অনেকের মাঝেও একা থাকা যায়, নি:সঙ্গতায় কারো অনুভব ছুঁয়ে যায় ...
মালয়শিয়াতে মুসলিম মেয়েরা সাধারনত খুবই সুন্দর করে মাথায় ওড়না, স্কার্ফ দিয়ে থাকে ; একটা চুলও দেখা যায়না । কেমন জানি পুতুল পুতুল লাগে ওদের তখন। ওড়না, স্কার্ফ বাঁধার নানা রকমফেরও আছে আবার। স্থানীয় ফ্যাশন ম্যাগাজিনগুলোতে ওড়না/স্কার্ফ বাঁধার নতুন নতুন পদ্ধতি ছবি সহ দেয়া হতো। হোস্টেলের মেয়েদের মাঝে মাঝে সেগুলো অনুসরন করতে দেখতাম।
মুসলিম মেয়ে/মহিলাদের ফুলহাতা কামিজ এর সাথে লম্বা স্কার্টেই সাধারনত দেখা যায়। তবে বাংলাদেশে যেমন মেয়েরা শার্ট-প্যান্ট পড়লে কেউ কেউ অন্য চোখে তাকায় মালয়শিয়ায় সেটা একেবারেই নেই। ওরা শার্ট-প্যান্ট, স্কার্টের সাথেও মাথায় স্কার্ফ দেয়। আমি একবার ওদের না বলে পারলামনা যে এরকম কম্বিনেশন -এ আমাদের দেশের মানুষ অভ্যস্ত নয়; ওয়েস্টার্ন ড্রেসের সাথে কেউ যদি মাথায় কাপড় দেয় তাহলে আমাদের দেশের মানুষজন সেটাকে নির্ঘাত ভন্ডামি ভাববে।
মাথায় স্কার্ফ দেয়া নিয়ে একটা মজার ব্যাপার ছিল যে, আমি যেহেতু সাধারনত মাথায় ওভাবে কাপড় দিতামনা তাই ওরা প্রথমে মুসলিম ধর্মের প্রকারভেদে বাংলাদেশীরা কোন অংশে পড়ে সেটা বুঝতে চাইত।
অপরদিকে আরেকটা মজার ব্যাপার খেয়াল করলাম । সুপারভাইজার কিনবা তার ভাই ভাড়া নিতে কিনবা অন্যকিছু বলতে আসলে মেয়েরা ছুটোছুটি শুরু করে দিত মাথার স্কার্ফ খোঁজার জন্য; স্কার্ফ কাছাকাছি না পেলে কিছু একটা হলেও মাথায় দেয়া চাই। বলে রাখা ভাল আমাদের দেশে যেমন শহর ও শহরের বাইরের মেয়েদের ফ্যাশন সচেতনতায় পার্থক্য দেখা যায় সেটা ওখানেও একইভাবে লক্ষনীয়। আমার হোস্টেলের মেয়েরা প্রায় সবাই ছিল কুয়ালামপুরের বাইরের বিভিন্ন এলাকার । আমি একটু একটু করে ওদের মাঝে শহুরে ফ্যাশনের প্রভাব দেখছিলাম !
ওখানে মেয়েরা অহরহই গাড়ি ড্রাইভ করছে।
হোস্টেলেই দেখেছি কারো কারো গাড়ি ছিল; কম বয়েসী মেয়েরা (১৮ বছরের উপরে অবশ্যই) গাড়ি ড্রাইভ করছে এটা কোন আহামরি ব্যাপার নয় ওখানে। আমার রুমমেট সিতি বাসের জন্য হাঁটাহাঁটি এড়াতে মোটরসাইকেল কিনে ফেলল। ওখানে মেয়েরা মোটরসাইকেলে ছেলেদের মত করেই বসে; এমনকি যদি পেছনে বসে তাহলেও। একবার অ্যাশ নামের এক হোস্টেলমেটকে বললাম আমাদের দেশে মেয়েদের ওয়েস্টার্ন ড্রেস পরা, গাড়ি ড্রাইভ করা, মোটরসাইকেলে বসা, এসব নিয়মনীতি । ও খুব অবাক হলো, এসবের যৌক্তিকতা পেলনা, আমাদের সেকেলে মনোভাবের বলল।
মোটরসাইকেলে এভাবে বসা নিয়ে ও শংকা প্রকাশ করল, মেয়েরা তো পড়ে যাবে কিনবা এক্সিডেন্ট করবে। আমার নিজেরও আমাদের দেশের মেয়েদের মোটরসাইকেলের পেছনে ওরকম পটের বিবি হয়ে বসে থাকাটা নিরাপদ মনে হয়নি কখনই। আমি ওকে জানালাম , আমাদের দেশের মেয়েরা আসলে এরকম অনেক অদ্ভুদ চাপিয়ে দেয়া রীতিতে অনেক বেশীই অভ্যস্ত ...।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।