আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

@ সর্বযুগের সর্বাধুনিক জীবনপদ্ধতির নামঃ ইসলাম(১৪)

জন্মোপার থেকে পৃথিবী হয়ে অনন্তে >>> ©www.fazleelahi.com

আগের পর্ব পড়ুন । সামাজিক অপরাধ এবং অপরাধীরাই সবচেয়ে বেশী ক্ষতিকর হয়ে থাকে ইসলাম অথবা যে কোন আদর্শের ক্ষেত্রে। কেননা, ব্যক্তির অপরাধের ধরা না পড়লে তো প্রায় পুরোটাই গোপন বা দু'এক কান পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকে, কিন্তু সামাজিক অপরাধ সংঘটিত হয়ে থাকে সমাজের অধিবাসীদের একটা অংশের সাথে আবার কোথাও কোথাও বিরাট অংশের সাথে। এমনকি এসব সামাজিক অপরাধ কখনো কখনো গোটা রাষ্ট্রকেও ছেয়ে ফেলে, তখন তা পর্যায়ক্রমে রাষ্ট্রীয় অপরাধে রূপান্তরিত হয়ে যায়। যেহেতু সামাজ ব্যবস্থার সমন্বয়েই গঠিত হয় রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা, সেহেতু অন্য দৃষ্টিতে দেখলে সামাজিক অপরাধ মূলতঃ রাষ্ট্রীয় অপরাধ।

দায়বদ্ধতার ক্ষেত্রেও এর সীমানা সামাজিক পরিমণ্ডল ভেদ করে রাষ্ট্রীয় দিগন্ত পর্যন্ত বিস্তৃত। একদিকে যেমন ব্যক্তি পর্যায় এতে শামিল, তেমনি অন্যদিকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়েও পৌঁছে যাওয়ায় এর ভয়াবহতা সীমাহীন। কোন অপরাধীই চায় না যে, পৃথিবীতে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত থাকুক। অপরাধ জগতে অরজকতাই তাদের নীতি, অপরাধ সংঘটনের যতগুলো লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বিদ্যমান, ব্যক্তি ব্যবধানে সেসবই হয়ে থাকে তাদের দৃষ্টি; এর বাইরে তারা আর কোথাও কোন কল্যাণ বা উপকারীতা দেখতে পায় না। তাদের সেই লক্ষ্যে পৌঁছুতে জগত সংসারের যত বড় ক্ষতিই সাধিত হোক না কেন, সে ব্যাপারে ওরা বিন্দুমাত্রও বিচলিত হয় না।

তবে পাকড়াও হবার পর অবশ্য সে ব্যাপারে চিন্তা করার একটা সুযোগ সৃষ্টি হয় এ জাতীয় অপরাধীদের জন্য। অতএব, এসব পর্যায়ক্রমিক ধারাগুলোর কোনটাতেই তারা ন্যায় বিচার ও সুষ্ঠু কোন আইনী ব্যবস্থাকে কখনোই বরদাশ্ত করে না। তাই পৃথিবীর সকল আইনের বিরুদ্ধে থাকে তাদের অবস্থান, কখনো কখনো সেসবের পক্ষে কথা বললে কিংবা কাজ করলেও দেখা যায় যে, আইনী মারপ্যাঁচ থেকে বাঁচানোর জন্য সেসব ব্যবস্থার ভেতর থেকে কাউকে না কাউকে সে আত্মরক্ষার হাতিয়ার হিসেবে খরিদ কিংবা বাধ্য করতে সক্ষম হয়েছে। কেবলমাত্র সেসব ক্ষেত্রেই এদেরকে আইনের কাছাকাছি দেখা যায়। ন্যায়, ইনসাফ ও ভারসাম্যমূলক বিচার ব্যবস্থা একমাত্র ইসলামেই বর্তমান রয়েছে বিধায় অন্য সকল ধর্ম, মতবাদ ও দেশীয় বিচার ব্যবস্থার চাইতে তারা ইসলামী বিচার ব্যবস্থাকেই সবচেয়ে বেশী ভয় পায়।

ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞান রাখুক চাই না রাখুক, ইসলামের বিরোধিতায় বিরুদ্ধবাদীদের সহযোগীয় এসব অপরাধীরা সক্রিয় ভূমিকা পালন করে থাকে। কখনো সুকৌশলে এদের ব্যবহার করা হয়, আবার কখনো এরা নিজেরাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেয়, এছাড়া বাজারী পণ্যের মত এদেরও ক্রয়-বিক্রয়, মূল্য বৃদ্ধি-ঘাটতির ব্যাপার তো রয়েছেই। সমাজে ত্রাস সৃষ্টির মাধ্যমে চুরিডাকাতি, লুটতরাজ, চাঁদাবাজী, অশ্লীলতার প্রসার, মদ-জুয়ার ব্যাপকতা, ধর্ষণ ও অবৈধ প্রেমের মহামারী, ঘুষ-সুদ ইত্যাদি অসংখ্য প্রকার ও পর্যায়ে এসব অপরাধীরা তৎপর। আর এগুলোর সবক'টিকেই কঠোর হস্তে-কিন্তু কোনরূপ অতিরঞ্জনে নয়; বরং সামঞ্জস্যমূলক বিধানে-দমন করার আইন-কানুন পৃথিবীর সকল বিধিবিধানের মধ্যে একমাত্র ইসলামেই সবচেয়ে সুষ্ঠু ও ভারসাম্যপূর্ণতায় বিদ্যমান। তাই অন্য সকল আইনী পদ্ধতির চাইতে অপরাধী চক্র ইসলামকেই সবচেয়ে বেশী ভয় পায়।

জাগতিক কয়েকটি দিনের পৈশাচিক সুখ-সন্ধানে এসব অপরাধীরা আজ ভেঙ্গে দিতে চায় আমাদের পারিবারিক বন্ধন, অপসংস্কৃতির আমদানীর মাধ্যমে মানুষের মন থেকে মুছে দিতে চায় ইসলামী সংস্কৃতির পবিত্র ভাবধারাকে, মদ ও মাদকের ব্যবসার প্রসার ঘটিয়ে এরা তছনছ করে দিতে চায় মুসলিম যুব শক্তির নৈতিক ভিত্তি। প্রকারান্তরে তারা দুনিয়ার বুক থেকে ইসলামকেই মুছে দিতে চায়, কারণ মুসলমানদের ঈমানী চেতানাকে দুর্বল করতে পারলেই যে ইসলামের শক্তি দুর্বল হয়ে পড়বে। কিন্তু ইসলামই অনিবার্য এবং ধ্বংসহীন জীবনপদ্ধতির নাম। কেননা, এর সংবিধানকে স্বয়ং আল্লাহ্ তা'আলা হেফাযত করছেন; যা "লওহে মাহ্ফূযে"ও সংরক্ষিত রয়েছে। যার মত করে আরেকটি কিতাব তো অসম্ভব; এমনকি দু'একটি ছোট্ট সূরার অনুরূপও কেউ এযাবৎ দাঁড় করাতে পারেনি।

পরন্তু আল-কুরআনের এক বিন্দু-বিসর্গের পরিবর্তন সাধন (ছাপার ভুল নয়; বরং ভাব ও অর্থের পরিবর্তন) করা চৌদ্দ'শ বছরের বেশী সময় যাবৎ কেউ করতে পারেনি; ইনশাআল্লাহ্ কেয়ামত পর্যন্তও কারো পক্ষে সম্ভব হবে না তেমন দুঃসাহস করা। সকল বিষয়ের সমাধান দানকারী কুরআন সম্পর্কে এটাই মুসলমানদের দৃঢ় বিশ্বাস আর এটাই বাস্তবতা। (মন্তব্য কিন্তু হিসেব করে--; এখনো শেষ হয়নি)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।