আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভাত দেবার ভাতার না কিল মারার গুশাই



একুশে টেলিভিশনে গতকাল সোমবার রাতে একটি টক শো অনুষ্ঠানে ‌"বাকপটু" আনিসুল হকের বিভিন্ন কথা শুনে হতবাক হলাম। আনিসুল হকরা বাংলাদেশে যত ধনী হয়েছেন দেশের অন্যকোনো শিল্পখাতে তা হয়নি। বাংলাদেশে সবচেয়ে দামি গাড়িগুলো চড়েন উনারা। নিদেন পক্ষে দেশের সবচেয়ে দামি স্কুলে পড়েন তাদের সন্তানেরা। আর বেশিরভাগ পোশাক শিল্প মালিকের ছেলেমেয়েরাতো বিদেশে পড়াশুনা করেন।

আনিসুল হকসহ সব পোশাক মালিকদের ট্যাক্সফাইল তলব করা উচিত। এদের জীবনযাত্রার ব্যয়ের সঙ্গে ট্যাক্স মেলানো উচিত। তাতে পোশাক শিল্প মালিকরা কি পরিমাণ ইনছাফ করেন দেখা যাবে। আনিসুল হক গতকাল আলোচনায় ট্রেড ইউনিয়ন নেতাদের কাছে (যদিও এইসব ইউনিয়ন নেতাদের নিয়ে অনেক প্রশ্ন ও বিতর্ক আছে...) অনুযোগ করেছেন কেন তারা শ্রমিকের দক্ষতা বাড়াতে ভুমিকা নেন না! বাহ আনিসুল হক বাহ্.. ‌"ভাত দেবার ভাতার না, কিল মারার গুশাই"। ১৬৬২.৫০ টাকা দিতে চান না আবার দক্ষতা চান।

এক সাংবাদিক বলেছিলেন.."ফরচুনা গার্মেন্টস দেশের অন্যতম বড় পোশাক শিল্প কারখানা। সেখানে বেতন দেওয়া হয়নি। " আনিসুল তার আগে বলেছিলেন "যারা পারছেন না তারা দিচ্ছেন না। এদের সংসারও ভালো চলছে না। " ধন্যবাদ সাংবাদিককে।

ফরচুনার মালিক হচ্ছে ইঞ্জিনিয়ার তাহের। যিনি বিজিএমইএ কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের জন্য নির্বাচন করেছেন। নেতা গোছেন কেউকেটা। টাকার পাহাড় বানিয়েছেন। কিন্তু শ্রমিকদের টাকা দিতে চায় না।

খাসলত খারাপ। সব পোশাক মালিকদের খাসলত খারাপ। এরা শ্রমিকদের বাসার চাকরের মত ভাবে। নিজেদের ভাবে প্রভু। দাস-প্রভু ভাবতে গিয়েই বেশিরভাগ কারখানাতে মালিকেরা শ্রমিকদের বিদ্রোহ করতে বাধ্য করেছে।

পোশাক শিল্প মালিকদের দম্ভ দেখলে মনে হয় তারাই দেশের মা-বাব। কত টাকার ইনসেনটিভ এরা খেয়েছেন, কত হাজার টাকার অবৈধ কোটা ব্যবসা করেছেন তার ইয়াত্তা নেই। আর বন্ডেড ওয়ার হাউজের কাপড় খোলাবাজারে বিক্রি করে ধুমায় বড় লোক হয়েছেন। সবই চোট্ঠামি। গার্মেন্টস মালিকদের ব্যাক টু ব্যাকে আসা মালামালের কন্টেইনার ফাঁকা পাওয়া গেছে এমন সংবাদ পত্রে ছাপা হয়েছে।

আরো অজস্য ফাঁকি, দুই নম্বরীর চুড়ান্ত তারা। আর প্রায় প্রতিজন পোশাক শিল্প মালিকদের বিদেশে ব্যাংক ব্যালাঞ্চ আছে। ওভার ইন ভয়েজ করে ব্যাক টু ব্যাক ও আন্ডার ইন ভয়েজ করে রপ্তানিতে তারা মুদ্রাপাচার করেছেন। আরও সঙ্গে আছে স্টক লট। এসব এখন শক্তভাবে ধরা উচিত।

তাহলে দেখবেন শুড় শুড় করে ১৬৬২.৫০ টাকা দিয়ে দেবে। যৌথবাহিনী যদি এসব বিষয়ে একটু তদন্ত চালায় তাহলেই সব ঠান্ডা হয়ে যাবে। বহু পোশাক মালিকের বাইরে কারখানা আছে। কেউ আবার নিজেই দম্ভ করে বলেছেন তার কারখানা দেশের বাইরেও আছে। সেখানেতো কোনো ধরনের সমস্যা হচ্ছে না।

দৈনিক প্রথম আলোতে গত বছরের জুন মাসে এক গোলটেবিল বৈঠকে বিজিএমইএর এক সাবেক সভাপতি এসব তথ্য দেন। যা প্রথম আলোতে ছাপা হয় লিড সংবাদে। এগুলো এখন যৌথবাহিনীর ধরা উচিত। বাংলাদেশের ফরেন এক্সচেঞ্জ রেগুলেশন অনুসারে কারেন্ট একাউন্ট করভারটেবল। ক্যাপিটাল একাউন্ট নয়।

ফলে এখানে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের বাইরে বিদেশ ভ্রমন এবং অনুমতি সাপেক্ষে বিদেশে চিকিৎসা নিতে যাওয়া যায়। কিন্তু কোনোভাবেই ক্যাপিটাল ট্রান্সফার করা চলে না। নাইরোবি, মরিসাস ও ক্যারিবিয়ান যেসব রাষ্ট্রে আমেরিকা ডিউটি ফ্রি সুবিধা দিয়েছিল সেসব দেশে আমাদের পোশাক শিল্প মালিকদের একটা উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অংশ মালিক কারখানা বানিয়েছেন। আর ইংল্যান্ড আমেরিকাতে অনেকের বাড়ি আছে। এদের মুলধন এখন রিকল করা উচিত।

কেবল রাজনীতিবিদরা মুদ্রাপাচার করেনি। গার্মেন্টস মালিকরা সব চেয়ে বেশি মুদ্রাপাচার করেছেন। প্রিয় ব্লগার এগুলো গল্প না সত্য। কিন্তু হয়ত অনেকের জন্য বিরক্তিকর। তারপরও বলতে চাই এগুলো বিষয়ে এখন সবর্ত্র সোচ্চার হওয়া জরুরী।

কারোর ধৈয্যচু্যতি হলে ক্ষমা করবেন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।