আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এক উদ্দাম যৌবনাবতী আফ্রিকান সুন্দরীর গল্প-১

বৃষ্টিতে হাঁটতে ভাল লাগে আমার কারন কেউ দেখেনা দুচোখের জল ধুয়ে যায় বৃষ্টিধারায়
আফ্রিকা নামটি শুনলে চোখে ভেসে উঠে কংগোর গহীন বিস্তৃত অরণ্য,কেনিয়ার মাসাইমারা (সাফারি পার্ক),জাম্বিয়ার লিভিংস্টোনের গ্রেট ভিক্টোরিয়া জলপ্রপাত,কেনিয়ার কিলিমানজারো পর্বত আর উগান্ডার ভিক্টোরিয়া লেকের কথা । একদিকে যেমন আকাশ ছোঁয়া পর্বত কিলিমানজারো রহস্যময়তা,বিশাল বিস্তৃত কংগোর গহীন অরণ্যর বৈচিত্রময় জীবজগত আর লিভিংস্টোনের সগর্জনে বয়ে চলা গ্রেট ভিক্টোরিয়া জলপ্রপাতের অফুরন্ত জলরাশির নয়নভিরাম রুপের কারুকাজ অপরদিকে গোত্রে গোত্রে ভয়াবহ দাঙ্গার হিংস্রতা আর দূর্ভিক্ষের করালগ্রাসের কদাকার রুপ । কিন্তু সৌন্দর্যের জয় চিরন্তন তাই আফ্রিকার সমস্ত কদর্যতা ঢাকা পড়ে যায় বিধাতা প্রদত্ত এই অসাধারন প্রাকৃতিক রুপমাধুর্যে । আফ্রিকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের নয়নভিরাম দেশগুলোর একটি উগান্ডা । প্রতিবছর ভ্রমনপিয়াসু অসংখ্য পর্যটক ভীড় জমায় এই দেশে যার অধিকাংশ আসে ইউরোপ থেকে ।

উগান্ডার আবহাওয়া চমত্তকার ,অনেকটা নাতিশীতোষ্ন । এখানকার ভিক্টোরিয়া লেকের ধার ঘেঁসে অসংখ্য অবকাশ যাপন হোটেল দেখা যায়। এই ভিক্টোরিয়া লেকে থেকে জন্ম ভিক্টোরিয়া নীলের পরবর্তীতে আলবার্ট নীল এবং সুদানে সাদা নীল নামে প্রবাহিত হয়ে অবশেষে মিশরে যেয়ে এই সাদা নীল , নীল নদ নাম ধারন করে ভূমধ্যসাগরে গিয়ে মিলেছে । ইতিমধ্যে আমার পূর্ব প্রকাশিত "নীল নদের উত্তসে" আমি তা উল্লেখ করেছিলাম । এই ভিক্টোরিয়া নীল , ভিক্টোরিয়া লেক থেকে জন্ম নিয়ে লেক কয়োগার অভিমুখে যাত্রা শুরুর প্রাক্কালে জিনজার কাছে সৃষ্টি করলো আর এক অসাধারন যৌবনাময়ী আফ্রিকান সুন্দরী বুজাগালি জলপ্রপাতের ।

আজ , আমার দেখা সেই লাস্যময়ী যৌবনাময়ী আফ্রিকান সুন্দরী বুজাগালি জলপ্রপাতের গল্প আপনাদেরকে শোনাবো । উগান্ডার এনটিবি থেকে ট্যাক্সিতে করে প্রায় ২ ঘন্টা যাত্রাপথ অতিক্রম করে অবশেষে জিনজা পৌছাঁলাম । উদ্দেশ্য বুজাগালি জলপ্রপাত দেখা । অবশেষে পার্কের গেটে জনপ্রতি ৫০০০ শিলিং দিয়ে ট্যাক্সি নিয়ে প্রবেশ করলাম ভেতরে । উঁচু পাহাড়ের একদিকে গভীর খাদ অন্যদিকে উঁচু পাহাড় আর তার উপর সারিবাঁধা গাছের ছায়ার ভেতর দিয়ে পথটি চলে গেছে একবারে পাহাড়ের পাদদেশে ।

ট্যাক্সি করে আমরা বেশ সাবধানে ধীরে ধীরে নিচে নামছিলাম তখন কানে ভেসে আসছিলো গুরুগম্ভীর এক রকম শোঁ শোঁ আওয়াজ। প্রথমে কিছু বুঝে উঠতে পারছিলামনা শব্দের উত্তস কোথায় । নীচে নেমে আসার পর একটা খোলা জায়গায় আমাদের ট্যাক্সি নির্ধারিত জায়গায় পার্কিং করলাম ,বেশ খানিকটা সামনে দেখলাম একটা বিশাল কুঁড়েঘর তার নীচে প্রসস্ত জায়গায় অনেকগুলো চেয়ার পেতে ফাস্ট ফুডের দোকান । কিছুদুর হেঁটে ফাস্ট ফুডের দোকানের ঠিক পেছনেই দেখলাম সেই আফ্রিকান সুন্দরী বুজাগালি ফলস্‌ কে । একে দেখা বলাটা ভুল হবে বরং বলবো প্রথম দর্শনে যেন প্রেমে পড়ে গেলাম ।

নীল আকাশের নীচে যতদূর চোখ যায় সারি সারি পাহাড়গুলোর মধ্য দিয়ে এঁকে বেঁকে যেন এক ক্ষিপ্র যৌবনাময়ী যুবতী বুজাগালি ফলস্‌ প্রচন্ড প্রানশক্তিতে উদ্দাম নাচের ছন্দে ছুটে চলেছে দূর্নিবার গতিতে । অসাধারন সেই দৃশ্য , লক্ষ লক্ষ টন পানির দেয়াল তীব্র স্রোতে আছড়ে পড়ছে এক পাহাড়ের গা থেকে অন্য পাহাড়ের গায়ে । আর চারপাশের গম্ভীর জলগর্জনে যেন মনে হচ্ছিলো আমি পৃথিবী নয় বরং অন্য কোন এক জগতে যেন হারিয়ে গিয়েছিলাম । (চলবে)
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।