আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হোম ভায়োলেন্স ও এক প্রতিবাদী নারীর কথা

খুব গোলমেলে, নিজেও ভাল জানি না। তবে আছে,এই ঢের।

এই দেশে এখন আইন হইসে, পারিবারিক হিংসা ও নারী নির্যাতন'এর উপর। স্বামী যদি স্ত্রীর আনিচ্ছাতে যৌন মিলন করে তয় কেইস। বৌ'এর যদি কোন বয়ফ্রেন্ড থাকে হেইডা নিয়া স্বামী কিসু কইলে কেইস।

বৌ চাকরী করে, স্বামী কিংবা শ্বশুরবাড়ির কেউ কিসু কইলে কেইস। বৌ'রে গালমন্দ করলে কেইস। এমনকি বৌরে কোন ইঙ্গিত করলে বৌ যদি অফেন্ডেড হয় তাইলেও কেইস। যৌতুক লইলে কেইস, তয় যৌতুক না দিলে বিয়া হইবো না কাজেই এই নিয়া কোন কেইস ফাইলও হয় না। উকিলেগো বুরা দিন আর কোর্ট কাচারীর অনেক সময় বাঁচে এইসব কেইস যদি না ফাইল হয়।

সরকার বাহাদুর আইন করসে, আইন পাস ও হইয়া গেসে বহুদিন হইল। কিন্তু কথা হইল, কয়টা কেইস এই পর্যন্ত ফাইল হইসে? তাইলে কি সম্সত হোম ভায়োলেন্স থাইমা গেল কেইসের ডরে? থামে নাই যে হেইডা একটা দুধের শিশুও জানে। ত্য় এত সুবিধা দেওয়া সত্বেও কেন মহিলারা কেইস করে না? যেখানে ৩দিনের মধ্যে শুনানি হইব? এই জায়গায় আসে নারীগো আর্থ-সামাজিক নিরাপত্বার প্রশ্ন। কেইস নাহয় ঠুইকা দিল কিন্তু এরপরে? সরকারে নাহয় কিসু উত্তম মধ্যমও দিল জামাইয়েরে ধইরা নিয়া। একখান ফায়সালাও শুনাইয়া দিল কিন্তু তারপরে? সাংসারিক শান্তির (???!!!) কি হইব? কই যাইব হেই নারী পোলাপান লইয়া? বাপের বাড়ি? ভুইলা যান! এই কেইস, কোর্ট কাচারীর পরে যে আর একলগে থাকন যায় না হেইডা তো হগ্গলেই জানে।

তাইলে যাইব কই হেই মাইয়া? কিন্তু এক মহিলা বিয়ার ১৭বছর পরে এই দু:সাহস ( পড়েন সত্তসাহস) দেখাইসেন ( সেলাম, লাল সেলাম)। ঘরে তাঁর তিনখান পোলা মাইয়া। বড় পোলায় মাধ্যমিক দিব। তাঁর অভিযোগ : স্বামীর অস্বাভাবিক যৌন ক্ষিদা সে আর মিটাইতে পারতেসে না, রাজী ও না। ছেলে-মেয়ে বড় হইসে, তাগো সামনেও যখন তখন মরদে চড়াও হয়, সুখ-অসুখ মানে না, পোলাপান মানে না এমনকি মাসিক ও মানে না।

আর বৌএ রাজী না হইলেই দে মাইর দে মাইর। মহিলা এর আগেও চেষ্টা করসেন যেন এই অত্যাচার বন্ধ করতে পারেন কিন্তু পারেন নাই। শেষমেষ নারী কমিশনের দ্বারস্থ হন আর এই ঘাট ঐ ঘাটের পানি খাইয়া এক সহৃদয় উকিলের সাহায্যে কেইস ফাইল করেন। এই আইন পাস হওনের পরে এই প্রথম কেইস হোম ভায়োলেন্সের। কাজেই কাগজের হেডলাইন হইল এই খবর।

