আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

লবণ - আদিত্য অনীক

http://www.myspace.com/423882880/music/songs/31785002

বই মেলায়, থিয়েটারে, ক্যাফেটেরিয়ায়, পহেলা বৈশাখে, ভ্যালেন্টাইন উতসবে শুধু মেয়েটার চোখে পড়ার দুঃসহ চেষ্টা ছাড়া ছেলেটা পুরাদস্তুর সাধারণ মেয়েটা রূপে ও লাবণ্যে ফ্যাসনে ও বসনে আগাগোড়া বিশেষণ। এক ঝাঁক প্রজাপতি উচ্ছল তরুণের ভিড়ে ছেলেটা একেবারে অপাঙ্ তেয় তবু অতি বড়ো সাহস করে একদিন বলেই ফেলল, আমার সাথে চা খাবে? ছেলেটার দুঃসাহসী অফারে অবাক মেয়েটা কী জানি কি মনে করে বলল, চল। মেয়েটার মুখোমুখি বসা ছেলেটার বুক ধড়ফড়, আড়ষ্ট জিহ্বা, চায়ে চুমুক দিয়ে বলল, ওয়েটার আমাকে লবণ দাও। মেয়েটা অবাক হয়ে বলল, তুমি চায়ে লবণ খাবে নাকি? ছেলেটা বলল, হ্যাঁ, আমার জন্ম নোনা জলের সাগর পারে, নোনা চায়ে চুমুক দিলে আমার চোখে ভেসে ওঠে আমার গ্রাম, নোনা জলে ভেসে যাওয়া আমার বাবা মায়ের মুখ। মেয়েটা অবাক হয়ে শুনলো ছেলেটার কথা, তারপর বলল, আমি কোনোদিন সাগর দেখিনি, আমার বাড়ি পাহাড়ে, ওখানে গা ছুঁয়ে উড়ে যায় কোমল মেঘ পাখির মতো।

সাগর আর পাহাড়ের গল্প ক্রমেই নিবিড় হলো দিনে দিনে। তারপর বিয়ে সংসার এবং শেষে বুড়ো ও বুড়ি। বুড়ো মরার আগে বুড়ির হাতে একটা চিঠি দিয়ে বলল, মরার পর খুলবে। বুড়ো মারা যাওয়ার পর বুড়িটা চিঠিটা খুলল, তাতে লেখা আছে, লবণ দিয়ে চা আমি কখনোই খেতাম না, তোমার সামনে থতমত খেয়ে চিনি বলতে লবণ বলে ফেলেছিলাম। আর বোকামি ঢাকতে অমন গল্প ফেঁদেছিলাম।

তাই চল্লিশ বছর তোমার হাতে লবণ চা খেয়ে গেলাম। তোমার হাতের লবণ-চা খুব মিষ্টি। বুড়ি প্রতিবেশীর বাড়িতে বেড়াতে গেলো একদিন। তাকে চা দেয়া হলো। বুড়ি বলল, একটু লবণ দিন।

অবাক হয়ে প্রতিবেশী বলল, আপনি লবণ দিয়ে চা খাবেন নাকি? বুড়ি বলল, হ্যাঁ, লবণ-চা খুব মিষ্টি। বিঃদ্রঃ কালি ও কলম পত্রিকায় (চতুর্থ বর্ষ:ষষ্ঠ সংখ্যা: শ্রাবণ ১৪১৪)আদিত্য অনীক এর এ কবিতাটি প্রকাশিত হয়েছে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।