যা লিখি তাই অখাদ্য হয়। তবুও চেষ্টায় আছি....
তার সাথে নেটে পরিচয়। নেটেই ঘরসংসার,বাচ্চাকাচ্চার বাপ মা। আজ বাজার করে আনি তো কাল লবন অথবা ডাল শেষ। তার বকুনি,এই এতো কিপ্টে কেনো?সব বেশী বেশী করে আনবা।
হা হা হা,ভালই চলছিলো আমাদের মান অভিমানের ভার্চুয়াল লাভ কাম সংসার। ফোনেও কথা হয়েছে,হয়ও মাঝে মাঝেই। সবকিছু ঠিক। পড়াশুনার খাতিরে আমার বাইরে থাকা। এই বাইরের একাকিত্বের জীবনে সেই যা একটু সান্তনা।
তারসাথে কথাবলি,সুখ দুঃখ শেয়ার করি। ভালোবাসি,তাকে ভালোবাসাই। দিনগুলো স্বপ্নের মতই কাটছিলো। সে প্রায়ই বলে,আমি কবে দেশে আসবো। তার নাকি কিছুই ভালোলাগে না।
তার অনেক প্লান আমাকে নিয়ে। প্রথমত সংসার করার স্বপ্ন দেখে সে। তার বাসায় তার কোনো স্বাধীনতা নাই। তার চলাফেরার গন্ডি সীমিত। তার প্রথম ইচ্ছে হলো,আমার জীবনে এসে সে স্বধীন হতে চায়।
মুক্ত পাখির মতো। আমিও তাকে সেই আস্বাস দিয়েছি। সে মহা খুশি। বিশেষ করে আমার উদারতায় সে মুগ্ধ। কিন্ত আমার আবেগপ্রবনতায় তার প্রবল আপত্তি।
আমার দায়িত্বজ্ঞান বোধও তার কাছে একটা বোঝা। কারন সে বেখেয়ালি। মোটেই কেয়ারিং না। অনেক বুঝিয়েছি। কোন লাভ হয়নি।
উন্নতির কোন লক্ষন নেই। সে এতোটা উদাসিন ভাবাই যায় না। একদিন আমি তাকে ফোন করে বললাম,আমি আজ বাসায়,তুমি প্লিজ একটু নেট এ আসো। সে প্রথমে অবাক,তারপর বেজায় খুশি। বললো,২০ মিনিটের মধ্যে আসছি।
২০ মিনিট,৪০ মিনিট,একঘন্টা,দুইঘন্টা যায় তার কোনো খবরই নেই। শেষে চার ঘন্টা পড়ে তার নেটে আগমন। কারন জিগ্যেস করলে সে বলে,বড় আপুর বাচ্চা তাশকিনকে সামলাতে তার একটু দেরি হয়েছে। আমারতো রাগে দুঃখে স্ইসাইড করার মতো আবস্থা। শান্তভাবে তাকে বললাম,একটা এসএমএস তো করতে পারতে যে আসতে পারছো না বা দেরি হবে?তার আরো শান্ত জবাব,মনেছিলো না।
এই হলো তার অবস্থা। বড়ই শান্তিতে আছি। আমি হান্ড্রেড পার্সেন্ট কেয়ারিং একটা ছেলে। আর আমার কপালেই কিনা এমন একটা জিনিষ জুটতে যাচ্ছে?
বরাবর আমার এখানে ঈদ হয় একদিন আগে। আমার ঈদের দিনে সারাদিন অপেক্ষা করলাম।
তার কোনো খবর নাই। রাতে ফোন দিলাম।
বললাম,আমার এখানে আজ ঈদ।
তার হাসি মিশ্রিত জবাব,তাই নাকি?জানিনাতো?
বললাম তোমার জানার কথা না।
সে বললো,হুমম।
মেজাজটা বিগড়ে গেলো। ফোন কেটে দিলাম। ভাবলাম নিয়তি,কপাল,সবই কপাল!চাই কি আর করে কি।
তারপরদিন তার ওখানে ঈদ। সকাল থেকে বসে আছি।
কোনো খবর নাই তার। বিকালে আমার ফোন। জিগ্যেস করলাম কই?
সে বললো,বাসায়। বোনের সাথে ঝগড়া। তাই কোথাও বের হয়নি।
জিগ্যেস করলাম, কি নিয়ে ঝগড়া?
বললো,রাতে বোনকে বলেছিলো হাতে মেহেদি লাগিয়ে দিতে। বোন তারাহুরো করে লাগিয়ে দেয়ায় একদম সুন্দর হয়নি।
আমার মাথায় হাত!বললাম,আমি কি দোষ করলাম?সেই জন্যকি আমাকে ঈদের উইশটুকু করা যায়নি?
সে বললো,কিজানি। মন ভিশন খারাপ। দাড়াও এখন করছি।
আমি লাইনটা কেটে দিলাম। কিছুক্ষন চুপ করে দাড়িয়ে থাকলাম। শেষে মোবাইলটা অফ করে সিমটা বের করে আনলাম। যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার নিয়ে নিয়েছি। জানালাটা খুললাম।
বাইরে বেদম বৃষ্টি হচ্ছে। জানালা গলিয়ে হাত বাড়ালাম। আহ!বৃষ্টির স্পর্শ লাগলো হাতে। সিমটা হাতে ধরা। মন খুব শান্ত।
ভিষন কষ্টে কিনা কে জানে। মুখটা বের করলাম। বৃস্টির ফোটা পড়ছে গালে,চোখে,মুখে। চোখ বন্ধ করলাম। হাতের মুঠোটা খুলে দিলাম।
হাত খালি হলো। মনও হয়তো খালি হবে। কিন্ত চোখ ভরে এলো। টের পেলো বৃষ্টির ফোটাগুলো...।
সর্বস্বত (তাসমান)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।