অতীত খুড়ি, খুঁজে ফিরি স্বজাতির গুলিবিদ্ধ করোটি
উনাকে দেখলে আমার ক্যালকুলাসকে মনে পড়ে! টিনটিনের আলাভোলা কানে কালা প্রফেসর। বাস্তবের জয় গোস্বামী তারো বেশি। আমাদের প্রজন্মের প্রবাদপ্রতীম। আমার জীবনানন্দ কিংবা রবীন্দ্রনাথ (এ তুলনা একান্তই আমার)। অমনিবুকসের রিডিং সার্কেলে তার আসার খবর পেয়ে দেরি করিনি।
অফিসের আধকরা কাজের লিস্টি কাগজে লিখে পিসির উপর ট্যাগ করে রেখে দিলাম রম্যর জন্য। আমি ছুট জয়ের খোজে, তার নাগালের মধ্যে যেতে।
গিয়ে খানিকটা মন খারাপ। শূনি জয় আসছেন না। আসার কথা সৈয়দ হকেরও।
তিনিও না। অমনিবুকসের এই আড্ডাটা ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের। কিছু অধ্যাপক আসেন তাদের মুধুসুদনীয় চর্চা নিয়ে। কিছু টিচারস পেট থাকে সবান্ধবী হাহাহিহি করে যে কোনো বাক্যে। তেলে মাখা তালিয়া বাকিদের চেয়ে জোরে বাজে।
একটু অনুগ্রহ, একটু ভালো নাম্বার। আহারে।
কায়সার হক যত ভালো লেখেন, তার চেয়ে পড়েন ভালো। উল্টোটা খাটে খন্দকার আশরাফ হোসেনের ক্ষেত্রে। উনার নুরজাহান চোখে জল আনা কবিতা, অনুবাদটা একদমই ছোঁয় না।
খাদেমুল হোসেন একটি ছোটো গল্প পড়লেন- আউল। ভালোই। এবং স্লিভলেস ব্লাউজে সুগন্ধী মাখা বিগতযৌবনারাও তাদের রচনা শোনালেন। কি জন্য বসে ছিলাম জানি না। তবে বসেছি যেহেতু শুনতে তো দোষ নেই।
এরই মধ্যে জয় এলেন। বাঙলাভাষীদের ইংরেজী চর্চায় তার অরুচি নেই। থাকার কথাও নয়। স্কাই লেভিন তার কিছু কবিতা অনুবাদ করেছেন। সৎ স্বীকারোক্তি, আমি ভালো পাইনি।
মাঝে চা-নাস্তা। এরপর সেই বিনয়কণ্ঠে সুরম্য কাব্য। শুরুটাই দারুন_ আমি এই ব্যাগ ভরে কবিতা নিয়ে এসেছি আপনাদের শোনাবো বলে।
একজন কবি তার কবিতাকে সবচেয়ে ভালো বোঝেন। প্রতিটা শব্দ ও অক্ষরের ব্যঞ্জনা তারই শুধু জানা।
তাই আবৃত্তিকার যখন কবি নিজে তখন সোনায় সোহাগা। জয় পড়লেন। বাটার পোষাক দিয়ে শুরু করলেন। মেঘ বালিকা, কি কি মনে পড়ে। আয়োজকরা জানালেন হাতে সময় কম, জায়গা ছেড়ে দিতে হবে।
তাছাড়া মঙ্গলবার পাবলিক লাইব্রেরিতে কবি কবিতা পড়বেন, সেখানে শুনে নেয়া যাবে প্রাণভরে। তাতে কি মনভরে। কোথায় বারোয়ারি সভা! আর কোথায় স্পর্শ দূরত্বে জয় গোস্বামী। টেলিপ্যাথি না কাকতালীয় জানি না। আমার প্রিয় দুটো কবিতা দিয়ে শেষ করলেন জয়।
প্রাক্তন আর এই একটা দুপুর।
(একটা আর্জি রইল, দেশ-এর '৯৮ পুজা সংখ্যায় বোধহয় বেরিয়েছিল এই একটা দুপুর কবিতাটা। কারো কাছে থাকলে তুলে দিলে কৃতজ্ঞ থাকব। )
জয় উঠলেন। একরাশ মুগ্ঘতা সঙ্গী করে ফের ছুটি নিত্যকার ছাপোষা জীবনে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।