আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমি কান পেতে রই ০১

সুন্দরী বালিকাদের যত্ন করে কামড়াই

[সবসময় নিজের উদ্যোগে কান পেতে থাকি না। হয়তো হাতে কাজ কাম নাই, আর তখনই ইন্টারেস্টিং কোন কিছু ভেসে এলো, কানটা পেতে দিয়ে বসে থাকি। ঠিক করেছি এই আড়ি পেতে শোনা কিছু কিছু জিনিস শেয়ার করবো। ] "আফগানিস্তান থেকে আসলেন কবে?" এ কথাটা শুনেই কানটা খাড়া করলাম। সর্বনাশ, আফগানিস্তানফেরত লোকজন ঢুকে পড়লো কখন? একসময় সৈয়দ মুজতবা আলীর মতো লোকজন কাবুল-কান্দাহার চষে এসে নানারকম মনোহর গল্প লিখতেন।

ইদানীং যাচ্ছে জেহাদি ঘরানার মানুষজন। তারা ফিরে এসে গল্প লেখার সময় পাচ্ছেন না, নানারকম বোমাবাজি আর খুনখারাপির "পিলান" করতে হচ্ছে। কিউবিকলের ওপর উঁকি মেরে দেখলাম ঘটনা কী। প্রশ্নটা যাকে করা হলো, তিনি গোবেচারা ধরনের মানুষ, ঠিক জেহাদি তাকদধারী মনে হলো না। তবে প্রশ্ন শুনে তিনি ক্ষেপে গেলেন।

"আসছি কিছুদিন হইল। " "কেমন লাগছে আফগানিস্তান?" এবার ভদ্রলোক চটে লাল হয়ে গেলেন। বললেন, "যেই লোক আমাকে আফগানিস্তান যাওয়ার বুদ্ধি দিছে, আমি তারে খুজতেছি ঢাকায় আইসেই!" "কেন?" প্রশ্নকর্তা মধুর কণ্ঠে শুধালেন। "তারে সামনে পেলে আমি তার ঠ্যাংদুটো ভেঙে দেবো। " কাবুলি মেজাজে বললেন উত্তরদাতা।

আফগানিস্তানের আলোবাতাসে থেকে তাঁর মধ্যে যদি সংকল্পপূরণের কাবুলিয়ানা কিছু জন্মে থাকে, তাহলে সেই আফগানযাত্রায় মন্ত্রণাদাতার কপালে বহুৎ ভোগান্তি আছে। "কেন ভাই?" "আবার জিগাস করেন কেন! ঐটা একটা মানুষ থাকার দেশ? প্রত্যেকদিন সকালে উঠে মেইল খুলে দেখি, সিকিউরিটি অফিসার কী পাঠাইলো। আজকে সিকিউরিটি কোড কত। ১ নাকি ১০। " "ওগুলি কী?" "বিপদ সঙ্কেত।

আমাদের যেমন ঝড়তুফান উঠলে রেডিওতে বলে, তেমন। " "বলেন কী? এত বিপদ?" "আরে বিপদ মানে? আপনি ভাইবেছেন কী? রাস্তা দিয়ে চলার সময় আল্লা আল্লা করতে থাকি। কাজে গিয়ে মনে হয় সিকিউরিটি অফিসার কি ঠিক সঙ্কেত দিলো নাকি ভুলভাল করছে কিছু। রাতের বেলা বাসায় ফিরে যে একটু হাঁটাহাঁটি করবো সেই সাহস পাই না। " "আরে বলেন কী?" "আরে হ্যাঁ ভাই! অনেক জ্বালা।

পাইয়া নেই ঐ ব্যাটারে। কোন দুঃখে যে গেছিলাম ঐ দ্যাশে!" আমারও মনটা আর্দ্র হয়ে ওঠে বেচারার জন্য। এভাবে জানটা পকেটে নিয়ে আফগানিস্তানে কাজ করা সত্যি বেদনাদায়ক। মজা যা লোটার সৈয়দ সাহেবরাই লুটে গেছেন। সেই খানও নাই সেই খানদানও নাই।

"আমাদের সম্পর্কে ওদের ধারণা কী?" প্রশ্নকর্তা এবার সাংস্কৃতিক মেজাজের প্রসঙ্গে চলে গেলেন। "ওরা আমাদের বাগে পেলে পিটিয়ে লাশ করবে। আমাদের সাথে আমেরিকানদের কোন তফাৎ করে না। বলে এই খারিজিরাই আমাদের দ্যাশটার বারোটা বাজাইলো। " "খারিজি কারা?" "খারিজি মানে ফরেনার।

আপনি আমি বুশ সবাই। " "বলেন কী?" "আবার বলি কী?" মায়াই হয় বেচারার জন্য। একটু পরে উঠে গিয়ে চা খাচ্ছি, দেখি তিনি হেলতে দুলতে বেরিয়ে এসেছেন। ভাবলাম, কয়েন চাইবো আফগানিস্তানের। কিন্তু ভদ্রলোক দেখলাম তখনও চটে আছেন কাবুলিদের ওপরে, বিড়বিড় করে কী যেন বলছেন।

আর ইচ্ছে হলো না ঘাঁটানোর।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।