চলতি ২০১৩ সালেই প্রায় ১৪ লাখ বাংলাদেশি অভিবাসী হয়েছেন, যা দেশের মোট জনসংখ্যার শূন্য দশমিক ৯ শতাংশ। এদের মধ্যে ১৩ দশমিক ৪ শতাংশ নারী।
গত এক দশকে জীবিকার তাগিদে অথবা নিরাপত্তার জন্য সারা বিশ্বে মোট ২৩ কোটি ২০ লাখ মানুষ নিজ দেশ ছেড়ে অন্য দেশে আশ্রয় নিয়েছেন, যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৩ দশমিক ২ শতাংশ।
জাতিসংঘের অর্থনীতি ও সামাজিক বিষয় সংক্রান্ত দপ্তর বুধবার এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
এই প্রতিবেদনের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত শতকের শেষ দশকের চেয়ে চলতি একুশ শতকের প্রথম দশকে বাংলাদেশিদের অভিবাসী হওয়ার হার বেড়ে দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে।
২০০০ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত বছরে অভিবাসীর সংখ্যা বেড়েছে ২ দশমিক ৭ শতাংশ হারে, যেখানে ১৯৯০ সাল থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত এ হার ছিল ১ দশমিক ১ শতাংশ।
প্রতিবেদনে চলতি বছরের তথ্যে দেখা যায়, কর্মক্ষম ব্যক্তিরাই সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় অন্য দেশে পাড়ি জমিয়েছেন।
২০১৩ সালে অভিবাসীদের মধ্যে ৬৬ দশমিক ৫ শতাংশের বয়স ২০ থেকে ৬৪ বছরের মধ্যে। আর ঊনিশ বছর বা তার কম বয়সীর সংখ্যা মোট অভিবাসীর ৩২ দশমিক ৪ শতাংশ।
তবে সবচেয়ে কম সংখ্যায় বিদেশে গেছেন প্রবীণরা।
তাদের হার মাত্র ১ দশমিক ১ শতাংশ।
সারা বিশ্বে অভিবাসীর সংখ্যা ও গতিবিধির পর্যলোচনা উঠে এসেছে জাতিসংঘের এই প্রতিবেদনে। পরিসংথ্যানে দেখা যায়, অভিবাসীর পছন্দের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
আগের দুই দশকের পরিসংখ্যান দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০০ সালে বিশ্বে মোট অভিবাসীর সংখ্যা ছিল সাড়ে ১৭ কোটি, ১৯৯০ সালে এই সংখ্যা ছিল ১৫ কোটি ৪০ লাখ।
যুক্তরাষ্ট্রে বছরে গড়ে ১০ লাখ অভিবাসন হচ্ছে এবং ১৯৯০ সাল থেকে চলতি বছর পর্যন্ত ২৩ বছরে মোট দুই কোটি ৩০ লাখ বিদেশি সেখানে বসবাস শুরু করেছে।
চলতি বছর ইউরোপে অভিবাসী হয়েছে সাত কোটি ২০ লাখ মানুষ। একই সময় এশিয়ার বিভিন্ন দেশে অভিবাসন হয়েছে সাত কোটি দশ লাখ মানুষের।
এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে তেলসমৃদ্ধ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে অভিবাসনের হার বেশি। এছাড়া সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও মালয়শিয়ার মতো উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোতেও বেশি সংখ্যায় অভিবাসন ঘটছে।
জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, ভারতে বর্তমানে প্রায় ৩২ লাখ বাংলাদেশি অভিবাসী রয়েছেন, যা এশিয়ার দুটি দেশের মধ্যে অভিবাসনের সবচেয়ে বড় ঘটনা।
আগামী ৩ ও ৪ অক্টোবর নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সদরদপ্তরে ‘অভিবাসী ও উন্নয়ন’ শীর্ষক সম্মেলন সামনে রেখে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে অর্থনীতি ও সামাজিক বিষয় সংক্রান্ত দপ্তর।
জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল উ হংবো বলেন, “অভিবাসীদের যথাযথ মূল্যায়ন করা হলে তারা নিজের দেশ এবং যে দেশে অবস্থান করছেন- উভয়ের উন্নয়নে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবেন। ”
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।