আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অনিন্দিতা'র চিঠি - ৩,৪

"পসার বিকিয়ে চলি জগৎ ফুটপাতে, সন্ধ্যাকালে ফিরে আসি প্রিয়ার মালা হাতে"

চিঠি-৩ আনন্দ, তোমাকে ভুলে থাকা আমার জন্যে খুব কষ্টের ছিল। আমার শাশ্বত ভাবনায় তোমার ছবিটা কেন জানি চিরকালই উজ্জ্বল। একবারের জন্যেও মুছে ফেলতে পারিনি। সবসময় অবচেতন মনে সামনে এসে দাঁড়াতে সেই হাসি হাসি মুখটা নিয়ে। তোমাকে চিনতে আমি হয়তো ভুল করেছিলাম।

সহজ সরল মানুষের ভেতরটা যে অমন দৃঢ়-কঠিন হবে জানা ছিল না। তাই ভাবতে অবাক লাগে! তুমি বরাবরই এমন একটা ভাব করতে যেন মানুষের অসাধ্য বলে কিছু নেই। তোমার এই প্রত্যয়ী মনটাই আমার কাছে অচেনা ছিল। সামান্য একটা বিষয়ে এমন সিরিয়াস হবে কখনো ভাবিনি। ভাবতে অবাক লাগে।

বরাবর যে ভাল ছাত্র- মেধাবী বলে যাকে সবাই মান্য করতো, ডিবেট, কবিতা আর বক্তৃতায় যে ষ্টেজ মাতাতো- একটা সামান্য জেদের কারনে সেই মানুষ কি করে জীবন থেকে অমন করে পালিয়ে গেল? প্রেমে পড়লে মানুষ বোকা হয় সেই প্রথম জানলাম। সেটা তুমিই বুঝিয়ে দিলে ভাল করে। নইলে কোনদিনও জানা হতো না। তুমি কখনও আমাকে আমার মতো করে বুঝতে চাওনি। চূড়ান্ত রক্ষণশীল পরিবারের একটা মেয়ে প্রেম করে বিয়ে করবে, এমনটা ভাবতে কেউ সাহস পেত না।

অথচ আমিই শুধু ব্যতিক্রম। কি করে যে তোমার প্রেমে পড়লাম একটুও টের পাইনি। যখন বুঝলাম তখন শুধু নিজেকে সামলানোর যুদ্ধ। কেউ যেন জানতে না পারে সেই যুদ্ধ। নিজেই শুধু রক্তাক্ত হয়েছি।

তোমাকে কিছুই বলতে পারিনি। আমি জানতাম তুমি আমার কোন কথাই শুনবে না। তোমার জেদ আমার ভাল করেই জানা ছিল। শেষ পরিণতির কথা ভেবে তোমাকে দু’হাতে আড়াল করেছি। বেশী আপন করে পাবার জন্যই যতটা সম্ভব দূরে দূরে রেখেছি।

অথচ এই তুমি এতো বোকা যে এসবের কিছুই বুঝতে চাইলে না। তুমি একবারও আমার দিকটা ভেবে দেখলে না। যাবার আগে কিছু বলেও গেলেনা। - অনিন্দিতা চিঠি - চার আনন্দ, মাকে যেদিন সব খুলে বললাম, অত ঠান্ডা মানুষ তবুও বলেছিল- কেউ মেনে নেবে না, পালাতে পারবি সবার মুখে চুনকালি মাখিয়ে? আমি শুধু ধৈর্য্য ধরে দিন গুনছিলাম। ভেবেছিলাম তুমি একদিন ঠিক নিজের পায়ে দাঁড়াবে।

মাথা উঁচু করে এসে চাইবে আমাকে। সবাই হাসি মুখে মেনে নেবে। যোগ্যতা আর শ্রেষ্ঠত্বের বিচারে কে হারাবে তোমাকে? কত প্রস্তাব এসেছে, নানা অজুহাত দেখিয়ে বলেছি আগে পড়া শেষ হোক, তারপর বিয়ে। তুমি জানোনা কত বাঁধার পাহাড় ডিঙ্গিয়ে, কত অপমান সয়ে, কত যন্ত্রনার মধ্যে দিয়ে লেখাপড়া শেষ করেছি। ভেবেছি একটা চাকরি নিয়ে দূরে কোথাও চলে যাব।

তারপর একসময় তোমাকে কাছে ডেকে নেব। তুমি জানোনা, কিভাবে সময় বের করে তোমাকে ওই চিরকুটগুলো দিয়েছি। ছোট ছোট এক একটা চিরকুট এক একটা বিষাক্ত জীবনের খন্ড খন্ড মুহূর্ত। কত সন্তপর্নে যে ওগুলো তোমাকে লিখতাম তুমি বুঝবে না। পরিবারের অনেকেই আঁচ করেছিল তোমার সাথে আমার কিছু একটা সম্পর্ক আছে।

তা প্রেম হলে রক্ষা নেই। - অনিন্দিতা

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।