পরিবর্তনের জন্য লেখালেখি
আধুনিক মানুষের সবচেয়ে বড় সংকট মনে হয় জৈবিক অস্তিত্বের নয় । বরং মানসিক বিচ্ছিন্নতাবোধ । সবাই থেকেও নেই । সবাই সবার পাশাপাশি , কেউ আমার নয় । সবাই আমরা সংযুক্তি খুঁজি সম্পর্কে ,অথচ ভুলে যাই সম্পৃক্ত হতে ।
এই বিচ্ছিন্নতাবোধ যা বিস্তৃত বিশ্বের প্রতিটা মানুষের ভিতর । দা কসমিক হরর অফ আইসোলেশন । মানুষ তাই পাগলের মত খোঁজে আশ্রয় -- দায়হীন , দায়িত্বহীন , মুক্ত আন্তর্জালে !
পু: হাই ডক্টর , গুড মর্নিং
না : প্রভাত ,তবে সু করার দায়িত্ব নিলাম না ।
পু: আপনার উত্তর গুলো এমন হয় কেন সব সময় ? কালকে কোথায় ছিলেন ?
না : বাসায় । আমার উত্তর গুলো হয় না ।
পু: মন খুব খারাপ ছিলো ?
না : হুম ।
পু: আপনি মনে হয় খুব আবেগী ।
না :
একটা মৃত্যু মনে করিয়ে দেয়
পৌনপুনিক মৃত্যু গল্প
অংকের সাথে মিলে যায় প্রকৃতি
মিলে যত দর্শন আর যত অভিজ্ঞ ভাগাড়
জীবন পঞ্চ নাটিকার আঁধার
আর রঙ্গ মঞ্চের মৃত সৈনিক
দেখে দেখে ক্লান্ত চোখ
অশ্রু ভুলে এবার ভাবে রক্ত ঝরুক
তবু লাল হোক কিছু বর্ণহীন শ্রান্ত জীবন
( নারী তার মৃত প্রেমিকের কবরটা নাড়াচাড়া করতে করতে নির্লিপ্ত আর উদাস হতে থাকে। )
পু: এইটা কি মনের ভাব ? নাকি মনের ভাবনাটাকে কবিতার মধ্য দিয়ে প্রকাশ ?
না : এইমাত্রই তো লিখলাম , আপনার কথার উত্তরে । যা ভাবতে ইচ্ছা হয় ভাবেন ।
আমার কোন বিকার নেই । প্রকার ও নেই । স্রেফ নিরাকার অনুভব।
( আজ কিছুই ভালো লাগছে না । প্রিয়মের মুখটা মন জুড়ে ।
কি ইনোসেন্ট একটা মুখ । দুমড়ে মুচড়ে যাওয়ার পরে কেমন হয়েছিলো দেখতে? ওরা কেন লাশ দেখতে দিলো না । সত্যিই কি সহ্য হতো না !)
পু: না না ভাই!আপনি ভালো লিখেন তাই বললাম। নতুন কোন লেখা কি আজ আমরা পড়তে পারবো ?
না : এক কাজ করেন। এইটা পোস্ট করে দেন ,নিজের নামে ।
পু: হা হা হা হা । আমি একটা লেখা পোস্ট করবো । পড়ে দেখবেন তো ?
না : ধুরু ! আপনি অলস । মহা অলস । বললাম কবিতাটা পোস্ট করে দিতে ,অবশ্য যদি এটা কবিতা হয়ে থাকে আদৌ ।
হয় নাই মনে হয় । কিছুই হয় নাই ।
পু: না না , হয়েছে তো । আর অলসরা কি এত সকালে উঠে ?
না : উঁহু , জড় হয়েছে । জীব হয় নাই , প্রান নাই।
( আমি নিজেই আজকে প্রানহীন । ছেলেটা এত বিরক্ত করছে কেন! আমিই বা এত কথা বলছি কেন ! কষ্ট হচ্ছে , কষ্ট হচ্ছে ! কথা বললে অন্তত অতীত ভুলে থাকা যায়। )
পু: তবে আপনার লেখা আমার নিজের নামে পোস্ট করা কি ঠিক হবে?
না : সবই ঠিক এই দুনিয়ায় , কিছুই ভুল না । সবটাই জীবন । আমার নামের নেশা নাই রে ভাই , কার নামে প্রকাশিত হলো , কিচ্ছু যায় আসে না ।
( একটা ২৩ বছরের তরতাজা প্রান যেই দুনিয়ায় ভালোবাসি শোনার আগেই মরে যায় , সেই দুনিয়ায় আবার ভুল কি ? সব ঠিক , সব ঠিক , কোথাও কোন পাপ নেই)
পু: মানলাম । তবে সব কিছু না। আমার লেখাটা পোস্ট করেছি । পড়ার পরে মন্তব্য করবেন ।
না : দাবী না অনুরোধ?
পু: আপনার কি মনে হয় ?
না : পালটা প্রশ্ন করে এড়াতে পারবেন না ।
বিতর্কে চাম্পিয়ান ছিলাম ।
পু: জানি জানি ।
না : এই সব তরিকা এখনো ভুলি নাই ।
পু: হা হা হা হা । আর কি কি ভুলেন নাই ?
