আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

@ সর্বযুগের সর্বাধুনিক জীবনপদ্ধতির নামঃ ইসলাম(৪)

জন্মোপার থেকে পৃথিবী হয়ে অনন্তে >>> ©www.fazleelahi.com

আগের পর্ব পড়ুন । প্রশ্ন হতে পারে যে, ইতিহাসের সঠিক সংরক্ষণের পর থেকে তো আর এমনটি দেখা যায় না যে, কোন আবিস্কার পুরোপুরি বিলুপ্ত হয়ে গেছে? হাঁ, শুধু দেখা যায়নি নয়; বরং এমনতর বিলুপ্তি আর দেখা যাওয়ার সম্ভাবনাও নেই। কেননা, আল্লাহর সর্বশেষ নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম 'রাহমাতুলি্লল 'আলামীন' বা জগদ্বাসীর জন্য রহমত হিসেবে পৃথিবীতে আগমনের পর তার দো'আয় আল্লাহ্ তা'আলা কবুল করেছেন যে, তার যুগ থেকে নিয়ে কেয়ামত পর্যন্ত আর কোন জাতিই পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যাবে না। পাপাচারের আধিক্যের কারণে যদি পার্থিব জীবনেই শাস্তি পাওয়া অনিবার্য হয়ে উঠে, তবে তার জন্য পূর্ববর্তী অবাধ্য জাতিসমূহের মত সমূলে ধ্বংস করা আযাব পাঠাবেন না; বরং শিক্ষা দেয়ার নিমিত্ত যৎকিঞ্চিত করে করে পাঠাবেন। আর তাই বর্তমানের কোন আবিস্কার ও জাগতিক উন্নয়ণই পুরোপুরি বিলুপ্ত হয়ে যায় না এবং হ্ওয়ার সম্ভাবনাও নেই।

অন্য আরেকটি কারণ হলো কেয়ামত আসন্ন, প্রিয় রাসূল সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম কেয়ামতের নিকটবর্তীতা সম্পর্কে বলতে গিয়ে তার দু'টি আঙ্গুলকে কাছাকাছি এনে দেখিয়ে বললেন যে, কেয়ামত আর আমার মাঝে (অর্থাৎ, শেষনবী হিসেবে আমার আগমনের মাঝে) এতটুকুই ব্যবধান। আর একথা অনিবার্য সত্য যে, কেয়ামত পর্যন্ত আল্লাহর পক্ষ হতে না আর কোন নবী আসবেন, না আর কোন ওহী বা আসমানী গ্রন্থ নাযিল হবে; বরং কুরআন এবং শেষ নবীর শিক্ষাই কেয়ামত পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। এছাড়াও আরো যেসব কেয়ামতপূর্ব নিদর্শন আসার ভবিষ্যদ্বাণী তিনি উম্মতকে জানিয়ে গেছেন, তার অনেকগুলোই বাস্তবায়িত হয়ে গেছে এবং অধিকাংশগুলো এখনো সামনের দিনগুলোতে রয়েছে। সুতরাং বর্তমানের এই উন্নয়ণ জগতের 'ধ্বংসপূর্ব উন্নয়ণ'ও তো হতে পারে; যাতে ধ্বংস হবার পূর্ব পর্যন্ত আর কোন বিলুপ্তির পর্যায় আসবে না। জাগতিক উন্নয়ণের এত ব্যাপক ফিরিস্তি টানার কারণ এ ছাড়া আর কিছু নয় যে, ইসলাম তথা জীবন ব্যবস্থা এবং এসব জাগতিক উন্নয়ণ এক জিনিস নয়, এগুলো পরিবর্তনশীল, পুরোনো হয়, নতুন আসে ইত্যাদি; কিন্তু ইসলাম হলো এসব উন্নয়ণকে গ্রহণ-বর্জন-ব্যবহারের সাধারণ ব্যাপক বিধানের নাম; কেয়ামত পর্যন্ত কার্যকারীতায় যার পুরোনো হবার কোন সম্ভাবনাই নেই।

যেমন, এক ব্যক্তি তার শস্যক্ষেত্রে ফসল উৎপাদন করে উন্নয়ণ ঘটালো, এটা একটা পর্যায়। অন্যদিকে সে ফসল তার নিজের কিংবা সর্বসাধারণের খাওয়া ঠিক হবে কি হবে না, তাতে লাভ-ক্ষতি কি ইত্যাদির দিকনির্দেশনা দেয়ার জন্য রয়েছে অন্য পর্যায়ের ব্যক্তিবৃন্দ, অন্য বিভাগ, হতে পারে তা সরকারী অথবা সামাজিক। তদ্রূপ বিশ্ব ব্যবস্থার উন্নতির জন্য কাজ করার যে বিধান, পদ্ধতি ও তৎসংক্রান্ত গ্রন্থাবলী, তা এক পর্যায়ের এবং সেসবের গ্রহণ-বর্জনে মানবের নৈতিকতায় কি প্রভাব পড়তে পারে, তার দিকনির্দেশনার জন্য রয়েছে অন্য বিধান-পদ্ধতি ও গ্রন্থ, যার নাম ইসলাম এবং যার সর্বশেষ গ্রন্থের নাম 'আল-কুরআন'। মনে রাখা জরুরী যে, ইসলাম অথবা কোন ধর্ম জাগতিক দ্রব্যাদির ব্যবহারে শারিরিক বা স্বাস্থ্যগত উন্নয়ণ ও লাভ-ক্ষতির দিকনির্দেশনার জন্য নয়; বরং নৈতিক দিকনির্দেশনার জন্যই আল্লাহ প্রদত্ত জীবন ব্যবস্থা। তবে নৈতিক বিধান পালন করলে তাতে শারিরিক কল্যাণও বিদ্যমান থাকে।

অতএব, আলোচনা থেকে বুঝা গেল যে, জাগতিক উন্নয়ণ আর সে সম্বন্ধীয় নৈতিক দিকনির্দেশনা বা ধর্ম এক নয়; বরং দু'টি দুই ভিন্ন ধারার পদ্ধতি ও ব্যবস্থাপনা। (মন্তব্য কিন্তু হিসেব করে--; এখনো শেষ হয়নি) পরের পর্ব পড়ুন ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।