আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নন্দীগ্রাম-সিঙ্গুর : কার জন্য কার লড়াই 2

সাহিত্যের সাইটhttp://www.samowiki.net। বইয়ের সাইট http://www.boierdokan.com

বামফ্রন্ট সরকারের তাড়াহুড়া। আলাপ-আলোচনা ছাড়াই সিদ্ধান্ত নেয়ার ওভার কনফিডেনসের পুরো সুযোগ নিয়েছেন মমত ব্যানার্জি। তিনি যখন বিগত সরকারের মন্ত্রী ছিলেন তখন ভূমি অধিগ্রহণ, এসইজেড কোনো প্রসঙ্গেই তার দ্্বিমত দেখা যায়নি। কিন্তু যখন বামফ্রন্ট সরকার এদিকে ঝুকলো তখনই মমতা ব্যানার্জি তার বিপন্ন পলিটিকাল ক্যারিয়ার পুনরুদ্ধারের একটা সুযোগ পেয়ে গেলেন।

সিঙ্গুরে জমি অধিগ্রহণের জন্য আন্দোলনের ডাক দিলেন। অনশন করে একেবারে তোলপাড় ফেলে দিলেন। বামফ্রন্ট তার সঙ্গে আলাপে রাজি হলো। কিন্তু মমতা যখন জনসমর্থন পেয়ে গেছেন তখন আর ভয় কীসে। তিনি আর তাদের তোয়াক্কা করলেন না।

সিপিএম তৃণমূল তো দূরের কথা রাজ্যে তাদের মতার শরিকদের সঙ্গে এ বিষয়ে বিশেষ কথাবার্তা বলেনি। আর এসইজেড হিসাবে এমন একটা এলাকাকে বেছে নিয়েছে যেখানে তাদের রাজনৈতিক অবস্থান দুর্বল। সাংগঠনিক শক্তি কম। হয়তো নিজেদের পরীতি ঘাঁটিগুলোর কৃষকদের তারা পোতে চায়নি। ফলে, সিঙ্গুর আর নন্দীগ্রামকে বেছে নিয়েছে।

হত্যাকাণ্ডের অনেক আগে থেকেই নন্দীগ্রামে পুলিশের কোনো নিয়ন্ত্রণ ছিল না। বিরোধীরা সেখানে গ্রামবাসিদের সহযোগিতায় শক্ত ঘাঁটি তৈরি করেছিল। সিপিএম কোনো দায়িত্বশীল আচরণ না করে। পুলিশ ও দলীয় ক্যাডারদের সহযোগিতায় ওখানে তাদের কতর্ৃত্ব কায়েম করতে চেয়েছিল। এটা করতে গিয়ে নিরীহ গ্রামবাসীর ওপর নির্বিচারে গুলি করেছে।

অনেক মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত, নিখোঁজ হয়েছেন। নারীরা ধর্ষিত হয়েছেন। সিবিআই তদন্ত করে তাৎণিকভাবে কিছু আলামত পেয়েছে যাতে সিপিএম ক্যাডাররা গুলি চালানোর সাথে জড়িত এমন প্রমাণ মিলেছে। কিন্তু কালকে সিপিএম নতুন এক ভিডিও চিত্র আদালতের উপস্থাপন করেছে।

ওই ভিডিও চিত্রে দেখা যাচ্ছে স্পষ্টভাবেই গ্রামবাসীদের প্রতিরোধে শিশু ও নারীদের মানব ঢাল হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে। সিপিএম নন্দীগ্রাম থেকে বেশকিছু নারীকে কলকাতায় এনেছে। বৃন্দা কারাত বলেছেন, নন্দীগ্রামে যদি পুলিশ যেতে না পারে তবে এদের নিরাপত্তা কে দেবে? এই নারীদের কয়েকজন বলেছেন, তৃণমূল কর্মীরা তাদের স্বামীকে ধরে নিয়ে গিয়েছে। নির্যাতন করেছে। আগুন লাগিয়েছে।

ধর্ষণ ও নির্যাতনের ঘটনাও ঘটিয়েছে। বোঝা যায়, গরীব মানুষ, তাদের সাধের জমি নিয়ে কি নোংরা রাজনীতিই না চলছে। নন্দীগ্রামে অধিগ্রহণ আপাতত বন্ধ। মনমোহন সিং একে দুঃখজনক বলেছেন। কিন্তু শিল্পায়ন কি বন্ধ হবে? টাটারা কি ফিরে যাবে? কৃষকের জমি হারানোর প্রক্রিয়া বন্ধ হবে? বলা হচ্ছে এসইডেজ ও ভূমি অধিগ্রহণ নীতিকে নতুন করে বিচার করা হবে।

কিন্তু তাতে করে শেষ পর্যন্ত কৃষকের রাগ কি প্রশমিত হবে?

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।