আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

@ সর্বযুগের সর্বাধুনিক জীবনপদ্ধতির নামঃ ইসলাম(৯)

জন্মোপার থেকে পৃথিবী হয়ে অনন্তে >>> ©www.fazleelahi.com

আগের পর্ব পড়ুন । আসা যাক ধনতন্ত্রের বেলায়; যা বর্তমান পৃথিবীর ঘাড়ে সওয়ার হয়ে ঘোড়ার মত দাবড়িয়ে বেড়াচ্ছে। পৃথিবীর সকল উন্নয়ণকে সে তার নিজের উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া সম্পত্তির মত মনে করছে। তার মূল নীতিই হচ্ছে, 'শুকনো মাথা ফাটে ফাটুক; তেলো মাথায় ঢালো দাও'। অর্থাৎ, যার যত বেশী পরিমাণ সম্পদ আছে, তাকে ততোধিক অর্জনের সুযোগ করে দাও এবং যার নেই সে কিভাবে তার নূন্যতম চাহিদা মেটাতে পারবে, সে ব্যাপারে এই তন্ত্র একেবারেই অন্ধ।

বর্তমান পৃথিবীর স্কন্ধে চেপে আছে এই এক চোখা দৈত্য; ধনার্জন ও তার সীমানাহীন বিস্তৃতিই সে দেখতে পায়। জীবনের অন্যান্য যাবতীয় দিক ও বিভাগ সম্পর্কে কোন বিধান তো এই তন্ত্র থেকে আশা করারও কোন সুযোগ নেই; এমনকি সকল মানুষের খেয়ে-পরে বেঁচে থাকার মত কোন সুষ্ঠু অর্থনৈতিক বিধান দিতেও সে একেবারেই অক্ষম। তাই এটি কোন আদর্শ নয়; নয় কোন জীবন বিধান, এমনকি নয় কোন সংবিধানও। নিছক পুঁজিবাদীদের পুঁজি টিকিয়ে রাখা ও উত্তরাত্তর সুদে-আসলে বৃদ্ধি ঘটানোরই একটা কৌশলী পন্থা মাত্র। ধনতন্ত্র মূলতঃ সাম্যবাদের বিপরীত একটি ধারার নাম।

আর তাই পৃথিবীতে যখন সাম্যবাদের বিজয় হয়েছিল এবং রক্তের নিন্মগমন আর আত্মার ঊর্ধ্বগমনে যখন চলছিল ভয়াবহ সাইক্লোন; তখন সাম্যবাদের পতনে সুকৌশলে নিজের হাতকে সচল রেখেছিল এই ধনতন্ত্র। এজন্য দেখা যায় যে, সাম্যবাদের ঝাণ্ডা ধুলিধূসরিত হওয়ার সাথে সাথেই শুরু হয়ে যায় ধনতন্ত্রের একচ্ছত্র জয় জয়কার; যার অগ্রগামিতা আজো ধাবমান আগামীর পানে। যেহেতু মানব জীবনের শুধুমাত্র একটি দিক, অর্থাৎ, অর্থনৈতিক বিভাগটিতেই প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম এই মতবাদ এবং তাও আবার একচোখা দৈত্যের মতই, সেহেতু জীবনের অন্যান্য ব্যাপক সমস্যাবলীর জন্য খোদ ধনতন্ত্রীরাই অন্য কারো কাছে ধর্না দিতে বাধ্য। পরন্তু পৃথিবীর ধনহীন ও মধ্যবিত্তরা তো রয়েছেই। আর একথা সর্বজন বিদিত যে, অতি নগণ্যসংখ্যক ব্যতীত পৃথিবীর তাবৎ মানুষেরা পড়ে ধনহীন ও মধ্যবিত্ত পর্যায়ে।

অতএব, একদিকে যেমন ধনতন্ত্রী গুটিকতক রাঘববোয়াল আর্থিক উন্নয়ণ ছাড়া জীবনের অন্য সকল বিধানাবলীর ব্যাপারে চুনোপুঁটি কিংবা ফুটো থালার ফকির, অন্যদিকে তাদের প্রতিপক্ষ বিশ্ববাসীর নূন্যতম হিসেব ধরলেও প্রায় আশিভাগ মানুষ এই তন্ত্রের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ বিরোধী। অবস্থা যখন এই, তখন ধরে নেয়া যায় যে, কালের উইপোকারা অনেক দূর এগিয়ে গেছে। ধনতন্ত্রের গগণচুম্বী প্রাসাদ বৃষ্টি ফোঁটার মত ঝরে পড়া যেন সময়ের ব্যাপার মাত্র। একথা সত্য যে, ধনসম্পদ ব্যতীত মানুষের জীবন ধারণ ও তাতে উন্নয়ণ সাধন অসম্ভব এবং এর প্রতি মানুষের স্বাভাবিক আকর্ষণ বোধকে কখনোই দমিয়ে রাখা যাবে না। তাই, যদি কখনো ধনতন্ত্রের পতন ঘটে তবে পতন হবে শুধুমাত্র অর্থের দাপটে দুনিয়ার উপর মোড়লগিরি করা কিছু কিছু কলকাঠি নাড়কের; ব্যাপক অর্থে- অর্থাকাংখা ও সাধারণ অর্থনীতি সচলই থাকবে।

এবং সেসবে এই পতনের কোন কুপ্রভাব পড়বে না; বরং তাতে অর্থনীতিতে একটা সুষ্ঠু সমতা আসারই সম্ভাবনা রয়েছে। এ অর্থে ধনতন্ত্র কখনোই পৃথিবী থেকে নিশ্চিহ্ন হবে না; বরং পতন বলতে যা বুঝনো হবে তা হবে তার কুপ্রভাবকে নিয়ন্ত্রণ করা মাত্র। জগতের সার্বিক উন্নয়ণ তখন কেবলমাত্র গুটিকতকের অসুস্থ ইচ্ছের পিঞ্জরেই অবরুদ্ধ থাকবে না, যেখানে মুদ্রা ও বাজার দর নিয়ন্ত্রণ করার ষড়যন্ত্রের আওতায় প্রতি বছর যে পরিমাণ উৎপাদিত খাদ্যশস্য সাগর জলে পতিত হয়, তাতে হয়ত তৃতীয় বিশ্বের দারিদ্র্য পীড়িত দেশগুলোর খাদ্যাভাব মিটে যেত। অতএব, দুনিয়ার ভারসাম্য রক্ষার স্বার্থেই ধনতন্ত্রের পতনও অনিবার্য ভবিষ্যত সত্য; ইনশাআল্লাহ্। আকাশে বাতাসে গুঞ্জরণ শুনি যেন- জগদ্বাসীর জন্য আগামীর জীবন ব্যবস্থা শুধুই ইসলাম; একমাত্র ইসলাম, যা সর্বাধুনিক, যা ব্যতীত অন্য কোন গত্যান্তর নেই।

(মন্তব্য কিন্তু হিসেব করে--; এখনো শেষ হয়নি)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।