আসেনি? সময়ের সাথে সাথে অপু জানতে চেয়েছিল কেন তার বাবাকে হত্যা করা হয়েছিল? একটি স্বাধিন দেশে চাওয়া কি অপরাধ ছিল? অপুর আমার সাথে গোলাম আজমের বিচার দেখতে গিয়েছিল। অপু তার বাবা হত্যার বিচার চায় বলেছিল। সে দিন বিকালে অপু বলেছিল, একটা পাথর সরল বুক থেকে, বাবাকে যদি একবার দেখতে পেতাম, বুকে জড়িয়ে ধরতাম।

বাবার কাছে যেতে বড় ইচছা করছে। অপু তার বাবা হত্যা বিচার একনও চায়। অপু তার বাবার কাছে যেতে চায়।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।