আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

@ সর্বযুগের সর্বাধুনিক জীবনপদ্ধতির নামঃ ইসলাম(১১)

জন্মোপার থেকে পৃথিবী হয়ে অনন্তে >>> ©www.fazleelahi.com

আগের পর্ব পড়ুন । শ্রেণী বিশেষের বিরোধিতার কারণঃ ইসলামকে সর্বযুগের সর্বাধুনিক জীবনপদ্ধতি হিসেবে স্বীকার করতে নারাজ ও তার বিরোধিতায় মুখরই নয়; বরং রীতিমত কোমর বেঁধে লেগে যাওয়া গোষ্ঠী মৌলিকভাবে তিন ভাগে বিভক্ত- কায়েমী স্বার্থবাদী, অপরাধী এবং না জেনে বিরোধিতাকারী। নিজেদের মধ্যে যত বিরোধই থাকুক না কেন, ইসলামের বিরুদ্ধাচরণে এরা সকলেই এক ও অভিন্ন পর্যায়ে অবস্থান নেয়। এজন্য দেখা যায় যে, কোথাও ইসলামপন্থীদের সাথে এদের কোন একটি গোষ্ঠীর সংঘাত বাঁধলে লড়াকুরা তখন দু'টি ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে- ইসলামের পক্ষ শক্তি বনাম ইসলাম বিরোধী শক্তি। পাড়াগাঁয়ের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ঝগড়া-বিবাদ থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও দেখা যাবে এই একই চিত্র।

তবে এতে মুমিনদের ভীত-দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হওয়ার কোনই কারণ নেই, কেননা, তাদের প্রতিপালক তাদেরকে জানাচ্ছেন যে, ((আপনি মনে করেন তারা ঐক্যবদ্ধ, কিন্তু তাদের মনের মিল নেই; এটা এজন্যে যে, এরা এক নির্বোধ সমপ্রদায়। )) [সূরা আল-হাশরঃ ১৪] কায়েমী স্বার্থ বলতে বুঝায়- কোন প্রতিষ্ঠিত শক্তি, ক্ষমতা, জাগতিক সুযোগ-সুবিধা কিংবা অর্থ-সম্পদ ও যাবতীয় ভোগ্য উপায়-উপকরণ অর্জনের জন্য কারো নিয়ন্ত্রণাধীন উৎস ইত্যাদি। আল্লাহর নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইসলাম প্রচারের গোপন অবস্থায় সর্বপ্রথমই বিরোধিতার স্বীকার হন মক্কার প্রতিষ্ঠিত নেতৃবৃন্দ, ধনাঢ্য ও প্রতাপশালী ব্যক্তিবর্গের নিকট হতে। তারপর প্রকাশ্য প্রথম দাওয়াতে তার প্রতি পাথর ছুঁড়ে মারেন তারই আপন চাচা আবু লাহাব; যে তৎকালীন মক্কার প্রথম শ্রেণীর নেতৃবৃন্দের মধ্যে একজন ছিল। ঠিক একই মূল ধারাকে অক্ষুণ্ন রেখে বিরোধিতা করেছিল ইব্রাহীমের দাওয়াতে নমরূদ, মূসার দাওয়াতে ফির'আওন, ঈসার দাওয়াতে তৎকালীন প্রতিষ্ঠিত রাজন্যবর্গ (নবীগণের প্রতি সালাম)।

এখানেই চিন্তাশীলদের জন্য চিন্তার খোরাক যে, আল্লাহর নবীগণের বিরোধিতায় সর্বযুগেই রাজ্য বা রাষ্ট্রশক্তি কিংবা গোত্রশক্তিধরগণ কেন অগ্রণী ভূমিকা রাখে? এর কারণ এ ছাড়া অন্য কিছু নয় যে, "আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কোন সত্য মা'বূদ নেই" -এই ঘোষণা শুনেই তারা উপলব্ধি করতে পেরেছিল যে, তাদের কর্তৃত্ব-নেতৃত্ব খতম হতে চলেছে, তাদের ভ্রান্তি ও ভ্রান্তির প্রসারণ ঘটিয়ে গণমানুষের উপর অত্যাচার-যুলুমের দিন শেষ হয়ে এসেছে, কৃষক-শ্রমিকের ঘর্মাজিত উপার্জন-উৎপাদনে নিজেদের তৈরী স্বৈর-আইনের প্রক্রিয়ায় ফেলে আইনী ডাকাত হয়ে লুণ্ঠনের দিন ফুরিয়ে এসেছে। তাই ক্ষমতা-সম্পদ-কর্তৃত্ব হারানোর ভয়ে সন্ত্রস্ত হয়ে তারা অন্ধের মত বিরোধিতায় তৎপর ছিল সকল যুগেই। এদের কোন দ্বীন-ধর্ম থাকে না; অর্থ-প্রতিপত্তিই এদের মা'বূদ-দ্বীন-ধর্ম। সকল প্রতিষ্ঠিত শক্তির সাথে সাথে অন্যান্য ক্ষুদ্র-মাঝারী স্বার্থপূজারীরাও এতে শামিল রয়েছে, যেমন- অমুসলিম সাধারণের মধ্যে অর্থ-প্রাচুর্য লোভীরা, মুসলিম নামধারী মুনাফিক শ্রেণী ইত্যাদি। কায়েমী স্বার্থবাদী শক্তি আজ ইসলামের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিকভাবে সক্রিয় ভূমিকায় নেমেছে।

তারা আজ ইসলামী আন্দোলনের নাম দিয়েছে 'সন্ত্রাসবাদ'; অথচ নিজেরাই সন্ত্রাসী তৈরী করে, প্রত্যক্ষভাবে সন্ত্রাস করে, বোমা ফাটিয়ে, কখনো বা মুনাফেকদেরকে প্রচুর অর্থ ও ক্ষমতার লোভে ক্রয় করার মাধ্যমে এসব ঘটিয়ে নির্বিঘ্নে দোষ চাপিয়ে দিচ্ছে ইসলামের ঘাড়ে। এমনকি পরবর্তীতে যখন তাদের মদদপুষ্ট সন্ত্রাসীদের মুখোশ উন্মোচিত হয়, তখন মিথ্যা সংবাদ প্রচারের জন্য দুঃখ প্রকাশ করার মত ক্ষুদ্র মানবিক ভদ্রতাবোধও তারা অনুভব করে না। কেননা, প্রচার মাধ্যমে, তথ্য-প্রযুক্তিতে, শক্তিতে তারা এখন অগ্রগামী; তাদেরকে বাধা দেয়ার মত কোন শক্তি বর্তমান নেই। যদি তেমন কোন শক্তি দুনিয়ার বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়ায়, তবে তা অবশ্যই ইসলামের মধ্য থেকেই দাঁড়াবে; ইসলামে বিশ্বাস না করলেও এই সত্যটিতে তারা পাক্কা ঈমানদার বা দৃঢ় বিশ্বাসী। (মন্তব্য কিন্তু হিসেব করে--; এখনো শেষ হয়নি) পরের পর্ব পড়ুন ।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।