আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

যাযাদি'র মিথ্যাচার



দৈনিক যায় যায় দিন আজ রোববার প্রথম পৃষ্ঠায় বক্স করে দুই কলামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এর শিরোনাম হচ্ছে ‘পার্বত্য অঞ্চল: বাঙালি আতœপরিচয় যেখানে সবচেয়ে বড় অভিশাপ’। এই প্রতিবেদনটি শুধু বাঙালি উগ্রজাতীয়তাবাদী অহং এ ঠাসাই নয়। এটি একটি উগ্র সাম্প্রদায়িক প্রতিবেদনও বটে। এতে সত্যের লেশ মাত্র নেইই; এমন কী এতে নেই মিথ্যের নান্দিক উপস্থাপনও।

আমি নিজে বাঙালি হয়েও যাযাদির এই জঘন্য মিথ্যাচারের তীব্র প্রতিবাদ করছি। এতে বলা হচ্ছে, ‍"পার্বত্য অঞ্চলে সুবিধা বঞ্চিত সাড়ে ছয় লাখ বাঙালি বাস করে। কিন্তু তাদের জন্য নেই নূন্যতম নাগরিক সুবিধা। নাগরিক সুবিধার একশভাগই ভোগ করছে উপজাতিরা। কেননা শান্তিচুক্তি অনুযায়ী, এ অঞ্চলের বাঙালিরা তৃতীয় শ্রেণীর নাগরিক।

...বাঙালি পরিচয়ই এখানকার সবচেয়ে বড় অভিশাপ। সবমিলিয়ে পার্বত্যাঞ্চলের বাঙালিরা আপন ঘরে পরবাসীর মতো। " প্রতিবেদনটিতে স্পষ্ট আহাজরি করা হয়েছে পাহাড়ে সরকারি উদ্যোগে পুনর্বাসিত (?) বাঙালি সেটেলারদের জন্য। প্রথমত, পাহাড়ে নাগরিক সুবিধা বঞ্চিত পাহাড়ি -- বাঙালি সবাই। এটি দেশের মূল ভূখণ্ড থেকে প্রায় জনবিচ্ছিন্ন ও অতি পশ্চাতপদ একটি অঞ্চল।

দ্বিতীয়ত, শান্তিচুক্তিতে বাঙালিদের বঞ্চিত করে তৃতীয় শ্রেণীতে পরিনত করার কোনো উপাদানই নেই। তৃতীয়ত, পার্বত্য চট্টগ্রাম কখনোই বাঙালির আপন ঘর ছিলো না। পার্বত্য চট্টগ্রামের ওপর প্রথম লেখা বইয়ে (অ্যা ফ্লাই অন অ্যা হুইল, ১৮৬৫) কর্নেল লুইন জানাচ্ছেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড় ও ঘন অরণ্যে পরিবেষ্টিত অঞ্চল। সেখানে জনবসতিই প্রায় নেই। অল্প কিছু সংখ্যক উপজাতি প্রকৃতির সঙ্গে কঠিন যুদ্ধ করে গহিন অরন্যকে নিজেদের বাসযোগ্য করে তুলেছে -- ইত্যাদি ইত্যাদি।

... ১৯০০ সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধিতেও বলা আছে, পার্বত্য চট্টগ্রাম হচ্ছে উপজাতীয় অধ্যুষিত অঞ্চল। এই আইনটি এখনো কার্যকর হলেও বাস্তব চিত্র অবশ্য ভিন্ন। আর শান্তিচুক্তিতেও পার্বত্যাঞ্চলকে উপজাতীয় অধ্যুষিত অঞ্চল স্বীকার করে নেওয়া হলেও শান্তিচুক্তির মৌলিক বিষয়গুলোই তো এখনো বাস্তবাযিত হয়নি! এটি তো অনেক আগেই পরিনত হয়েছে কাগুজে চুক্তিতে। । .............................. পুনশ্চ: এক. এই ছোট্ট লেখায় পাহাড়ের দীর্ঘ আর্থ -- রাজনৈতিক ইতিহাস বর্ণনা করা সম্ভব নয়।

ওই প্রতিবেদনটির প্রতিবাদ করার জন্যই এই লেখাটির অবতারণা। দুই. যাযাদির সেই প্রতিবেদনটি পড়–ন এখানে তিন. বাঙালি সেটেলার বিষয়ক লেখা পড়–ন এখানে চার. সেটেলারদের কীর্তি বিষয়ক লেখা পড়–ন [wjsK=http://www.somewhereinblog.net/blog/biplob_33blog/28704569 ]এখানে

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।