না : কিছুই ভুলি নাই ।
মদ খেয়ে ভোলা যায় কিনা দেখতে চাইসিলাম ।
পু: যেমন ?মানে , ওয়াইন?
না : মদ খেয়ে দেখি সব মনে আছে ।
পু: হোয়াট !!!!!!!!!
না : খালি "মদ খেতে হবে" - এইটাই ভুলে গেসি ।
পু: আপনি কিন্তু খুব গুছিয়ে কথা বলেন ।
না : মানুষটা অগোছালো ।
পু: মনে হয় না।
না : মনের উপর এত ভরসা করিও না যুবক,
মন হলো পাখির মতন
দানায় দানায় তার বিন্দু বিন্দু রোখ
আর পেট ভরা দানা খাওয়ার শোক !
পু: মাঝে মাঝে আপনাকে ফিলোসফার মনে হয় ।
না : ফিলোসফার কে নয় ?
একজন রিকশাওয়ালাকে জিজ্ঞাসা করুন,
কিংবা ভিখারীকে ।
অথবা ফার্মগেটে যে বেশ্যা ঘুমায় না ,
তারো জীবন নিয়ে কিছু ফিলোসফি আছে ।
আমরা মধ্যবিত্ত কৌলিন্যে তার নাম দেই দর্শন ।
আর ওরা বলে কষ্ট ।
কখনো খিদা ।
আর কখনো খুব অস্ফুট চিতকার করে ,
"কেমুন জানি লাগে আপা! গরীব মানুষ ! "
পু: জীবন যেখানে যন্ত্রনা, তাই না?
না : আনন্দ ও আছে । তবে দুইটাই ক্ষণস্থায়ী ।
দুঃখকে দীর্ঘ মনে হয়
কারন আমরা কষ্টকে চুমুকে চুমুকে পান করি ।
কিন্তু আনন্দকে গিলে খাই ,
সরীসৃপের মত ।
বড় বেশি তাড়াহুড়া !
পু: খুব ভালো বলেছেন । আপনার সাথে কথা বললে মনে হয় পাশের বাড়ির মেয়েটার সাথে কথা বলছি । খুব ভালো লাগে । আমি কি আপনার বন্ধু হতে পারি ? যদি মনে করেন ক্ষণস্থায়ী , তবে তাই !
না : বন্ধু এখনো হই নাই ? অ-বন্ধুদের এত সময় দেই না ।
তাও আবার অফিস টাইমে । ঃ) আপনার লেখায় মন্তব্য করেছি ।
পু: আপনার অফিস কোথায় ?
না : "____" । আপনি কি জার্নালিস্ট ?
পু: কেন ?
না : সাংবাদিক হলে আপনাকে একটা লিংক পাঠাইতাম। স্কলারশীপ , সাংবাদিকদের জন্য ।
খুব ভালো । দেখেন , দিলাম ।
পু: থ্যাংক্স ডক্টর ।
না : ওকে । একটু সাংবাদিক বন্ধুদের জানিয়ে দিয়েন ।
বাংলাদেশ থেকে কেউ পেলে খুব ভালো লাগবে । শুনেন , আমার এই কথোপকথনটা ভালো লেগেছে , যদি পোস্ট আকারে দেই, আপনার আপত্তি আছে ? একটু বদলে দেব অবশ্য ।
পু: না না , সমস্যা নেই। আপনি কি এখন এটাকে লেখার জন্য তৈরী করছেন ?
না : হ্যাঁ ।
পু: আপনি কি আরো কিছুক্ষণ কথা বলে তার পরে পোস্ট করতে চান?
না : ডিপেন্ডস ।
কি নিয়ে কথা হয়েছে , তার উপর নির্ভর করছে। আমি কলা খেয়েছি ধরনের কথা হলে তো আর পোস্ট করবো না, তাই না ?
পু: আপনার কি তাই মনে হয় ?
না : কি মনে হয় ?
পু: ঐ যে কলা খাওয়ার কথা বললেন । আমরা কি এতক্ষণ কলা দিয়ে নাস্তা করলাম ?
না : আরে , ওটা তো এক্সাম্পল । কলা মনে হইলে পোস্ট করতে চাইতাম? কি বলেন আব ঝাব , বুঝি না । এ রকম কথায় কথায় স্লুইস গেট লাগাইতে হইলে তো ভাই কথা বলাই মুশকিল!
পু: না না , রেগে যাবেন না ।
বন্ধু বলে কথা !
না : রাগি নাই । এত্ত রাগারাগি করার সময় নাই । থাকলে এত দিনে বড় শিল্পী হয়ে যেতাম ।
পু: কোনটা ? চিত্র নাকি সঙ্গীত ?
না : হই মিয়া ! চিত্রে কি রাগারাগি করে ? চিত্রে তো দাগাদাগি করে!
পু: ঐ দাগাদাগিতেও রাগ প্রকাশ করা যায় । পাবলো পিকাসোর নাম শুনেছেন ?
