কবিতা আমাদের রক্তে একটা পশু আছে- ভয়ানক হিংস্র; শিশু বেলায় যেটি শিশুদের মতনই ছিল অতি নিরীহ তখনো তার দাঁত গজায়নি; ছিল না নখরে ক্ষুরধার; তখন সে অবুঝ, অবোধ ছিল, ছিল আনকোরা ভীষণ। মানব শিশুটির সহিত সেও বাড়ে; যত্নে বেড়ে ওঠা মানব শিশুটির মতো পরিচর্যা কেউ তাকে করেনি। মনুষ্য শিশুটি যেরূপ ভালোবাসা স্নেহ মমতা পেতে থাকে তার কিছুই সে পায় না কখন; মনুষ্য শিশুটি যে খাদ্য-পুষ্টি পায় তার আধেকও সে পাই না; অথচ, ঠিকি বেড়ে ওঠে সে পুষ্টির ঘাটতি হয়না এতটুকু। বয়ঃপ্রাপ্ত হলে- মনুষ্য শিশুটি যতটা না বাড়ে গড়নে বহুগুণ হয় শিশু-পশুটি; করাত- দাঁত হয় শাণিত নখ-চোখ; তার চেয়ে তীক্ষ্ণ শিকারি দক্ষতা; যে এত দিন ছিল অবুঝ- অবোধ সে বুঝতে পারে সব। কিন্তু কিভাবে সে অতোটা বেড়ে গেল? শিকারে-দক্ষতা আয়ত্ত করল? মানব শিশুটি তো বেড়েছে সুন্দর- সুস্থ-পরিবেশে যেখানে কদর্য ঘৃণা, পাশবিকতা ইত্যাদি ছিলনা ছিল না লোভ, ক্রোধ- আজন্ম লালিত গুপ্ত প্রতিশোধ।তবে ভেতরের পশু কি করে এতকিছু রপ্ত করে ফেলে? কার কাছ থেকে সে এতকিছু শিখেছে? যে মানব শিশুটি আজন্ম শুনেছে ঔদার্য, ক্ষমা, ভালোবাসার বাণী- মুহূর্তের পট- পরিবর্তনে সে কি করে সব ভুলে হয়ে ওঠে নিঠুর ঘাতক, কুৎসিত ধর্ষক এক! যে মানব শিশুটি শিখেছিল সততা, সৎ-বিশ্বাসের সোজা পথে চলতে কি করে হয়ে ওঠে বিশ্বাস-ঘাতক? বিস্মিত হতে হয় মানব জন্মের অবনমন দেখে; মানব সত্তার এই বিলোপ দেখে।ধর্ম- বিশ্বাস মার্জিত আচার, সংযত জীবন কিছুই যে পশুটিকে রুখতে পারে না! সে সাবলীল বাড়ে; গুপ্ত ঘাতকের মতো লুকিয়ে থাকে- আচানক আঘাত হানে একদিন; আর সে আঘাতে আমরা হারায় সম্বিত; চরিত্রের ভিত উৎপাটিত হয় সমূলে আমাদের। নিত্যদিনকার অতি ক্ষুদ্র পাপ, ছোট্ট অপরাধ- সব কিছু থেকেই সে সংগ্রহ করে জৈবনিক রস। আমাদের তুচ্ছ অসতর্কতায় অজান্তেই বাড়ে ভয়ানক পশুটি! (ছন্দঃ- অমিল মাত্রাবৃত্ত-পয়ার, প্রতি পঙক্তিতে ১৪ মাত্রা; মাত্রা বিন্যাস- ৭+৭; লয়-বিলম্বিত)
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।