কবি
২০০৭ প্রকাশিত দ্য ওয়াল্ড উইদাউট এন্ড এর পর কেন ফলেটের পরবর্তী উপখ্যান 'দ্য সেঞ্চুরি ট্রায়োলজি'। এটা এখনো এ-ফোর সাইজের কয়েক পৃষ্টার মধ্যে সীমাবদ্ধ। কিন্তু এই কয়েক পৃষ্টাব্যাপী তার উপাখ্যানের পরিকল্পনার জন্যই ইতোমধ্যে তিনি আয় করেছেন ২৪ মিলিয়ন পাউন্ড। 'দ্য সেঞ্চুরি' শেষ হবে তিন খন্ডে। দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধ আর শীতল যুদ্বের সময় ইংল্যান্ড, জার্মান আর রাশিয়ায় বসবাসকারী এক পরিবারের তিন প্রজন্মের কাহিনী নিয়েই গড়ে উঠবে তার দ্য সেঞ্চুরি ট্রায়োলজি।
তার আমেরিকা কেন্দ্রিক প্রকাশক আশা করছে ২০১০ এ প্রকাশ করা হবে এর প্রথম খন্ড। এরপর দুই বছর অন্তর অন্তর বাকি দুই খন্ড। ফলে এর সম্পূর্ণ প্রকাশ সমাপ্ত হবে ২০১৪ নাগাদ। অথচ এরই মধ্যে এর আয় ২৪ মিলিয়ন পাউন্ড।
কেন ফেলেটের জন্ম ১৯৪৯, কারডিফ, ওয়েলস ।
জন্মের দশ বছর পর পরিবার সুদ্ধ চলে আসেন লন্ডনে। ১৯৬৭ সালে ইউনির্ভাসিটি কলেজ লন্ডন-এ ভর্তি হন। তার একাডেমিক বিষয় ছিলো দর্শন, আর তিনি এই সময়ই যুক্ত হন বাম রাজনীতির সাথে। ১৯৬৮তে প্রথম বিয়ে। সাংবাদিক হিসাবেই তার কর্ম জীবন শুরু করেন।
তবে সাংবাদিকতা পেশায় বৈচিত্র খুজে না পেয়ে সে পেশা তিনি ত্যাগ করেন। ১৯৭০ সালে তিনি এভারেস্ট বুক-এর এমডি পদে নিযুক্ত হন। নেই সময়েই শখের বসে ফিকশন লেখা শুরু করেন। প্রথম থেকেই তিনি বেশ সাফল্য লাভ করেন। কিন্তু ১৯৭৮এ প্রকাশিত 'দ্য আই অফ দ্য নিডল' তাকে খ্যাতির শীর্ষে নিয়ে যায়।
১৯৭৯ তে বইটি বেস্ট সেলার খ্যাতি লাভ করে। এর সাথে লাভ করেন বিপুল অর্থ। এরপর থেকে তার প্রতিটি বই প্রায় বেস্ট সেলার । কিছু কিছু এর মধ্যেই চলচ্চিত্রায়িত হয়েছে। ১৯৭০ সালের শেষের দিকে তিনি লেবার পার্টির সাথে যুক্ত হন।
এই সূত্রেই পরিচয় হয় বারবারা ব্রেয়ারের সাথে। ১৯৮৪ তে তার বিয়ে করেন। ১৯৯৭ এর নির্বাচনে বারবারা প্রথম নির্বাচিত হন। এরপর ২০০১ ও ২০০৫ উভয় নির্বাচনেও তিনি নির্বাচিত পারলামেন্ট সদস্য হিসাবে। কেন ফলেট লেবার পার্টিও গোড়া সমর্থক এবং পার্টির উল্লেখযোগ্য ফান্ডরাইজার তিনি।
ফলেটের ফিকশন গুলোকে বলা হয়ে থাকে ইতিহাস ভিত্তিক থ্রিলার। প্রচুর লিখেছেন তিনি। এখন পর্যন্ত ২৯ টা বই প্রকাশিত। তার সর্বশেষ বই 'দ্য ওয়াল্ড উইদাউট ওয়ার' ২০০৭ এ প্রকাশিত। 'আই অব নিডল', 'দ্য কি টু রেবেকা', 'পিলার অব দ্য আর্থ', 'এ প্লেস কল্ড ফ্রিডম', 'কোড টু জিরো', 'হোয়াইটআউট', 'দ্য ওয়াল্ড উইদাউট' ইত্যাদি তার বহুপঠিত গ্রন্থ।
তার প্রতিটা বই বেস্ট সেলার। প্রতিটা বই তাকে বিপুল বিত্ত এনে দিয়েছে।
টনি ব্লেয়ারের স্মৃতিচারণের জন্য তার আমেরিকান প্রকাশক ৪.৬ মিলিয়ন পাউন্ড নিশ্চিত করেছেন কেন ফলেটের জন্য। এজতীয় চুক্তি একজন জনপ্রিয় লেখককে নির্দোষ প্রমান করে। এভাবেই তিনি ভাবেন নিজের সম্ভন্ধে।