তিনদিনের মধ্যে শুনানির হুকুম। মহিলা ডাইভোর্সেরও আবেদন করলেন একই সাথে। এই মহিলার নিজস্ব কোন রোজগার নাই মানে ইনি একজন গৃহিনী। ঘর সংসারেই নিজের জীবন কাটাইসেন। ছেলে মেয়েও এখনও পর্যন্ত দাঁড়ায় নাই কেউ যে মায়ের ভরন-পোষণের দায় নিতে পারে।

তবুও মহিলা সাহস করে, ভবিষ্যতের চিন্তা না করে প্রকাশের আলোয় নিয়ে আসেন তাঁর স্বামীর অত্যাচারের কাহিনী। শেষ পর্যন্ত কি হইসে আমি জানি না। মহিলাটি সুবিচার পেলেন কিনা, অত্যাচারী স্বামীর কি হইল কাগজওয়ালারা আর জানানোর প্রয়োজন মনে করেন নাই ( আমার চোখে অন্তত পড়ে নাই) । আশা করি ইনি সুবিচার পাইসেন। তাঁর ভবিষ্যত যেন সুন্দর হয় এই প্রার্থনা আন্তরিক।

সুখে না থাকুন শান্তিতে যেন থাকেন এই প্রতিবাদী নারী। কথা হইল তাইলে কি এই একজন নারীই অত্যাচারিত হচ্ছিলেন? আর্থ-সামাজিক ভাবে কমপ্লিটলি স্বাবলম্বি কিছু নারীকে আমি ব্যক্তিগতভাবে জানি, যাঁরা স্বামীর বিবাহ ভির্ভূত সম্পর্ককেও চুপাচাপ মেনে নেন আর এক সুখী দম্পতি হওয়ার অভিনয় অহরহ করে যান। কেন? কেন করেন তাঁরা এরকম? আচ্ছা, পুরনো কোন কেইস কি নতুন করে খোলা যায়? যে নারীর কথা এইমাত্র বললাম, এইরকমই অত্যাচারিত কোন নারী, যে এর চাইতেও অনেক অনেক বেশি অত্যাচার সহ্য করে শেষমেষ একা হয়ে যান স্বামীকতৃক তালাক পেয়ে? সেও মিথ্যা অভিযোগে? তাঁর কোন সহায় সম্বল ছিল না। পরামর্শ দেওয়ার মত কেউ ছিল না। চুপচাপ পড়ে পড়ে শুধু মার খেয়েছে, যৌন নিপিড়ন সয়েছে দিনের পর দিন।

মাসের পর মাস। বছরের পর বছর। সহ্য করেছে স্বামীর একাধিক বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক। সেই লোকটা এখন দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে লম্বা দাড়ি নিয়ে। পাঁচবেলা মসজিদে যায়, নামাজ পড়ে।

হজ্জ্বও সম্পাদন করে এসেছে। কাজেই সব পাপ ধুয়ে মুছে গেছে তার। বালিকা বধূ ঘরে এসেছে আবার পঞ্চাশোর্ধ সেই হাজী সাহেবের। বিনা বিচারে অবাধে ঘুরে বেড়াবে সে একটা মেয়ের জীবন শেষ করে দিয়ে? মেয়েটি যে উকিল মহাশয়ের কাছে গিয়েছিল তিনি শুধু তার খোরপোষের ব্যবস্থা করেছেন, লম্পট স্বামীর বিচারের ব্যবস্থা নয়। বোকা মেয়েটা তাই মেনে নিয়ে চুপচাপ ঘরে ফিরে এসেছে।

তার বারোমেসে সঙ্গী হয়েছে ঘুমের ওষুধ। এখ হঠাত্ত তার মনে প্রশ্ন জেগেছে, এভাবেই ঐ হাজী সাহেব হয়ে ঘুরে বেড়াবে নির্বিবাদে? মানুষ কি বলে এ নিয়ে? বিবেক কি বলে? ঐ খোরপোষের জন্যে, তার ছেলে মেয়ের বাবা বলে সে কী জাষ্ট ছেড়ে দেবে ঐ লম্পট হাজীকে?

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।