জীবনকে খুব কাছ থেকে দেখতে চাই। গতানুগতিকতার গন্ডি থেকে মুক্তি চাই। এতে হয়তো শুনতে হবে অনেক অপমানের বাণী। ভয় করি না।
তখন এইচ এস সি পাস করলাম মাত্র।
তারপর কোথাও তো ভর্তি হতে হবে। তাই নেমে গেলাম ভর্তি যুদ্ধে। যাই হোক অবশেষে একটা প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে গেলাম। আমার সীট পড়ল ঢাকা ইউনিভার্সিটির কলা ভবনে। জীবনে প্রথম ভর্তি পরীক্ষা তাই কিছুটা নার্ভাস আমি।
যাই হোক আমি আমার রুমে গেলাম ভর্তি পরীক্ষার জন্য। গিয়ে দেখি আমার বেনচিতে আমরা ৩ জন। আমার দুই পাশে দুই তরুণী আর মাঝে আমি।
ভর্তি পরিক্ষা তখনও শুরু হয় নাই। এর মাঝে ভাবলাম পরিচয় পর্বটা তাদের সাথে সারব কিনা?আমি আবার মেয়েদের সাথে ভাল একটা কথা বলতে পারি না।
তাই ভাবলাম দরকার নেই। যা হবার হবে। যাই হোক ওরা নিজেরাই আমার সাথে পরিচিত হতে আগ্রহ প্রকাশ করল। প্রথমে বাম পাশের জন আমাকে বলল আমার নাম ফারিয়া আমি ভিকারুন্নেসা থেকে এইচ এস সি পাশ করলাম। কিছু না বললে আবার কি মনে করে তাই ভদ্রতা করে বললাম,আমি বললাম আমি ইমির ,নটর ডেম থেকে পাশ করলাম।
ডান পাশের জনের নামটা মনে নেই। কিন্তু তার কলেজের নামটা মনে আচ্ছে,বদরুন্নেসা কলেজ।
প্রথমে ফারিয়া বলল দেখ ইমির এইটা ভর্তি পরিক্ষা । এত সিরিয়াসের কিছু নাই। তা ছাড়া তুমি ছেলে তোমার সাথে আমার কোন বিরোধ নাই।
সো আমি আশা করব তুমি আমাকে হেল্প করবা। আমি কোন মতে ঢোক গিল্লাম
আমি মনে মনে বললাম এই মেয়ে বলে কি?আমি ওকে বললাম দেখ আমি কিছু পারি না। আমারটা দেখলে তুমি আরও ধরা খাবা।
-তুমি নটর ডেম থেকে পাশ করছ। নিশ্চয়ই ঘাস খেয়ে পাশ করনি।
তুমি যে ঢং করছ তা আমি বুজতে পারছি। সো নো মোড় টক প্লিজ।
ডান পাশের জন তখনও কিছু বলে নি।
ভর্তি পরিক্ষা শুরু হল। আর একটু পর পর ফারিয়া দেখি আমাকে ডাকছে।
হায়রে আমার কপাল। এমন সময়েই আমাকে ডাকলা যখন আমি ভর্তি যুদ্ধে ব্যাস্ত। আমি তার কথায় কান দিলাম না। আমাকে বলে এই ইমির। ইমির শোন।
আমি তাও কান দিলাম না। এবার ডান পাশের জন। সে বোরখা পরিহিতা অবস্থায় ছিল।
সে আমাকে বলল এই, এই তোমার হাতটা প্রশ্ন থেকে সরাও না।
এই দিকে আমার মেজাজটাও খারাপ হয়ে যাচ্ছে।
আমি হাতও সরালাম না। যথারীতি লিখতে লাগলাম। হটাত দেখি হাতে নরম কি যেন লাগছে। দেখি ফারিয়া আমার হাত ধরে ফেলেছে। আমার হাতটা খাতা থেকে সরিয়ে নিল।
একি একে বারে হাত!জীবনে ফার্স্ট টাইম কেউ আমার হাত ধরল তাও এ অবস্থায়!
ডান পাশের জন আমার শার্ট ধরে টানছে। বলছে
আরেকবার দেখাও।
আমি পড়লাম মর জালা অবস্থায়। খুব বিরক্ত হতে লাগলাম। আমাদের দেশের মেয়েরা যে এত খানি এগিয়ে গিয়েছে যে পর পুরুষের হাত ধরে টানা টানি।
আরেকজন আবার জামা কাপড় ধরে টানা টানি।
হটাত আল্লাহ আমাকে রহম করল। আমাদের যেই ম্যাডামটা গার্ড দিচ্ছিলেন তিনি ফারিয়াকে বললেন এই যে মেয়ে ,এসব কি হচ্ছে?তুমি ঐ পিছনের বেনচিতে গিয়ে বস তো।
মেয়েটা গাই গুই করছিল । যেতে চাচ্ছিল না।
ম্যাডাম একটা ধমক দেয়াতে সে ভয়ে ভয়ে চলে গেল। এইটা দেখে পাশের মেয়েটাও একটু সাবধান হয়ে গেল। যাই হোক বাকি সময়টা বেশ আরামেই পরিক্ষা দিলাম।
পরিক্ষার পর মনে হল যদি আজ পরিক্ষার হলে না থেকে অন্য কোথাও থাকতাম । তাহলে স্মৃতিটা খারাপ না হয়ে মধুর তো হতে পারত।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।