আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

@ সর্বযুগের সর্বাধুনিক জীবনপদ্ধতির নামঃ ইসলাম(১২)

জন্মোপার থেকে পৃথিবী হয়ে অনন্তে >>> ©www.fazleelahi.com

আগের পর্ব পড়ুন । বিরুদ্ধবাদীদের অগ্রগামীতায় একমাত্র বাধা পূর্বেও ছিল ইসলাম, বর্তমানেও ইসলাম এবং ভবিষ্যতেও থাকবে ইসলাম। সুতরাং, ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তারিত করলো তারা, প্রথমেই তারা গবেষণা করলো যে, কোন্ নৈতিক শক্তির বলে মুসলমানরা জগতের অন্য কোন শক্তিকেই ভয় পায় না; বরং মৃতু্যকেই বেশী ভালবাসতে পারে? ফলাফলে তারা পেল যে, আল্লাহ্, তাঁর কিতাব এবং আখেরাতে প্রতি সুদৃঢ় ঈমান পোষণ; অতএব, এই তিনটি নৈতিক ও আত্মিক শক্তির যোগানদানকারী উৎসকে মুসলমানদের মন থেকে মুছে দিতে হবে; অন্ততঃ এর চেতনাবোধকে ভোঁতা হলেও করে দিতে হবে। তাদের গবেষকদের পরামর্শক্রমে এসব চেতনার বিরুদ্ধে ব্যবহারের জন্য তারা বেছে নিল প্রচুর অর্থ, নারী এবং জাগতিক সুযোগ-সুবিধা নামক তিনটি বিলাসী সামগ্রীকে; যেসবের প্রভাবে মুসলমানগণ কেন, যেকোন মানুষই তার অভীষ্ট লক্ষ্য হতে বিচু্যত হতে বাধ্য। কিন্তু পৃথিবীকে সংস্কার করার, সঠিক ও সরল পথ দেখানোর দায়িত্বপ্রাপ্ত জাতি হিসেবে মুসলমানদের জন্য যা কখনোই স্বাভাবিক নয়।

একথা অনস্বীকার্য যে, সকল জাতির মধ্যকার সমস্ত মানুষই জাতীয় সম্মানকে অগ্রগামী করার যোগ্যতা রাখে না; বরং চিন্তাশীল ও জ্ঞানীদের স্বল্পসংখ্যকই সে ভূমিকা পালন করে থাকে। ইসলামের শত্রুদের শ্যেনদৃষ্টি বহুকাল থেকেই ছিল মুসলিম বিশ্বের সবগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি। এ জাতীয় মেধাবীদেরকে তারা নানা কৌশল খাটিয়ে প্রয়োজন হলে নিজেদের দেশে নিয়ে গিয়ে প্রচুর বৈভবে বুঁদ করে ভুলিয়ে দিতে সফল হয় তার মূলত্বকে, তার পরিচয়কে এবং তাকে দিয়ে নিজেদের প্রয়োজন মত উন্নয়ণ সাধন করে থাকে। আর সে প্রয়োজন না হলে বা সে পর্যায়ের না হলে মুসলিম দেশে রেখেই তাদের মস্তক ক্রয় করে ফেলে, সে মস্তকে তখন আর মুসলিম জাতির চিন্তাচেতনা বিদ্যমান থাকে না; বরং ধোলাইয়ের পর ভোগ-বিলাসের নেশায় মাতোয়ারা করার সাথে সাথে তাতে ঢুকিয়ে দেয়া হয় প্রচুর ইসলাম বিরোধী সেল যেগুলোর নিয়ন্ত্রণ থাকে ষড়যন্ত্রকারীদের হাতে। সূতোর টানে পুতুল নাচের মতই ইয়াহূদ-খৃষ্টান-হিন্দুদের দেশে দেশে তো নাচেই; এমনকি আপনার-আমার চারপাশেও তাদের সে সাম্বানৃত্য দৃশ্যমান প্রতিনিয়ত।

মুসলিম জাতি তাদের কাফন সেরে রেখেছে বহু আগেই; শুধু দাফনটুকু বাকী রেখেছে এই আশায় যে, আল্লাহ্ যদি দয়া করে তূরের বুকে মূসার সঙ্গীদের মত এসব মৃতদেহগুলোতেও আবার প্রাণের সঞ্চার করেন! দুশ্চিন্তায় ভেঙ্গে পড়ার কোন কারণ নেই, এসব নতুন কিছু নয়; আমরা কি ছাই, নবূয়ত প্রাপ্তির পর মক্কার সুদীর্ঘ তেরটি বছরের কোন একটি মুহূর্ত আল্লাহর নবী শান্তিতে যাপন করতে পারেননি। ইসলামকে মুকুলেই ছিঁড়ে ফেলে জগতের বুক থেকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার জন্য হেন পন্থা নেই যা কুরাইশ সর্দারগণ গ্রহণ করেনি। অবশেষে ষড়যন্ত্রকারীদের শেষ পদক্ষেপ যা হয়, তা তার বেলায়ও হলো, তাকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে ফেলার সম্মিলিত সিদ্ধান্ত নিল কুরাইশ নেতৃবৃন্দ। কিন্তু সব ফির'আনের ঘরেই আদর-সোহাগে লালিত হতে থাকে মূসারা, মূর্খরা কি করে বুঝবে আল্লার কুদরত? তিনি হিজরত করেন, কিন্তু মদীনাতেও ইসলামের প্রসারকে তারা সহ্য করলো না, যুদ্ধ হলো বদরে, উহুদে, খাইবারে, মদীনায়(খন্দকের যুদ্ধ)সহ অসংখ্য বার। তাদেরই আপনাপন সন্তান-ভাই-ভাইস্তা তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরে কঠোর হস্তে দমন করলো আল্লাহর শত্রুদের আর দুনিয়ার বুকে বিজয়ী করলো আল্লার দেয়া সবচেয়ে বড় নেয়ামত- ইসলামকে।

তারা মুখের ফুঁকে আল্লাহর সেই চেরাগকে নির্বাপিত করবে কিভাবে; স্বয়ং আল্লাহ যে আলোকে পাঠিয়েছেন জগতের সকল অন্ধকারকে বিদূরিত করতে? আশার কথা যে, আল্লাহর এই বিধান নিঃশেষ হয়ে যায়নি; বরং তা চিরন্তন। চৌদ্দশতক পূর্বে এসে বর্তমান পর্যন্ত স্বদর্পে ধাবমান এবং সেদিন পর্যন্ত পৌঁছেই পরে ক্ষান্ত হবে, যেদিন ধ্বংস হয়ে যাবে এই বিশ্ব চরাচর। আর ততদিনের জন্য সময়ের প্রতিটি ভগ্নাংশে ইসলামই থাকবে একমাত্র সর্বাধুনিক জীবনপদ্ধতি; সর্বযুগে এই অপুরাতন জীবন ব্যবস্থা শুধুমাত্র ইসলাম। (মন্তব্য কিন্তু হিসেব করে--; এখনো শেষ হয়নি) পরের পর্ব পড়ুন ।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।