আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কন তো হামার ইস্কুল কবে খুলি দিবে?

সময়... অনাদি... হতে... অনন্তের... পথে...

গাইবান্দা সদর উপজেলার বাগুড়িয়া থেকে গোদারহাট পর্যন্ত ঘাঘট নদীর বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রিত পার্শ্বêবর্তী পর্ব কোমরনই গোদারহাট গ্রামের বন্যাকবলিত ৭৫টি পরিবারের প্রায় দেড় শ’ শিশু-কিশোর-কিশোরী তাদের চিরচেনা আপন ঠিকানায় ফিরে যেতে অস্থির হয়ে উঠেছে। এসব হতদরিদ্র শ্রমজীবী ও প্রান্তিক চাষী পরিবারের অভিভাবক নারী-পুরুষ এখন দু’বেলা দু’মুঠো খাবারের ব্যবস্থা করতে হিমশিম খাচ্ছেন। এলাকার বাইরের কেউ বাঁধে পা রাখলেই বড়রা যখন ত্রাণসামগ্রীর আশায় ছুটে আসছেন, তখন ওইসব শিশু-কিশোর-কিশোরী বারবার উৎকণ্ঠিত হয়ে জানতে চাইছে, ‘কন তো (বলুন) হামার ঘরের ইস্কুল কবে খুলি দিবে? হামরা পড়াশোনা করব্যা নই? সরেজমিন এলাকা ঘুরে জানা গেছে, গত ২৮ জুলাই আকস্মিকôবন্যায় গ্রামের ঘরবাড়িসহ বিস্নীর্ণ এলাকা পানির নিচে তলিয়ে গেলে সেনাবাহিনীর সদস্যরা এলাকার প্রায় ৫ শতাধিক নারী-পুরুষকে উদব্দার করে তাদের বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে দেন। সেই থেকে ওই পরিবারগুলো বাঁশের চাটাই, টিন ও পলিথিন দিয়ে তৈরি ঝুপড়ি ঘরে আশ্রয় নিয়েছে। সেখানে গৃহপালিত গরু, ছাগল, হাঁস, মুরগিরও সহাবস্থান।

কর্মহীনতার কারণে অভিভাবকরা আগামী দিনগুলোর চিন্তায় শগ্ধিকত হলেও বাঁধে দাঁড়ানো শিশু-কিশোরদের ছল ছল চোখ সুযোগ পেলেই ছুটে যাচ্ছে বন্যার পানিতে ডুবে থাকা তাদের ঘর-বাড়ি আর খেলার মাঠ আর তাদের চিরচেনা ইস্কুল ঘরের দিকে। স্থানীয় কোনারপাড়া দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণীর ছাত্রী সুমী খাতুন, শাপলা খাতুন ও জবা খাতুন জানায়, এ মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে ইস্কুলের দ্বিতীয় সাময়িকী পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল। সে অনুযায়ী তারা পড়াশোনাও শুরু করেছিল। কিন্তু বন্যার কারণে সবকিছু তলিয়ে যাওয়ায় এখন সব বব্দ। ৮ম শ্রেণীর ছাত্রী রহিমা খাতুন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলল, তাড়াতাড়ি নৌকাত চড়িয়া আসার সময় বাড়িত বই, খাতা, ইস্কুলের ডেরেস (ড্রেস) স্যোগে (সব) রাখি আচ্চি।

আললগা জানে ফিরি গেলে ওগলা ফিরি পামু কিনা! ওদের পাশাপাশি সদ্য ইস্কুলে যেতে শুরু করা ছোট্ট আলামিন, সাইফুল, সোহেল, সাহানা, রনি, জোহাও চায় তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরে যেতে। ছোট্ট আশুরা (৭) মুখ বাঁকিয়ে জানাল, বাল্পেব্দাত (বাঁধে) একনা হুড়াহুড়ি (খেলাধহßলা) করারও জায়গা নাই। উল্লেখ্য, গাইবাল্পব্দা জেলায় এবারের বন্যায় ৫ উপজেলায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা ও কলেজসহ ২৩৩ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ব্যাপারে জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ ফজলে আলম জানান, বন্যার পানি পুরোপুরি নেমে যাওয়ার আগে বল্পব্দ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো চালু করা সম্ভব হবে না। তবে প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষকদের সহযোগিতায় ছাত্রছাত্রীদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে জরুরি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।