সমালোচকদের আলোচনা থেকে বই বিক্রির সাফল্য তাকে বেশি আনন্দ দেয়।
৫৮ বছর বয়স্ক ফলেট তার অতীত বামঘেসা দৃষ্টিভঙ্গির জন্য একটুও লজ্জিত নয়। তিনি বলেন, নিজেকে দারিদ্রতার মধ্যে নিক্ষেপ করতে আমি প্রস্তুত নই।
এমি বারনোয়ার, ফলেটের আমেরিকান প্রকাশক যিনি 'দ্য সেঞ্চুরি ট্রায়োলজি' ইংল্যান্ড, জার্মান, স্পেন ও আমেরিকায় বিপনন করবেন, তিনি বলেছেন, "তিনি এখনও এটা লেখা শুরু করেননি। তবে প্রথম খন্ডের খসড়া প্রস্তুত করে ফেলেছেন।
বইটিতে ইতিহাসের সাথে মিশে থাকবে রাজনীতি। এটাও একটা থ্রিলার। " এর সাথে তিনি আরও যোগ করেন, " ইংল্যান্ডে তিনি যথার্থ ভাবে মূল্যায়িত হননি। এর কারণটা আজানা। আমেরিকায় ইংল্যান্ডের লেখক হিসাবে তিনিই সবথেকে জনপ্রিয়।
দ্য সেঞ্চুরি ট্রায়োলজির জন্য তাকে ২৪ মিলিয়ন পাউন্ড দেওয়া হবে। এমনকি পরে এর থেকে বেশিও দেওয়া হতে পারে। এর অর্থমূল্য নানা বিষয়ের উপর নির্ভর করছে। "
ফলেটের 'পিলার অব দ্য আর্থ' ১৯৮৯ সালে বেস্ট সেলান হয়েছিলো। আর এই বই এর ধারাবাহিকাত 'দ্য ওয়াল্ড উইদাউট এন্ড'।
এই বইটির সাফল্য বাড়ানোর জন্য ফলেট এখন অস্ট্রেলিয়া সফররত। গত ১২ নভেম্বর মোলবোর্নে জমকালো আনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ১১১১ পৃষ্ঠার আরও একটি বইয়ের চুক্তি স্বার করলেন তিনি। তার প্রকাশক দাবি করেন করেন তারা ফলেটের বই সারা পৃথিবীতে ১০০ মিলিয়ন কপি বিক্রি করেছেন।
তিনি একজন ব্যবসা সফল লেখক। তবে ইল্যান্ডে তিনিই একা নন।
তার সাথে জেনিফার আর্কার বেশ মিল খঁজে পাওয়া যায়। ফলেট টনি ব্লেয়ারের জন্য যে ভুমিকা রেখেছিলো, ১৯৯০ সালে জেনিফার প্রায় একই ভূমিকা রেখেছিলো লেবার পার্টির জন্য। জেনিফার তিনটি বইয়ের জন্য ম্যাকমিলানেসর সাথে চুক্তিবদ্ধ হন। টাকার পরিমান নেহাত কম নয় -- ১২ মিলিয়ন পাউন্ড মাত্র ছয় বছরে।
গোয়েন্দা কাহিনী 'আই অব দ্য নিডল' এর সাফল্য ১৯৭৮এ আসার আগ পর্যন্ত ফলেটকে নিদারুন সংগ্রাম করতে হয়েছে।
বইটা ১০ মিলিয়ন কপি বিক্রি হয়েছে। এ নিয়ে যে ফিল্ম হয়েছে তাতে অভিনয় করেছেন ডোনাল্ড সুথারল্যান্ড ও ক্রিস্টোফার কোজেনভ।
কিন্তু এত কিছুর পরও এগিয়ে আছেন হ্যারি পটার সিরিজের লেখিকা জে কে রোলিং। শুধু মাত্র হ্যারি পটার সিরিজের বই প্রকাশক আর এর চলচ্চিত্র প্রযোজকদের কাছ থেকে তিান আয় করেছেন ৫৪৫ মিলিয়ন পাউন্ড। এই বিপুল পরিমান অর্থেও বিনিময়ে তিনি বিশ্বের দ্বিতীয় ধনী মহিলা।
তবে তার আগের অবস্থানে আছেন টক শো উপস্থাপিকা ও লেখিকা অফরা উইনফেরী। ফলেটের ২৪ মিলিয়নের চুক্তি ইংল্যান্ডের বই বাণিজ্যেও রেকর্ড ভাঙলো। ২০০১ সালে সিমন এন্ড চুস্টার মেরী হিংগার কাকের্র সাথে ২১.৫ মিলিয়ন পাউন্ডের চুক্তি করেছিলো দুটি ফিকশনের জন্য।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।