আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

@ সর্বযুগের সর্বাধুনিক জীবনপদ্ধতির নামঃ ইসলাম(৮)

জন্মোপার থেকে পৃথিবী হয়ে অনন্তে >>> ©www.fazleelahi.com

আগের পর্ব পড়ুন । পৃথিবীর উন্নয়ণ সাধনে অংশ নিয়েছে মানবজাতির মধ্য থেকে নির্দিষ্ট বিষয়ে জ্ঞানী, পরিশ্রমী, অধ্যবসায়ী ও সফলতাকামী মানুষেরা। কিন্তু সেসবের নিয়ন্ত্রণে তাদের প্রভাব খুবই ক্ষীণ কিংবা মোটেও ছিল না। কেননা, কখনো এসব উন্নয়ণ সাধিত হয়েছে শুধুমাত্র কিছু অর্থ প্রাপ্তির আকাংখায়, কখনো সুনামের প্রত্যাশায়, কখনো শক্তির নেশায় আবার অনেকেই জগদ্বাসীর কল্যাণ সাধনায় নিয়োজিত থেকে তাদের জন্য রেখে গেছেন বহু উন্নয়ণের ফসল। কেউই তার আবিস্কার, উন্নয়ণকে নিজের আওতায় ধরে রাখতে সক্ষম হননি; বরং প্রকাশের পর পরই সেসবকে লুফে নিয়েছে কোন না কোন তন্ত্রমন্ত্র, মতবাদ, স্বার্থবাদ ইত্যাদি প্রচলিত ব্যবস্থা।

যাদের মধ্য থেকে কয়েকটির নাম উল্লেখ করা যেতে পারে, যেমন- সাম্যবাদ, ধনতন্ত্র এবং অন্যদিকে মানবতাবাদ ইত্যাদি। উল্লেখ্য যে, জাগতিক উন্নয়ণকে দিকনির্দেশনাকারী মতবাদসমূহের মধ্যে মানবতাবাদের পরিপূর্ণ ও সুষ্ঠু বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে একমাত্র ইসলামে। অন্য সবগুলোর জন্য মানবতা নিছক বুলির পোষ্টারেই ছাপা থাকে কিংবা কোথাও সেটাকে নেয়া হয়েছে কোন অতিরিক্ত সূচী হিসেবে; মৌলিক কর্মসূচী হিসেবে নয়। আসুন দেখি যে, সাম্যবাদ জাগতিক উন্নয়ণকে কুক্ষিগত করে কি সুফল দিয়েছে জগদ্বাসীকে। তারা চায় ধনী-গরীবের সমতা, কারো নিকট অঢেল সম্পদ অপ্রয়োজনে লুটোপুটি খাবে, আর কেউ অভাবে মারা পড়বে; এমনটি হবে না।

সুতরাং, আন্দোলন কর, দাবী উত্থাপন কর, গোপন পত্র পাঠাও, শুনলে তো শুনলো নয়তো পুলিশের পাহারা থেকেও কাজের বুয়ার ভাতের প্লেটে করে পিস্তল লুকিয়ে নিয়ে গিয়ে তাকে হত্যা করে প্রতিশোধ নাও; কারণ সে কমরেডের আদেশ অমান্য করেছে, এটাই তার মৃতু্যদণ্ড প্রাপ্তির সুবিশাল(?) কারণ। এ জাতীয় সীমাসংখ্যাহীন ঘটনায় লক্ষ লক্ষ প্রাণের বলি দিয়ে কৃষক-শ্রমিকদের নিয়ে যখন সাম্যবাদ রাষ্ট্রক্ষমতায় আসীন হলো, তখন যাদের আন্দোলনে, রক্তে, ঘামে ক্ষমতায় গেল, তারাই দেখল যে কাজ করলে ভাত-কাপড়-ঘুম মেলে, আর না করলে মেলে চাবুক কিংবা পিস্তলের গুলি। এমনি এক 'সাম্যবাদ' প্রতিষ্ঠিত হলো, যার সাথে তার প্রতিষ্ঠাকারীরাও ছিল অপরিচিত, তারা তো আশা করেছিল সকল কৃষক-শ্রমিক-দিনমজুর পাবে তাদের বেঁচে থাকার ন্যায্য অধিকার, কিন্তু সমতার প্রবল শক্তীয়-রক্তীয় বানে-তুফানে ধনী-গরীব সকলেই বনে গেল রাষ্ট্রশক্তির কেনা গোলাম; ক্রীতদাস। মধ্যযুগীয় ক্রীতদাসদের মত করেই কোন রূপ ভেদাভেদ ছাড়া কঠোর শ্রম অনিবার্য করা হলো। পরিণামে বিনা লড়াইয়ে, বিনা আন্দোলনে, উইয়ে খাওয়া শুকনো কাষ্ঠখণ্ডের মতই ঝরঝরিয়ে ভেঙ্গে পড়লো সাম্যবাদের প্রতিষ্ঠিত ইমরাত।

অথচ তাদের বিজয়ী সময়ে তারা ছিল পৃথিবীর একক পরাশক্তি। আর যাবতীয় আবিস্কার-উন্নয়ণকে নিজেদের অগ্রগতিতে কি পরিমাণ কাজে লাগিয়েছে তা ইতিহাস ও সমকাল সচেতন প্রতিজন মানুষের নিকটই পরিষ্কার। তথাপি পৃথিবীবাসীর নিকট প্রমাণিত হলো যে, 'সাম্যবাদ' নামীয় ব্যবস্থাটি জাগতিক উন্নয়ণে শুধুমাত্র প্রবল বাধাই নয়; বরং চরম অভিশাপও। সাম্যবাদী সংবিধানে জীবনের জন্য পরিপূর্ণ বিধিবিধান থাকা তো সর্বাবস্থায়ই অসম্ভব, তদুপরি ধনী-গরীবের সমতা বিধানের মত একটি দিকের সামাল দেয়াও তার পক্ষে চরম অসম্ভব বলে প্রমাণিত হয়েছে। সুতরাং সাম্যবাদকেই এ যুগের জন্য পুরাতন বলা যেতে পারে এবং পুরাতন বলেই বর্তমানের সাম্যবাদী চেতনাপুষ্ঠ রাষ্ট্রগুলো নিজেদের নীতিতে অনেক সংশোধনী এনেছে ও পর্যায়ক্রমে আরো আনার প্রয়োজন বোধ করছে।

শতাব্দী না পেরুতেই যার মেরুদণ্ড ঘুণে খেয়ে ফেলেছে এবং মুখ থুবড়ে পৃথিবীর আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে যে মতবাদ, তার অলীক আকাংখা বুকে নিয়ে যারা ইসলামকে সেকেলে বলার ধৃষ্টতা দেখায়; তাদের জেনে রাখা উচিত যে, এক শতাব্দী নয়; বরং চৌদ্দটি শতাব্দী ধরে ইসলাম তার স্বকীয়তায়, স্বমহিমায় জগতের বুকে নিজের পরিধি উত্তরাত্তর বৃদ্ধিই করে চলেছে এবং চলবেও ইনশাআল্লাহ্। (মন্তব্য কিন্তু হিসেব করে--; এখনো শেষ হয়নি) পরের পর্ব পড়ুন ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।