না : হুম।
লোকটা জ্যামিতি পারতো না । চোখেও সমস্যা ছিলো । এক কান বড় আরেক কান ছোট দেখতো। আই স্পেশালিস্ট সাহায্য করতে পারে নাই আর চিকিতসার টাকা ছিল না বলে লোকটা শেষ পর্যন্ত না পারতে শিল্পী হয়ে গেলো । আহা রে!
পু: হু ।
না : হি হি হি ।
পু: পিকাসোর ফেমাস ছবিটায় কিন্তু রাগ , রাগ আর রাগ ! শুধু "___" ছাড়া !
না : হা হা হা । তাই নাকি ! ছবি খুব পছন্দ করেন? আমি খুব পছন্দ করি । কিন্তু বুঝি না । একদম বকলম ।
পু: বিয়াও খুব পছন্দ করেন । হা হা হা।
না : হাসেন কেন? বিয়া পছন্দ করি মানে?
পু: ৯০ বছরে বিয়া করেছে । আরে চেইতেন না , আমি পিকাসোর কথা বলেছি ।
না : ও ।
হুম । তা ৯০ বছরেই তো বিয়ে করা দরকার। তখন সঙ্গীর প্রয়োজন অনেক বেশি ।
পু:হ্যাঁ । আপনি কি ৯০ বছর বাঁচবেন ?
না : নাহ।
পু: তাইলে বিয়ের কথা বললেন ?
না : বললাম,৯০ বছরে কেউ বিয়ে করতে পারলে অবশ্যই করা উচিত । বয়স ৯০ হয়ে গেছে বলে বিয়ে করা যাবে না , এইটা ভাবার কোন মানে হয় না ।
পু: একদম ঠিক । আল্লাহ যেন আপনাকে ৮০ বছর বাঁচিয়ে রাখে । আর আমাকে ৯০ বছর ।
না : ঐ ! বদ দোয়া দেন ক্যালা ? ৮০ বছর বাঁচলেই কি আপনারে বিয়া করুম?
পু: আমি কি কইছি ! আর ৯০ বছর হলেই আপনাকে বিয়ে করবো , এইটা কি করে ভাবলেন?
না : না না । আপনি তো এখনি করতে চান, এইটা বুঝি ।
পু: আপনি কি রাজি ?
না : আরে , আপনার না পাত্রী দেখতেসে !
পু: আমি কি বলবো এই পাত্রী আমার পছন্দ হয়েছে ?
না : কি আজব! আপনি কি বলবেন , না বলবেন , আমাকে জিজ্ঞেস করছেন কেন?
পু: বেতন ২২ হাজার । চলবে ?
না : হা হা হা হা হা । আপনি তো দেখি ভয়াবহ মজার মানুষ ।
শুনেন , এই সব চিন্তা বাদ দেন । আপনার পরিবারের দেখা পাত্রীকে দেখেন ।
পু: আমার তো আপনাকেই পছন্দ হচ্ছে ।
না : আপনি আমাকে চেনেন না । এই সব চিন্তাও কইরেন না ।
এইটা ঠিক না ।
পু: কি করে বুঝলেন ?
না : আমার যা মনে হলো বললাম । মানা , না মানা আপনার ব্যাপার ।
পু: নিজের উপর এত অগাধ বিশ্বাস আপনার ? এতটা কি ভালো ?
না : আমার নিজের জন্য ভালো । বাকিদের কথা জানি না ।
আমি উঠলাম , লাঞ্চে যাব ।
পু: কাল কথা হবে ?
না : জানি না । দরকার আছে ?
পু: আপনি কি শুধু নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত থাকেন?
না : হঠাত এই কথা কেন ? আপনি আপনার কাজ কর্ম, লেখালেখি , ক্যারিয়ার নিয়ে ব্যস্ত থাকেন না ?
পু: থাকি ।
না : তারপরও আমি একলাই আত্মকেন্দ্রিক ?
পু: আমি ঠিক তা বুঝাইনি । হয়ত জার্নালিস্ট হইলে বুঝাইতে পারতাম ।
না : হা হা হা । আপনি জার্নালিস্ট না ? খালি খালি স্কলারশীপের খবর দিলাম?
পু: জার্নালিস্ট এর মত । ইনফরমেশন নিয়েই তো কাজ করি । বুঝাইতে পারলাম ?
না : নাহ ।
পু: কেন ?
না : কারন আপনার ছন্দ মিলে নাই ।
ঃ)
পু: আরে বাবা , আমি তো আপনার মত না। সবাই আপনার মত ছন্দ লিখলে তো বাংলাদেশ আজকে অনেক উপরে থাকতো ।
না : হা হা হা হা হা হা। ফ্ল্যাটারি ওন্ট গেট ইউ এনি হোয়ার । আমি তোয়াজে ভুলি না বালক ।
বাই বাই ।
পু: আরে , খেপলেন কেন?
না : খেপি নাই রে বাবা , লাঞ্চে যাব । বাই ।
পু: ঠিক আছে যান । বাই ।
না : বাই ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।